একাদশ কি বদলাবে বাংলাদেশ?

সিরিজনির্ধারণী ম্যাচে একাদশে খুব একটা বদল আনার পক্ষে নয় বাংলাদেশ। ছবি: শামসুল হক
সিরিজনির্ধারণী ম্যাচে একাদশে খুব একটা বদল আনার পক্ষে নয় বাংলাদেশ। ছবি: শামসুল হক
>কাল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজনির্ধারণী ম্যাচে একাদশে কি কোনো পরিবর্তন আনবে বাংলাদেশ? না কি অপরিবর্তিত একাদশ নিয়েই নামবে? চোট নিয়ে খুব একটা অস্বস্তি না থাকলেও চট্টগ্রামে যোগ হচ্ছে শিশির নিয়ে ভাবনা।

স্টিভ রোডস নাজমুল ইসলামকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। ৫ বলে করতে হবে ৬ রান। নেটের চৌখুপীর মধ্যে লোপ্পা ফুলটসগুলো সমানে পেটালেন নাজমুল। সেগুলো চার হতো নাকি ছয়, তা তো আর বলার উপায় নেই। নেটের জালে আটকে গেল বল। তবে নাজমুলের ব্যাটিংয়ে রোডসকে দেখাল বেজায় খুশি। ওপাশের নেটে ব্যস্ত বাকি শিষ্যদের ভিড়ে মিশে যাওয়ার সময় নাজমুলের পিঠ চাপড়ে দিলেন। 'ওয়েল ডান'!

বাংলাদেশ হেড কোচ আজ অনেকক্ষণ ব্যস্ত থাকলেন নাজমুলের মতো লেজের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে। তাঁর কাজ শেষ হলো সাইফউদ্দিনকে দিয়ে। রুবেল হোসেন জ্বরে পড়ায় সাইফউদ্দিন সুযোগ পেয়েছেন সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে। সুযোগটা কাজে লাগিয়েছেন দুর্দান্তভাবে। পেয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রথম ফিফটি। সাইফউদ্দিনকে নিয়ে কোচের যে পরিকল্পনা সেটির সার্থক প্রয়োগ হয়েছে প্রথম ম্যাচে।

রুবেলকে আজ আগের চেয়ে অনেক ফিট দেখাল। পূর্ণ রানআপে বোলিংও করলেন নেটে। তবে সাইফউদ্দিনকে সরিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে তাঁর ফেরার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। একাদশে কি আসলেই কোনো বদল আসবে কাল সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে? আজ সন্ধ্যায় প্রেসবক্সে বসে এই প্রতিবেদন লেখার সময় মাঠের দিকে তাকিয়ে একটু উত্তর খুঁজতে হলো। কারণ একাদশের বড় নির্ধারক হতে পারে শিশির। জীবনানন্দ দাশের প্রিয়তম উপমাগুলোর একটির দেখা কিন্তু এখনো মেলেনি জহুর আহমেদ চৌধুরীর সবুজ ঘাসের ডগায়। তবে মাঠকর্মীদের একজন দুপুরেই বেশ বিজ্ঞের মতো মাথা নেড়ে জানিয়েছেন, রাতে শিশির পড়ে। তবে এলবোতে চোট থাকায় মোস্তাফিজকে নিয়ে একটু সংশয় থাকছেই।

দুপুরে সংবাদমাধ্যমকে মাশরাফি বিন মুর্তজাও বললেন ডিউ ফ্যাক্টরের কথা, 'দুজন (নাজমুল হোসেন শান্ত ও আরিফুল হক) এখনো বাইরে আছে। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ, হুট করে তাদের (প্রথম ম্যাচে ব্যর্থ) সরিয়ে দেওয়া কঠিন। এখনো ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় আছে। অনুশীলনের পর কিংবা সন্ধ্যার পর হয়তো আলোচনা হতে পারে।'
কাল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে নামার সম্ভাবনাই বেশি। প্রশ্ন হতে পারে শুধু ফজলে রাব্বির জায়গাটা নিয়ে। অবশ্য অভিষেকেই শূন্য রানে ফেরা বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানকে এক ম্যাচ দেখেই বাদ দেওয়ার পক্ষে নন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা কিংবা টিম ম্যানেজমেন্ট। সেটিই যদি হয় দলের সমন্বয়টা থাকছে আগের মতোই, ছয় ব্যাটসম্যানের সঙ্গে তিন পেসার ও দুই স্পিনার।

প্রথম ম্যাচের আগে মাশরাফির নতুন করে কুঁচকিতে চোটে পড়ার খবরটা বেশ চিন্তায় ফেলেছে বাংলাদেশকে। অধিনায়ক তবুও ম্যাচটা খেলেছেন। আজ জানালেন, পুরোপুরি চোটমুক্ত হতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে তাঁর, 'আমার একটু সময় দরকার। তিন সপ্তাহ অনুশীলন করতে পারিনি। পুরোপুরি চোটমুক্ত হতে পারিনি। এই সিরিজে আমারও বিশ্রাম নিলে ভালোই হতো। তবে আমি খেলিই এক সংস্করণে। এই সিরিজের পর চার-পাঁচ সপ্তাহের বিরতি আছে। ফিটনেসের কাজটা ঠিকঠাক করতে পারলে আশা করি ভালো হবে। ফিজিও ভালোভাবে দেখছে। আপাতত সামলে নেওয়া যাচ্ছে। তবে আমি এর চেয়ে ভালো ফিটনেস নিয়ে খেলি।'

চোট চিন্তার মধ্যে অধিনায়কের ভাবনায় ঢুকে পড়ছে শিশিরতত্ত্ব। হেমন্তের সন্ধ্যায় জহুর আহমদে শিশির পড়তে শুরু করেছে। আজ সন্ধ্যার পর বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট আরেকবার মাঠ দেখবে। শিশির যদি পড়তে থাকে, কাল স্বাভাবিকভাবেই টসটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে। শিশির পড়া মানেই দ্বিতীয় ইনিংসে বোলারদের কঠিন পরীক্ষা। উইকেট, মাঠ কিংবা শিশির নিয়ে মাশরাফির ভাবনটা হচ্ছে, 'এখানে উইকেট ন্যাড়া হয়। আরও বেশি রান হয়। কোনো অঘটন না হলে বড় স্কোর আশা করছি। আগে ব্যাটিং করলে উইকেটে কতটা টার্ন থাকবে সেটার ওপর নির্ভর করছে স্কোর। পরে ব্যাটিং করলে শিশির থাকবে। তখন আরও স্বচ্ছন্দে ব্যাটিং করা যাবে। সব মিলিয়ে ব্যাটিং-বোলিং দুটিতেই ভালো পারফরম্যান্স আশা