বিশ্বকাপের আগে যে উত্তরগুলো খুঁজছে বাংলাদেশ

চলছে জিম্বাবুয়ে সিরিজ কিন্তু বাংলাদেশ যেন বিশ্বকাপ ঘিরে পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছে। ছবি: শামসুল হক
চলছে জিম্বাবুয়ে সিরিজ কিন্তু বাংলাদেশ যেন বিশ্বকাপ ঘিরে পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছে। ছবি: শামসুল হক
>চলছে জিম্বাবুয়ে সিরিজ, তবুও ঘুরেফিরে আসছে বিশ্বকাপ-ভাবনা। বিশ্বকাপের আগে এখন পর্যন্ত নির্ধারিত সূচিতে আছে মাত্র ১১টি ওয়ানডে। বিশ্বকাপের অনেক আগেই পেতে হবে সম্ভাব্য সেরা দল। জিম্বাবুয়ে সিরিজে কি অলক্ষ্যে বিশ্বকাপের দলই খুঁজছে বাংলাদেশ?

এই সিরিজের আগে মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেছেন, সাইফউদ্দিনকে দলে নেওয়াই হয়েছে বিশ্বকাপের কথা ভাবনায় রেখে। বাংলাদেশ এখন প্রতিটি সিরিজই খেলছে বিশ্বকাপের ভাবনা ভেবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে মাশরাফিকে বারবার যেমন ওপেনিং নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে দেখা গেছে। বিশ্বকাপের আগে ওপেনিং জুটির সমাধান না হলে যে বিপদ!

আজ চট্টগ্রামে মাশরাফির মধ্যে ওপেনিং জুটি নিয়ে সেই উদ্বেগটা দেখা গেল না। এশিয়া কাপের ফাইনালে লিটন দাস সেঞ্চুরি করেছেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে করেছেন ইমরুল কায়েস। তামিম ইকবাল ফিরলে এ দুজনের যেকোনো একজনকে ‘সেট’করতে পারবেন অনায়াসে, অধিনায়কের জন্য নিশ্চিত স্বস্তির খবর। বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ চাইছে সাত নম্বর ব্যাটিং পজিশনের সমস্যাটিরও সমাধান করে ফেলতে। টিম ম্যানেজমেন্ট শুরুতে ব্যাটিং অলরাউন্ডারকে থিতু করতে চাইলেও সেই চিন্তা থেকে সরে এসেছে। তারা চাইছে এই পজিশনে একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডারকে থিতু করতে। কারণটা যে ইংলিশ কন্ডিশনে এবারের বিশ্বকাপ ২০১৯, সে না বলে দিলেও চলছে। সাইফউদ্দিন সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন কি না সময় বলে দেবে। তবে মাশরাফির বিশ্বাস, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে সাইফউদ্দিন যেভাবে রান করেছেন, সেটি তাঁকে আরও আত্মবিশ্বাসী করবে।

বিশ্বকাপের এখনো দেরি আছে। আবার নেইও। আট মাস হাতে সময় আছে। এই আট মাসে বাংলাদেশ ১১টি ওয়ানডে খেলার সুযোগ পাবে। এর পাঁচটিই আবার দেশের মাঠে। ইংল্যান্ডের কন্ডিশনের কাছাকাছি বাংলাদেশ খেলার সুযোগ পাবে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডে, এরপর বিশ্বকাপের ঠিক আগে মে মাসে আয়ারল্যান্ডে। এই ছয়টি ওয়ানডেই চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে সহায়তা করবে বাংলাদেশকে।

মূল অভিযানে যাওয়ার আগে বাংলাদেশকে তাই পরখ করতে হচ্ছে নিজেদের অস্ত্রগুলোকে। গুরুতর চোটে না পড়লে মাশরাফি, সাকিব আল হাসান, তামিম, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, মোস্তাফিজুর রহমানের মতো কয়েকজনকে নিয়ে কোনো চিন্তা না থাকলেও ভাবনার আরও অনেক জায়গা আছে। এ প্রশ্নগুলোর উত্তর বাংলাদেশকে খুঁজতে হবে আগামী কয়েক ম্যাচেই। তাই তো সিরিজ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হলেও দলের ভাবনায় বারবার চলে আসছে বিশ্বকাপ। সিরিজ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বলেছিলেন, ‘কিছু খেলোয়াড় আছে যাদের নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। নাম ধরেও যদি বলি সাকিব, মুশফিক, তামিম, রিয়াদকে (মাহমুদউল্লাহ) নিয়ে আমাদের চিন্তা করার সুযোগ কম। একই সঙ্গে মোস্তাফিজ আছে, লিটন আছে; এরাও ভালো করছে। আগেও বলেছি আমাদের বিকল্প খেলোয়াড়ের অনেক ঘাটতি আছে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। এখন ধীরে ধীরে ঘরোয়া ক্রিকেট শক্তিশালী হচ্ছে বা ক্রিকেটাররাও নিজে থেকে ভালো খেলতে চাচ্ছে। এ রকম হলে সুযোগ তৈরি হবে এবং বদলি খেলোয়াড় তাড়াতাড়ি চলে আসবে।’

বড় মঞ্চে ভালো করতে ‘রিজার্ভ বেঞ্চ’ বা বিকল্প খেলোয়াড়ের তালিকাটা যে সমৃদ্ধ হতেই হবে, সেটি সবশেষ এশিয়া কাপে গিয়ে বাংলাদেশ ভালোভাবেই বুঝেছে। টুর্নামেন্টের মাঝ পথে এ ধরনের বিপাকে যেন না পড়তে হয়, বাংলাদেশ এবার সেভাবেই এগোচ্ছে। তামিম-সাকিবদের চোট এক অর্থে তাই শাপে বর হয়ে এসেছে। আজ মাশরাফি বললেনও, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নতুনদের সুযোগ দেওয়ার সামান্য সম্ভাবনাও বাংলাদেশ হাতছাড়া করবে না।