সাকিবও জানেন না কবে ফিরবেন

সাকিব আল হাসান। ছবি: প্রথম আলো
সাকিব আল হাসান। ছবি: প্রথম আলো
>পুরোপুরি ফিট হয়ে তবেই মাঠে নামতে চান সাকিব আল হাসান। সে জন্য সময় লাগবে। তবে পুরো ফিট হয়ে ঠিক কবে মাঠে ফিরতে পারবেন তা সাকিব  নিজেও জানেন না।

হাতের অবস্থা এখন কেমন? সাকিব আল হাসান নড়ে চড়ে বসেন। বাঁ হাতটাকে ডান হাতের তালুতে রেখে একবার যেন দেখে নিলেন কড়ে আঙুলটা। বললেন, ‘এখন অনেক ভালো। সংক্রমণ নেই। সর্বশেষ রিপোর্টে সেরকমই কিছু জানানো হয়েছে। চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে ফিজিও আমাকে বিস্তারিত জানাবে। তবে যতটুকু শুনলাম, সংক্রমণটা আর নেই।’

গতকাল সোমবার বনানীতে নিজের বাসায় বসে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলছিলেন সাকিব। আঙুলের চোট, চোট নিয়ে কাটানো সময়, কবে ফিরতে পারবেন মাঠে, জিম্বাবুয়ে সিরিজ খেলতে না পারার হতাশা—এ রকম আরও অনেক কিছু নিয়েই কথা বলেছেন টেস্টের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। কিন্তু আলোর রেখা দেখাতে পারেননি। হাতের অবস্থা আগের চেয়ে এখন অনেক ভালো হলেও মাঠে কবে ফিরতে পারবেন, তা জানেন না সাকিবও, ‘এখন যেহেতু একদমই সংক্রমণ নেই, যত দ্রুত ফিরে আসা যায়। তবে সময় বলা মুশকিল। এটা কেউ বলতে পারবে না। কারও একটু বেশি লাগে, কারও একটু কম।’

তবে আশা করতে তো দোষ নেই! সাকিবও আশাবাদী, এখন যেহেতু অনেক ভালো বোধ করছেন, নিশ্চয়ই সময়ের আগেই ফিরতে পারবেন মাঠে। তার আগেও অবশ্য আছে কয়েকটি ধাপ। হাতের আঙুলে হিসেব করে সাকিব বলছিলেন, ‘সংক্রমণ পুরোপুরি চলে যাওয়ার সঙ্গে খেলা না খেলার সম্পর্ক নেই। হ্যাঁ, সংক্রমণটা সারা লাগবে। আমার মূল সমস্যা, প্রথম যে চোটটা পেয়েছি সেটা। এরপর আরেকটা হয়েছে। সংক্রমণ তো তার পরে। সংক্রমণ সারবে। এরপর চোটটা সারা লাগবে। তারপর আমার খেলার সম্ভাবনা।’

সাকিব চান, পুরোপুরি ফিট হয়ে তবেই মাঠে নামতে। সে জন্য সময় লাগবে, ‘এখন যদি আবার ব্যথানাশক নিয়ে খেলা শুরু করি সেটা একটা ব্যাপার। তবে সেটা তো আমি অবশ্যই কখনো চাইব না। চেষ্টা চলছে হাতের পুরো শক্তি ফিরিয়ে আনার। তখন হয়তো আমার জন্য কাজগুলো অনেক সহজ হয়ে যাবে। সেটা হলেই খেলতে পারব। কোনো একটা নির্দিষ্ট সিরিজেই ফিরতে হবে, এটা আমার লক্ষ্য নয়। লক্ষ্য একটাই, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফিরতে চাই। পুরো ফিট হতে যত কিছু করা লাগে, যেভাবে করা লাগে, সেভাবেই আমি করব।’

অনুশীলন, খেলা এসব নিয়েই ব্যস্ততা সাকিবের। হঠাৎ করে থেমে গেছে সব। ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ে সিরিজ হচ্ছে, অথচ সাকিব তা থেকে দূরে। এ নিয়ে হতাশা আছে তাঁর। তবে সুবিধা হলো, সবকিছুকেই বাস্তবতার চোখ দিয়ে দেখতে পারেন সাকিব, ‘একজন খেলোয়াড়ের কাজই খেলা। খেলতে না পারলে তার ভেতর হতাশা কাজ করবে এটাই স্বাভাবিক। তবে এটাতে যেহেতু কারও হাত নেই, এ নিয়ে আফসোস করাটাও বোকামি মনে হয়। এই সময়টাকে যত ভালোভাবে কাজে লাগানো যায়, যত ইতিবাচকভাবে কাজে লাগানো যায় সেটাই চেষ্টা করছি।’

মেয়ে আলাইনাকে এখন আরও বেশি সময় দিতে পারছেন, পরিবারের কাজ করতে পারছেন; এতেই খুশি সাকিব, ‘মাঝে মাঝে এ রকম বিরতিরও দরকার হয়। এটা একটা ইতিবাচক দিক চোটে পড়ার। মেয়েকে একটু বেশি সময় দিতে পারছি। এটাও তো ভালো।’

শেষের কথাগুলো বললেন বাবা সাকিব। ক্রিকেটার সাকিবের মন জুড়ে শুধুই হতাশার মেঘ। প্রতিটি মুহূর্ত কাটছে অপেক্ষায়। কবে ফিরতে পারবেন মাঠে? কিন্তু উত্তর জানা নেই কারওই।

· * সাকিব আল হাসানের বিস্তারিত সাক্ষাৎকার পড়ুন কাল ছাপা সংস্করণের খেলার পাতায়।