ভালো কিছু দেখাতে চেয়েছিলেন ইমরুল

সেঞ্চুরির পর ইমরুল কায়েস। ছবি: প্রথম আলো
সেঞ্চুরির পর ইমরুল কায়েস। ছবি: প্রথম আলো
>বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে ওয়ানডে সিরিজে রানের ফল্গুধারায় ভেসেছেন ইমরুল কায়েস। দুটি সেঞ্চুরি আর একটি ‘নার্ভাস নাইন্টিজ’ ইনিংস দিয়ে সিরিজসেরা হয়েছে এই ওপেনার

সিরিজসেরার পুরস্কার নিতে মঞ্চের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় ইমরুল কায়েসের মুখে হাসির ঝিলিকটা দেখেছেন? ভীষণ স্বস্তির সেই হাসি। নিজের আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার প্রতিচ্ছবিও। পরিকল্পনাটা তিনি আগেই করে রেখেছিলেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে ডাক পেলেই দেখিয়ে দেবেন!

বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা তা নিশ্চয়ই দেখেছেন। ইমরুলের বীরত্ব? না, ঠিক বীরত্ব নয় স্ট্রোক-প্লে নির্ভর সহজাত ব্যাটিং। ছবির মতো সুন্দর। ঝড়ের মতোই ভয়ংকর। যাঁর প্রথম নিদর্শন মিলেছে প্রথম ম্যাচে। ১৪৪ রানের সেই ইনিংস ঝড় সামলে প্রতিপক্ষের ওপর পাল্টা ঝড় বইয়ে দেওয়ার উদাহরণ। আর দ্বিতীয় ম্যাচে ৯০ রানের ইনিংসটি দিয়ে দলকে দেখিয়েছেন জয়ের পথ। না, ইমরুল এখানেই থেমে যাননি। তাঁর বিরুদ্ধে যে অনেক পুরোনো এক অভিযোগ, এক ম্যাচে রান পেলে পরের দশ ম্যাচে নেই! ইমরুল এই ভাবনাকেই ভুল প্রমাণ করে আজ তৃতীয় ম্যাচে তুলে নিয়েছেন আরেকটি সেঞ্চুরি! জিম্বাবুয়েকে ৭ উইকেটে হারানোয় দারুণ ভূমিকা রেখেছে তাঁর ১১৫ রানের ইনিংস। বাংলাদেশের প্রথম কোনো ব্যাটসম্যান হিসেবে টানা তিন ম্যাচে অন্তত ৯০ রান করা ব্যাটসম্যান এখন ‘অধারাবাহিক’ ইমরুল।

সাধারণত সবাই তাঁকে যেভাবে চিনে থাকে—দলে আসা-যাওয়ার ওপর থাকা ব্যাটসম্যান—সেখান থেকে এই সিরিজে ইমরুল নিজেকে চেনালেন ভিন্নভাবে। কী ভীষণ ধারাবাহিক! যার সুর তিনি বেঁধেছেন সম্ভবত এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৭২ রানের সেই ইনিংসটি দিয়ে। কদিন আগেই প্রথমবারের মতো পেয়েছেন পিতৃত্বের স্বাদ। এরপরই জিম্বাবুয়ে সিরিজে দেখা মিলল দুর্দান্ত দায়িত্ববান এক ইমরুলের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই সিরিজে ইমরুল যে একই সঙ্গে ভালো ও ভিন্ন কিছু করে দেখাতে চেয়েছিলেন, ‘এটা আমার জন্য অসাধারণ এক সিরিজ। নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেছি। দলে ডাক পাওয়ার পর ভেবেছিলাম ভালো কিছু করব, ভিন্ন কিছু করে দেখাব।’

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই সিরিজে সেই ‘ভিন্ন’ ইমরুলকেই দেখেছে বাংলাদেশ। আর সৌম্য সরকারকে? সম্ভবত, ভয়াল-সৌম্য-সুন্দর। এই সিরিজে তিনি স্কোয়াডে ছিলেন না। তৃতীয় ম্যাচে দলে ফিরেই কী দারুণ সব স্ট্রোক খেলে সেঞ্চুরি তুলে নিলেন! ইমরুল মনে করেন ইনিংসের মাঝপথে তাঁর চাপটা সৌম্য শুষে নিয়েছেন, ‘সৌম্য ইতিবাচক ব্যাটসম্যান। ক্লাস খেলোয়াড়। তাঁর জন্য অতটা চাপ অনুভব করিনি।’ ইমরুলের এই নির্ভার মুখটাই তো দেখতে চায় বাংলাদেশ ক্রিকেট। টেস্ট সিরিজেও কি এই মুখ দেখা যাবে? ইমরুলের জবাব, ‘নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’