ভিনিসিয়ুস আর ভাগ্যে জয় পেল রিয়াল

প্রথমবারের মতো দলকে জয় এনে দেওয়ার আনন্দ ভিনিসিয়ুসের। ছবি: এএফপি
প্রথমবারের মতো দলকে জয় এনে দেওয়ার আনন্দ ভিনিসিয়ুসের। ছবি: এএফপি

ম্যাচের ৮২ মিনিট পর্যন্ত ম্যাচে এগিয়ে ছিল রিয়াল। স্কোরে সমতাই ছিল কিন্তু খেলায় এগিয়ে ছিল রিয়াল। তবে স্বাগতিক রিয়াল নয়, রিয়াল ভায়াদোলিদ! রিয়াল মাদ্রিদের মাঠেও ছড়ি ঘোরাচ্ছিল দলটি। অন্তর্বর্তীকালীন কোচের অধীনেও সেই নিষ্প্রাণ মাদ্রিদ। আক্রমণের শেষভাগে এসে খেই হারিয়ে ফেরা এক দলকেই দেখা যাচ্ছিল আজ। কিন্তু পাঁচ মিনিটের মধ্যে ভাগ্য ঘুরে গেল দলটির। নিজেদের মাঠে ভায়াদোলিদকে ২-০ গোলে হারিয়ে স্বস্তি পেল রিয়াল মাদ্রিদ।

হুলেন লোপেতেগির অধীনে জিততেই ভুলে গিয়েছিল রিয়াল। লিগে হারের হ্যাটট্রিক গড়া দলটি পাঁচ ম্যাচ ধরে ছিল জয়হীন। সান্তিয়াগো সোলারির অধীনে প্রথম দুই ম্যাচেই জয় পেয়েছে রিয়াল। তবে কোপা দেল রের ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও জেতার জন্য ১৮ বছরের ভিনিসিয়ুস জুনিয়ুরের কাঁধে চড়তে হলো। গ্যারেথ বেল, করিম বেনজেমা, লুকা মদরিচ, টনি ক্রুস, মার্কো অ্যাসেনসিও ও ইসকো সমৃদ্ধ এক দলের জন্য যেটা অশনিসংকেত নিঃসন্দেহে।

ভিনিসিয়ুসে চড়ার পরও ভাগ্যের সাহায্য পেতে হয়েছে রিয়ালকে। ৮৩ মিনিটে বক্সের বাঁ প্রান্ত দিয়ে স্বভাবজাত ড্রিবলিং করে ঢুকে একটা শট নিয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান এই বিস্ময়বালক। সে শট গোল পোস্টের ধারে কাছেও যাচ্ছিল না। কোনো সতীর্থেরও সেটা ধরার উপায় ছিল না। কিন্তু ভায়াদোলিদের কিকো ওলিভাসের গায়ে লেগে সে বল গোলমুখী হলো। গোলরক্ষক মাসিপ বলের ছোঁয়া পেয়েছেন কিন্তু জালে যাওয়া আটকাতে পারেননি। আত্মঘাতী সে গোল আদায় করেই গোল করার আনন্দে ভাসলেন ভিনিসিয়ুস। রিয়ালও ফেলল স্বস্তির নিশ্বাস।

৫ মিনিট পর আবারও ভাগ্য ফিরে তাকাল রিয়ালের দিকে। আবারও বাঁ প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে ভিনিসিয়ুস পাস দিলেন বেনজেমাকে। বেনজেমা বল নিয়ে ঢুকতে গিয়ে ক্যালেরোর পায়ে আটকা পড়লেন। সেখান থেকে পাওয়া পেনাল্টি থেকে রিয়ালের জয় নিশ্চিত করলেন সার্জিও রামোস। বার্নাব্যুর ক্ষুব্ধ সমর্থকদের একটু শান্ত করার উপলক্ষ পেলেন রামোস।

সমর্থকদের ক্ষুব্ধ হওয়ার যথেষ্ট কারণ ছিল। লোপেতেগিকে বরখাস্ত করা হলেও যে দলের খেলায় এর কোনো ছাপ পাওয়া যায়নি। প্রথমার্ধে তবু দুই উইংয়ে ওদ্রিওজোলা ও অ্যাসেনসিও বারবার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বেল-বেনজেমার ব্যর্থতা প্রমাণ করেছে, এমন ফরোয়ার্ড লাইন থাকলে কোনো কোচের পক্ষেই সাফল্য বের করে আনা সম্ভব নয়। দ্বিতীয়ার্ধে অ্যাসেনসিওকেও নিজের ছায়া মনে হয়েছে। বেলকে তো কারও ছায়া বলারও উপায় ছিল না। বেলের পরিবর্তে ভাসকেজ ও অ্যাসেনসিওর পরিবর্তে ভিনিসিয়ুস নামার পর খেলার গতিতে একটু নতুন ছন্দ আসে।

তবে এ ছন্দ ছাড়া ভাগ্যের সহযোগিতা দরকার হয়েছে রিয়ালের। ম্যাচের সেরা দুটি সুযোগ হাতছাড়া করেছে ভায়াদোলিদ। সে সঙ্গে দুইবার ক্রস বার কাঁপানো দুটো শট তো ছিল। সে দুটো শট আর দুই এক ইঞ্চি নিচু হলেই ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যেত ভায়াদোলিদ। ৫৭ ও ৬৬ মিনিটে আলক্যারেজ ও ভিয়ার শট দুটির পরও বেশ কয়েকটি সুযোগ সৃষ্টি করেছিল ভায়াদোলিদ। কিন্তু ভাগ্য রিয়ালের পক্ষেই হেসেছে।