আচরণটা ঠিক হয়নি - কোহলিকে সতর্ক করল বিসিসিআই

ভক্তের সঙ্গে কোহলির আচরণ ভালোভাবে নেয়নি ক্রিকেট বোর্ড। ফাইল ছবি
ভক্তের সঙ্গে কোহলির আচরণ ভালোভাবে নেয়নি ক্রিকেট বোর্ড। ফাইল ছবি

বিরাট কোহলি অ্যাপের এমন বিজ্ঞাপন শত চেষ্টাতেও করতে পারতেন না ভারত অধিনায়ক। নিজের অফিশিয়াল অ্যাপে এক সমালোচককে সরাসরি দেশ ছেড়ে যেতে বলেছেন কোহলি। কারণ, কোহলির চেয়ে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানদের বেশি ভালো লাগে ওই ভারতীয়র। কোহলির এমন মন্তব্য অবশ্য সহজভাবে নেয়নি কেউই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোহলির সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।

কোহলিকে নিয়ে মজায় মেতেছেন সবাই। কেউ অন্য দেশে যাওয়ার জন্য কোহলির সহযোগিতা চাইছেন। কেউ দক্ষিণ আফ্রিকা আর নিউজিল্যান্ডের মধ্যে কোন দেশকে বেছে নেবেন সেটা জানতে চেয়েছেন। বিখ্যাত ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে অবশ্য সহজ স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই কোহলির সমালোচনা করেছেন। ভোগলের দাবি, নিজেদের তারকাখ্যাতিতে এতটাই অন্ধ হয়ে আছেন কোহলিরা যে সামান্য সমালোচনা সহ্য করার ক্ষমতাই হারিয়ে ফেলছেন, ‘বিখ্যাত মানুষেরা যে একটা বিশেষ একটা বুদবুদে বাস করে কিংবা ঢুকে পড়তে বাধ্য হয়, বিরাট কোহলির বিবৃতিতে সেটাই প্রকাশ পেয়েছে। এই বুদবুদে সেই সব শব্দই ভেসে বেড়ায়, যা তারা সব সময় শুনতে চান। এ বুদবুদ অনেক আরামদায়ক এবং এ কারণেই বিখ্যাতদের উচিত এমন কিছু যেন সৃষ্টি না হয় সে চেষ্টা করা।’ বিশ্বের ‘শ্রেষ্ঠ ব্যাটসম্যান’এ কথা শুনতে অভ্যস্ত কোহলি তাই অন্য কিছু শুনতেই খেপে গেছেন, এমনটাই ইঙ্গিত ভোগলের।

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড অবশ্য ইঙ্গিতের ধার ধারেনি। সরাসরিই কোহলিকে জানিয়ে দিয়েছে, কত বড় অন্যায় করেছেন। টাইমস অব ইন্ডিয়ার বরাতে জানা গেছে বিসিসিআইয়ের কোষাধ্যক্ষ অনিরুদ্ধ চৌধুরী বলেছেন, ‘বিসিসিআইয়ের আমরা আমাদের ক্রিকেট সমর্থকদের মূল্য বুঝি এবং তাঁদের মতামতকে সম্মান করি। আমি সুনীল গাভাস্কারের ব্যাটিং দেখতে ভালোবাসতাম, কিন্তু সে সঙ্গে গর্ডন গ্রিনিজ, ডেসমন্ড হেইন্স এবং ভিভ রিচার্ডসের খেলাও ভালোবাসতাম। আমি শচীন টেন্ডুলকার, বীরেন্দর শেবাগ, সৌরভ গাঙ্গুলী, ভিভিএস লক্ষ্মণ ও রাহুল দ্রাবিড়ের ব্যাটিংও পছন্দ করতাম আবার মার্ক ওয়াহ, ব্রায়ান লারাসহ এমন আরও অনেকের খেলাই ভালোবেসেছি। আমার কাছে শেন ওয়ার্ন ছিল চোখের জন্য সবচেয়ে রোমাঞ্চকর স্পিনার কিন্তু অনিল কুম্বলে যখন বল করত সে উত্তেজনার তো কোনো তুলনা হয় না। ফর্মে থাকা কপিল দেব ছিল চোখের জন্য তৃপ্তিদায়ক, কিন্তু রিচার্ড হ্যাডলি, ইয়ান বোথাম এবং ইমরান খানদের বেলাতেও তাই।’

এভাবে যুগের সেরা খেলোয়াড়দের ভালোবাসাটাই সত্যিকারের সমর্থকের কাজ। কারণ, ব্যাটে-বলের লড়াইয়ে গড়পড়তা সবার মাঝে ব্যতিক্রমী কিছু যারা উপহার দেন, ইতিহাস তাদেরই মনে রাখে। কোহলিকে এটা আবার মনে করিয়ে দিয়েছেন অনিরুদ্ধ, ‘ভৌগোলিক কিংবা রাজনৈতিক সীমা নিয়ে চিন্তা না করে ক্রিকেটের সেরাদের শ্রদ্ধা করাটাই তো এমন ভালোবাসার জন্ম দেয়।’ আর ভক্তদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে বলা মানে যে কোহলির নিজের তারকাখ্যাতিতেও টান পড়া, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সেটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন অনিরুদ্ধ, ‘বিরাটের বোঝা উচিত, এই সমর্থকেরা যদি দেশ ছেড়ে অন্য দেশে যায়, তবে পিউমাও আর তাঁর সঙ্গে ১০০ কোটি রুপির চুক্তি করতে আসবে না। বিসিসিআইয়ের আয় পড়ে যাবে, সে সঙ্গে কমবে খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফি। সে (কোহলি) যদি চুক্তিটা আবার পড়ে দেখে, তাহলে বুঝবে সে সম্ভবত এ বিবৃতি দিয়ে চুক্তির নিয়ম ভঙ্গ করেছে। এর আগে সে ইংল্যান্ডে গিয়ে পিউমার বিজ্ঞাপন করে বিসিসিআইয়ের নাইকির সঙ্গে চুক্তিটারও অমর্যাদা করেছে।’