তামিম নিজেই সম্ভাবনা দেখেন না

আজ বিকেলে নেট অনুশীলন শুরুর আগে তামিম। ছবি: প্রথম আলো
আজ বিকেলে নেট অনুশীলন শুরুর আগে তামিম। ছবি: প্রথম আলো
>সিলেট টেস্টে জিম্বাবুয়ের কাছে বাজেভাবে হারের পর অনেক গুঞ্জন বাতাসে। তুষার ইমরান কি দলে অন্তর্ভুক্ত হবেন? কিংবা সৌম্য সরকার কি ওয়ানডে সিরিজের মতো আবারও দলে আকস্মিক সুযোগ পাবেন? হাতে চোট পাওয়া তামিম যেভাবে নেটে অনুশীলন করছেন, গুঞ্জনের এই তালিকায় যোগ হয়েছে তাঁর নামটিও। বাংলাদেশ ক্রিকেটে হুটহাট দলে খেলোয়াড় অন্তর্ভুক্তির যে বাজে সংস্কৃতির চর্চাটা হয়, এমন আলোচনা হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।

তামিম ইকবালের ফোনে একটা কল এসেছে। যিনি ফোন দিয়েছেন, তাঁর নাম ‘সেভ’ করে রাখা হয়েছে ‘টি ফি’ নামে। এখানে ‘টি’ মানে থিহান আর ‘ফি’ অর্থ ফিজিও। বুঝতেই পারছেন তামিমকে কে কল দিয়েছেন। বিকেল ৪টায় সিলেট থেকে ঢাকা বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পরই বাংলাদেশ দলের ফিজিও শুধু ফোনেই খোঁজখবর নেননি, দৌড়ে চলে এসেছেন মিরপুর বিসিবি একাডেমি মাঠে। তামিম নেটে ব্যাটিংয়ে নামছেন, ফিজিও দৌড়ে আসছেন—উপস্থিত সাংবাদিকদের দল তামিমকে রসিকতার সুরে প্রশ্ন করল, তবে কি দুইয়ে–দুইয়ে চার মিলিয়ে নেওয়া যাবে?

মানে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে খেলার কোনো সম্ভাবনা আছে দেশসেরা ওপেনারের? তামিম রহস্যের হাসি হাসেন। সিলেট টেস্টে জিম্বাবুয়ের কাছে বাজেভাবে হারের পর অনেক গুঞ্জন বাতাসে। ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত খেলা তুষার ইমরান কি দলে অন্তর্ভুক্ত হবেন? কিংবা সৌম্য সরকার কি ওয়ানডে সিরিজের মতো আবারও দলে আকস্মিক সুযোগ পাবেন? হাতে চোট পাওয়া তামিম যেভাবে নেটে অনুশীলন করছেন গুঞ্জনের এই তালিকায় যোগ হয়েছে তাঁর নামটিও।

গুঞ্জন হবে না কেন? বাংলাদেশ ক্রিকেটে হুটহাট দলে খেলোয়াড় অন্তর্ভুক্তির যে বাজে সংস্কৃতির চর্চাটা হয়, এমন আলোচনা হওয়া অস্বাভাবিক নয়। সিলেটে বাজে ব্যাটিং প্রদর্শনীর পর তামিমের ফেরা নিয়ে যদি কোনো গুঞ্জন তৈরিও হয়, আপাতত তিনি সেটা উড়িয়েই দিচ্ছেন, ‘(খেলার সম্ভাবনা) অনেক অনেক কম। আমার কাছে মনে হয় পারব, কিন্তু যে তৈরি নই। আমার মনে হয় না ফিজিও আমাকে কোনোভাবে খেলতে অনুমতি দেবে। মাত্র তিন দিন হয়েছে ব্যাটিং শুরু করেছি। এটিকে সেমি-ব্যাটিং বলতে পারি, যেটি আমি করছি এখন। যত দিন পুরোপুরি নেট সেশন শুরু না করব, এটি দলের জন্য ভালো হবে না। আমার পক্ষ থেকেও ফিট হিসেবে দাবি করা সম্ভব হবে না টেস্ট খেলারে ব্যাপারে।’

নিজের ফিটনেস কোন পর্যায়ে আছে, সেটিও বিস্তারিত বললেন এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে হাতে চোট পাওয়া তামিম, ‘এখনো পুরো নেট সেশন করিনি। স্পিন বল খেলা, ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা, যখন আপনি ঘণ্টায় ১৩০-১৪০ গতির বল খেলবেন, বুঝবেন অনেক পার্থক্য রয়েছে। আমি জানি না সেখানে আমার হাত কীভাবে সাড়া দেয়। তবে অনেক ইতিবাচকই লাগছে। আশা করি আগামী তিন দিনের মধ্যে পুরো নেট সেশন করব। আরও ভালো বুঝতে পারব যে আমার অবস্থা কোন পর্যায়ে আছে।’

জিম্বাবুয়ে সিরিজে যেহেতু কোনো সম্ভাবনা নেই, তামিমের চোখ এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে। বাঁহাতি ওপেনারের আশা, ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ২২ নভেম্বর চট্টগ্রামে শুরু প্রথম টেস্ট দিয়েই আবার শুরু করতে পারবেন। উইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলতে এমএ আজিজে দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে একটু ঝালিয়ে নেবেন কি না, সেটি অবশ্য নিশ্চিত নন তামিম, ‘এটি নির্ভর করছে অনেক কিছুর ওপর। সাধারণত যেকোনো ক্রিকেটার চোট থেকে ফিরে সিরিজের আগে একটি ম্যাচ খেলতে চায়। সত্যি কথা বলতে কি, আমি দ্বিতীয় টেস্ট (জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে) খেলতেই চাইছিলাম। আজ থেকে তিন-চার সপ্তাহ আগেও এটাই আমার লক্ষ্য ছিল। চাইছিলাম একটি ম্যাচ খেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ শুরু করতে। আমরা সবাই জানি যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ বেশ কঠিন হবে।’
তামিমকে তাই বাড়তি প্রস্তুতি নিতে হবে পরের সিরিজের জন্য, ‘আমি নিজে প্রস্তুতি ম্যাচের ওপর খুব একটা আস্থা রাখি না। অবশ্য এখনই খেলার বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া ঠিক হবে না। ১৬ তারিখে কী অবস্থায় থাকব, সেটি তো আর বলতে পারব না। ওই সময়ে যদি মনে হয় যে ম্যাচটি খেলা আমার দরকার, অবশ্যই খেলব। আর যদি আমার কাছে মনে হয় সঠিক অবস্থায় নেই, তাহলে খেলব না। এটি পুরোপুরি নির্ভর করছে যে আমি ১৬-১৭ তারিখে কী অবস্থায় থাকি।’