দেশের শততম সেঞ্চুরিতে তিন 'ম' আর তারিখের কাকতাল!

দেশের শততম সেঞ্চুরিতে তিন ‘ম’ এর কাকতাল!
দেশের শততম সেঞ্চুরিতে তিন ‘ম’ এর কাকতাল!
>

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাল বাংলাদেশের শততম সেঞ্চুরিটি এনে দিয়েছেন মুমিনুল হক

১ থেকে ৫০, তারপর ১০০—এই তিন মাইলফলকেই জড়িয়ে তিন ‘ম’।
এক লহমায় কথাটি বোঝা কঠিন। কিন্তু যদি তিনটি নাম বলা হয়—মেহরাব হোসেন, মুশফিকুর রহিম ও মুমিনুল হক...ক্রিকেটপ্রেমীরা এবার হয়তো ধরে ফেলেছেন। হ্যাঁ, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম সেঞ্চুরি মেহরাবের। সেই যে ১৯৯৯ সালে ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ১৪ বছর পর গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫০তম সেঞ্চুরিটি তুলে নিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। এর পাঁচ বছর পর কাল মুমিনুল এনে দিলেন শততম সেঞ্চুরি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের অভিষেক ১৯৮৬ সালে, ওয়ানডে দিয়ে। প্রথম সেঞ্চুরির জন্য অভিষেকের পর ১৩ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ওই যে ১৯৯৯ সালে মেরিল ইন্টারন্যাশনাল কাপে মেহরাবের সেঞ্চুরিটি। কাল সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই এল শততম সেঞ্চুরি। এই ১০০ সেঞ্চুরি পেতে ক্রিকেটের সব সংস্করণ মিলিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ৫৪৪ ম্যাচ খেলতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এই পথে বাংলাদেশের পেছনে শুধুই জিম্বাবুয়ে। শততম সেঞ্চুরি পেতে জিম্বাবুয়েকে খেলতে হয়েছে ৫৭১ ম্যাচ। এতে সবচেয়ে দ্রুততম ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাদের লেগেছে মাত্র ৯১ ম্যাচ।

টেস্ট আঙিনায় বাংলাদেশ এখনো বড় দল হয়ে উঠতে পারেনি। কিন্তু মুশফিকের সেঞ্চুরিসহ এই ১০১ সেঞ্চুরির মধ্যে টেস্ট থেকেই তিন অঙ্কের ইনিংস এসেছে সবচেয়ে বেশি। কাল টেস্ট আঙিনায় সেঞ্চুরির ‘ফিফটি’ এনে দেন মুমিনুল। পরে সংখ্যাটা ৫১-তে উন্নীত করেন মুশফিক। ওয়ানডেতে ‘ফিফটি’র দেখা পেতে আর এক সেঞ্চুরি চাই বাংলাদেশের—মানে ৪৯টি সেঞ্চুরি। আর টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরিসংখ্যা একটি—২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওমানের বিপক্ষে তামিম ইকবালের ১০৩*।

বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরিটি তুলে নিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম।
বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরিটি তুলে নিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম।

এই ১০১ সেঞ্চুরির মধ্যে খুব স্বাভাবিকভাবেই ঘরের মাঠে বাংলাদেশ দলের সেঞ্চুরিসংখ্যা বেশি। ঘরের মাঠে ৫৩ সেঞ্চুরি করেছেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা। এ তুলনায় প্রতিপক্ষের মাঠে সংখ্যাটা একেবারে কম না—৩৬ সেঞ্চুরি। আর নিরপেক্ষ ভেন্যুতে ১২ সেঞ্চুরি। সেঞ্চুরি করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের প্রিয় প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে, প্রিয় ভেন্যু শেরেবাংলা স্টেডিয়াম। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরিসংখ্যা ২৩ আর শেরেবাংলায় সেঞ্চুরিসংখ্যা ২২।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অভিষেকের এই ৩২ বছরে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি পেয়েছেন ২০১৪ সালে। সে বছর সর্বোচ্চ ১৩টি সেঞ্চুরি পেয়েছে বাংলাদেশ। ১৯৯৯ সালে প্রথম সেঞ্চুরির মুখ দেখার পর শুধু একটি বছর বাংলাদেশ কোনো সেঞ্চুরির দেখা পায়নি—২০০২ সাল। আর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই তিন দশকেরও বেশি সময়ে বাংলাদেশের মোট ২৬ ক্রিকেটার সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২০টি সেঞ্চুরি তামিমের (টেস্টে ৮টি, ওয়ানডেতে ১১টি ও টি-টোয়েন্টিতে ১টি)। তিন সংস্করণ মিলিয়ে সমান ১২টি করে সেঞ্চুরি সাকিব ও মুশফিকের। ৯টি মোহাম্মদ আশরাফুলের আর ৭টি করে সেঞ্চুরি ইমরুল ও মুমিনুলের। এর মধ্যে মুমিনুলের সব কটি সেঞ্চুরিই টেস্টে।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে যেহেতু টেস্ট সংস্করণে শততম সেঞ্চুরিটি এসেছে, তাই প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির প্রসঙ্গ উঠে আসবেই। আর এই সেঞ্চুরি করে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে অমরত্ব পেয়েছেন আমিনুল ইসলাম। ভারতের বিপক্ষে ২০০০ সালে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে ১৪৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন আমিনুল। সেই দিনটি ছিল ১১ নভেম্বর। আচ্ছা, কাল যেন কত তারিখ ছিল!