জিম্বাবুয়েকে ফলোঅনে পাঠাবে বাংলাদেশ?

টানা তৃতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট তুলে নিলেন তাইজুল। ছবি: শামসুল হক
টানা তৃতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট তুলে নিলেন তাইজুল। ছবি: শামসুল হক
৩০৪ রানে শেষ হয়েছে জিম্বাবুয়ের ইনিংস। ফলোঅন এড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা থেকে এখনো ১৮ রানে পিছিয়ে তারা। ২১৮ রানে এগিয়ে থেকে বাংলাদেশ কি জিম্বাবুয়েকে ফলোঅন করাবে?


তাইজুলের বলে রেজিস চাকাভার ব্যাট ছুঁয়ে বল চলে গেল শর্ট লেগে দাঁড়ানো মুমিনুল হকের হাতে। ৪২ বলে ১০ রান করে বিদায় নিলেন জিম্বাবুয়ের উইকেটরক্ষক। নবম উইকেটের পতনেই জিম্বাবুয়ের ইনিংস শেষ ওখানেই। কারণ টেন্ডাই চাতারা। গতকাল বোলিংয়ের সময় মাংসপেশিতে টান খেয়ে শেষ হয়ে গেছে তাঁর ম্যাচ। জিম্বাবুয়ের ইনিংস থেমেছে ৩০৪ রানে। ফলোঅন এড়াতে তাদের দরকার ছিল আরও ১৮ রান। কিন্তু বাংলাদেশ কি জিম্বাবুয়েকে ফলোঅন করাচ্ছে? ২১৮ রানে এগিয়ে থেকে বাংলাদেশ সেটি করাতেই পারে। তবে এই প্রশ্নের চূড়ান্ত উত্তর জানতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে আগামীকাল সকাল পর্যন্তই।
তাইজুল এই সিরিজে টানা তৃতীয় পাঁচ উইকেট পাওয়ার কীর্তি গড়লেন। জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা সিলেটেই যে ‘তাইজুল জুজু’তে পড়েছিল, সেটি দূর করতে পারেনি ঢাকায় এসেও। তাইজুলের পাশাপাশি মেহেদী হাসান মিরাজ নিয়েছেন ৩ উইকেট। মোট কথা, স্পিন দিয়েই জিম্বাবুয়েকে কাবু করে সিরিজে সমতা ফেরানোর পথে এগিয়ে গেল মাহমুদউল্লাহর দল।
পাল্টা প্রতিরোধ গড়েছিল জিম্বাবুয়েও। সে কারণেই ১৩১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলার পরেও তাদের সংগ্রহ ৩০৪। এর জন্য তারা ধন্যবাদ দিতেই পারে ব্রেন্ডন টেলর আর পিটার মুরকে। টেলরের ব্যাট থেকে এসেছে অনবদ্য এক সেঞ্চুরি। ১৯৪ বল খেলে ১০ চারে ১১০ রান করে মিরাজের বলে তাইজুলের দুর্দান্ত ক্যাচ ফেরেন তিনি। মুর আরিফুলের প্রথম টেস্ট উইকেট হয়েছেন এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়ে, ৮৩ রান করে। টেলর-মুর ষষ্ঠ উইকেটে গড়ে তোলেন ১৩৯ রানের জুটি।
টেলরকে ফেরানো তাইজুলের দুর্দান্ত ক্যাচটির কথা বলতেই হয়। মিরাজের বলে স্লগ সুইপ করেছিলেন টেলর। শূন্যে লাফিয়ে ক্যাচটি মুঠোবন্দী করেন তাইজুল। ঠিক এক বল পরেই মাভুতাকেও ফেরান মিরাজ।

মোস্তাফিজ থাকলেন উইকেটশূন্য। ছবি: শামসুল হক
মোস্তাফিজ থাকলেন উইকেটশূন্য। ছবি: শামসুল হক

সিলেট টেস্টে বাংলাদেশের শোচনীয় হার হলেও তাইজুল ছিলেন ব্যতিক্রম। দুই ইনিংস মিলিয়ে জিম্বাবুয়ের ১১ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি। বাংলাদেশের ৫২২ রানের জবাবে তৃতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনেই যে জিম্বাবুয়ের ৫ উইকেট চলে গেল, তার পূর্ণ কৃতিত্ব নাটোরের এই স্পিনারেরই। জিম্বাবুয়ের ৫ উইকেটের ৪টিই নিয়ে নেন তিনি।
কাল শেষ বিকেলেই তিনি তুলে নিয়েছিলেন অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজার উইকেট। তৃতীয় দিনের শুরুতে বাংলাদেশের প্রথম সাফল্যটাও আসে তাইজুলের হাত ধরেই। তাঁর বলেই ডেনাল্ড তিরিপানো ক্যাচ দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজকে। মজার ব্যাপার, কাল বিকেলেও মাসাকাদজা ক্যাচ দিয়েছিলেন মিরাজকে। জিম্বাবুয়ের জন্য বড় ধাক্কা হয় ব্রায়ান চারির উইকেট হারানো। ৫৩ রানের ইনিংস খেলে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে মুমিনুলকে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি।
মিরাজের বলটি চারির গ্লাভস ছুঁয়ে শর্ট লেগে গিয়েছিল মুমিনুলের তালুতে। তবে আম্পায়ার ওই মুহূর্তে আউট ঘোষণা করেননি তাঁকে। রিভিউ নিয়ে সফল হয় বাংলাদেশ। আল্ট্রাএজে দেখা যায়, বল ছুঁয়ে গেছে চারির গ্লাভস। ভালো খেলছিলেন চারি। ভয়ভীতি দূরে ঠেলে বাংলাদেশের বোলারদের ওপর দারুণভাবে চড়াও হয়েছিলেন। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর কপালে চিন্তার ভাঁজও ফেলেছিলেন ।

বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে আরও একটি সেঞ্চুরি টেলরের
বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে আরও একটি সেঞ্চুরি টেলরের

তাইজুল ৫ উইকেট পেয়েছেন ১০৭ রানে। একাই বল করেছেন ৪০ ওভার ৩ বল। মেডেন দেন ১০টি। প্রথম থেকে খালেদ আহমেদ জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছিলেন। কিন্তু তিনি উইকেটের খাতা খুলতে পারেননি। ১৮ ওভার বোলিং করে ৭ মেডেনে তিনি দিয়েছেন ৪৮ রান। অভিষেকটা মন্দ হলো না সিলেটের এই পেস বোলারের। মোস্তাফিজ ২১ ওভার বোলিং করে ৮ মেডেনে দিয়েছেন ৫৮ রান। তবে চমক দেখিয়েছেন আরিফুল। ৪ ওভার বোলিং করে ২ মেডেনে ১০ রান দিয়ে ভাঙেন মুর ও টেলরের সেই জুটি। মুরকে করেন এলবিডব্লু।