মোহাম্মদ রফিককেও মনে পড়ছে টেলরের

ক্যারিয়ারের শুরুতে রফিকের বলে ধুঁকেছেন, এখনো ভোলেননি টেলর। এএফপি ফাইল ছবি
ক্যারিয়ারের শুরুতে রফিকের বলে ধুঁকেছেন, এখনো ভোলেননি টেলর। এএফপি ফাইল ছবি
টেস্ট ক্যারিয়ারে ৫ সেঞ্চুরি, চারটিই বাংলাদেশের বিপক্ষে। এই প্রথম দেশের বাইরে সেঞ্চুরি করলেন, সেখানেও প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। ব্রেন্ডন টেলর অবশ্য জানালেন, কাজটা তাঁর জন্য মোটেও সহজ ছিল না। কারণ বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ তাঁর চোখে সব সময়ই কঠিন ছিল


সাকিব আল হাসানের আলোতে থেকেও তিনি উজ্জ্বল। শুধু সাকিব কেন? বাংলাদেশের সব বোলারদের মিলিয়ে ২০ টেস্টে ৭৫ উইকেটের মাইলফলক ছোঁয়ার কীর্তি তাইজুল ইসলামেরই। আর সাকিব না থাকলে তাইজুল তো আরও উজ্জ্বল হবেনই!

তাইজুলের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাবই সাকিবের অনুপস্থিতিতে। আচরণগত সমস্যার কারণে নিষিদ্ধ হওয়ায় বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে ছাড়াই ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর করেছিল। খুব ভালো সফর যে হয়েছিল, তা নয়। তবে সেবার অভিষেকে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তাইজুল। সাকিব ফিরলে কী করবেন, সেটা দেখার কৌতূহল ছিল নিশ্চয়ই অনেকের। পরের সিরিজেই সাকিব জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নিলেন, তাইজুলের উইকেট ১টি। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসেই তাইজুল ৩৯ রানে নিলেন ৮ উইকেট, যেটি এখনো টেস্টে বাংলাদেশের পক্ষে সেরা।

না, সাকিবের বিকল্প হয়ে যাননি তাইজুল। সাকিব আল হাসানের না-থাকা মানের দলের মধ্যে বিরাট এক শূন্যতা। কিন্তু এবারের সিরিজে সেই শূন্যতা তাইজুল অর্ধেকটা এমনভাবে মিটিয়ে দেবেন, কে ভেবেছিল! বোলার সাকিবকে অন্তত মিস করছে না বাংলাদেশ। আর এর পুরো কৃতিত্ব তিন ইনিংসে ১৬ উইকেট নেওয়া তাইজুলের।

আজ বিদেশের মাটিতে নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করা ব্রেন্ডন টেলরও বেশ প্রশংসা করলেন এই বাঁ হাতি স্পিনারের, ‘তাইজুল তো সিরিয়াস ফর্মে আছে। সাকিবের না-থাকার ফলে যে শূন্যতা দেখা দিয়েছে, সেটা সে কীভাবেই না পূরণ করে দিল।’

তাইজুল নিজে কী বলেন? সাকিব নেই, বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে এটা কি বাড়তি প্রেরণা হয়ে এসেছিল? তাইজুল অবশ্য জানালেন, এত শত ভেবে তিনি মাঠে নামেন না কখনো, ‘বাড়তি তৃপ্তি না, তবে আমি অনেক বেশি বোলিং করার সুযোগ পাচ্ছি। সাকিব ভাই থাকলে হয়তো আমার ওপর এত দায়িত্ব পড়ত না। আমি উপভোগ করছি।’


টেস্ট ক্যারিয়ারে ৫ সেঞ্চুরির চারটিই বাংলাদেশের বিপক্ষে করা টেলর অবশ্য বললেন, শুধু তাইজুল নয়, পুরো বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণই এখন বিশ্বের অন্যতম সেরা। বিশেষ করে খেলাটা যদি হয় বাংলাদেশে। বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজের দীর্ঘ অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ তুলতে মোহাম্মদ রফিকের কথাও মনে পড়ে গেল টেলরের, ‘আমার কাছে সব সময়ই মনে হয়েছে স্পিনারদের কারণে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলাটা সব সময়ই কঠিন। এতগুলো বছর ধরে রাজ্জাক, সাকিব, এর আগে মোহাম্মদ রফিক; এরা সব সময়ই কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল। খেলাটা হারাবে-বুলাওয়েতে হোক, কিংবা এখানে।’

১০ বছর আগে নিজের শেষ টেস্ট খেলা রফিককে এখনো মনে রেখেছেন টেলর। বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে টেস্টে ১০০ উইকেটের মাইলফলক পেরিয়ে গিয়েছিলেন রফিক। সাকিব তাঁকে পেরিয়ে এখন ১৯৬-এ চলে গেছেন। এই সিরিজেই উইকেটসংখ্যায় বাংলাদেশের সেরা বোলারদের তালিকায় তিনে উঠে এলেন তাইজুল। ২১ টেস্টে ৮৫ উইকেট হয়ে গেছে তাঁর। বাংলাদেশের সেরা তিন বোলারই বাঁ হাতি স্পিনার! তাইজুল সেখানে নিজের নাম দেখে গর্ব করতেই পারেন।