ক্যাচ মিসের খেসারত ম্যাচ মিসে দেবে না তো বাংলাদেশ!

>
নাজমুল বলটি হাতে জমাতে পারেননি। ছবি: শামসুল হক
নাজমুল বলটি হাতে জমাতে পারেননি। ছবি: শামসুল হক

দুই ইনিংস মিলিয়ে এখনো পর্যন্ত ছয়টা ক্যাচ হাতছাড়া করেছেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। জিম্বাবুয়ের সামনে কঠিন লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। মিরপুর টেস্ট জয়ের বিকল্প নেই, এই সমীকরণ নিয়ে খেলতে নামা বাংলাদেশকে শেষ পর্যন্ত না আবার ক্যাচ হাতছাড়া করার মূল্য দিতে হয়!

বাংলাদেশ ইনিংসের শুরুতেই ধাক্কা, দৃশ্যটা নিয়মিতই দেখা যাচ্ছে। কখনো এই ধাক্কা মিডল অর্ডার কাটিয়ে উঠতে পারছে, কখনো পারছে না। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে দুই ইনিংসেই শুরুর ব্যাটিং বিপর্যয় সামলেছে মিডল অর্ডার। ব্যাটসম্যানরা তবুও তাঁদের কাজটা করেছেন। কিন্তু চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ফিল্ডারদের পিচ্ছিল হাত। যেভাবে ক্যাচ হাতছাড়া হচ্ছে, এটির খেসারত না আবার দিতে হয় বাংলাদেশকে। ক্রিকেটে আপ্তবাক্যই তো আছে: ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস!
বাংলাদেশের হাহাকার বাড়ানো সেই ছয়টি মুহূর্ত:

অভিষিক্ত খালেদের বলে ঢাকা টেস্টে তিনটি ক্যাচ পড়েছে। টেস্টে নিজের প্রথম উইকেটটি পেতে গিয়েও পাননি তিনি। ছবি: প্রথম আলো
অভিষিক্ত খালেদের বলে ঢাকা টেস্টে তিনটি ক্যাচ পড়েছে। টেস্টে নিজের প্রথম উইকেটটি পেতে গিয়েও পাননি তিনি। ছবি: প্রথম আলো

দ্বিতীয় ইনিংস
১.২ ওভার: চেরিকে তাইজুল
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই দারুণ সুযোগ। তাইজুলের বলটা চেরির ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে চলে যায় প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো মেহেদী হাসান মিরাজের কাছে। মিরাজ পারেননি বলটা লুফে নিতে। চারির রান তখন ১।
৮.৬ ওভার: মাসাকাদজাকে খালেদ
খালেদ আহমেদের ভাগ্যটাই খারাপ। অভিষেক টেস্টে ফিল্ডারদের সহায়তা ঠিকঠাক পেলেন না! পেলে হয়তো এতক্ষণে তাঁর নামের পাশে ৩ উইকেট থাকত। ব্যাক অব লেন্থের বলটা মাসাকাদজার ব্যাটের কানায় ছুঁয়ে বল চলে যায় গালিতে দাঁড়ানো মিরাজের কাছে। খালেদ উদ্‌যাপনের প্রস্তুতি প্রায় নিয়ে ফেলেছেন। তখনই হতাশ করলেন মিরাজ, ক্যাচটা হাতছাড়া না হলে মাসাকাদজা ফিরে যান ৫ রানে।
প্রথম ইনিংস
৩.৪ ওভার: মাসাকাদজাকে খালেদ
অভিষেক টেস্টে নিজের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট পেতে পারতেন খালেদ। তাঁর মাপা লেন্থের বলটা খোঁচা দিয়েছিলেন মাসাকাদজা। বলটার ঠিকানা ছিল প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো মিঠুন। কিন্তু হাত বাড়িয়ে দিলেন দ্বিতীয় স্লিপে দাঁড়ানো আরিফুল। বলটা কারও হাতে যায়নি, পড়ে গেল মাটিতে। মাসাকাদজার রান তখন ৭। অবশ্য যিনি বেশি দূর এগোতে পারেননি, আউট হয়েছেন ১৪ রানে।
২৯.৬ ওভার: চারিকে খালেদ
আবারও খালেদ, আবারও চারি! এবার ক্যাচটা হাতছাড়া করেছেন পয়েন্টে দাঁড়ানো তাইজুল। তৃতীয় দিন বিকেলে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন অবশ্য প্রশ্ন তুললেন, তাইজুলের পয়েন্টে ফিল্ডিং করা নিয়েই, 'বোলিং করে ক্লান্ত একজন বোলারকে কেন পয়েন্টে দাঁড় করানো হলো?' ২০ রানে জীবন পাওয়া চারি পরে ফিফটি করেই ফিরলেন।
৮৭.৬ ওভার: মুরকে মোস্তাফিজ
বাংলাদেশকে ভালোই ভুগিয়েছেন পিটার মুর। ব্রেন্ডন টেলরের সঙ্গে গড়েছেন দারুণ জুটি। মুরকে ৭৫ রানে ফেরানোর একটা সুযোগ তৈরি করলেন ফিজ। বাঁহাতি পেসারকে কাভারে ঠেলতে গিয়ে তুলে দিয়েছিলেন বদলি ফিল্ডার নাজমুল ইসলামের হাতে। এক হাতে একটু দেরিতে সাড়া দেওয়া নাজমুল সেটি হাতে জমালে পারলে তো!
৯০.৫ ওভার: টেলরকে তাইজুল
টেলর কাল শিকার হতে পারতেন নড়বড়ে নব্বইয়ের। ৯৪ রানে তাইজুলকে খোঁচা দিতে গিয়ে উইকেটকিপার মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। মুশফিক সেটি গ্লাভসবন্দী করতে ব্যর্থ। টেলর পরে সেঞ্চুরি করেই ফিরেছেন।
ক্যাচ হাতছাড়ার তালিকা এ পর্যন্ত শেষ হলেই ভালো। এটি যত দীর্ঘ হবে, বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা ততই ফিকে হবে।