এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন, বিশ্বকাপে ভরাডুবি

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচে ১০০ রান তোলার আগেই পটল তুলছে মেয়েদের ইনিংস! ছবি: আইসিসি)
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচে ১০০ রান তোলার আগেই পটল তুলছে মেয়েদের ইনিংস! ছবি: আইসিসি)
>এশিয়া কাপ জেতা বাংলাদেশের মেয়েরা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও চমক দেখাবে, সবার আশা ছিল এটাই। কিন্তু গ্রুপ পর্বের চার ম্যাচের চারটিতেই হেরে সবার তলানিতে থেকে বিশ্বকাপ অভিযান শেষ করল তারা। সবচেয়ে বেশি যেটা চোখে লেগেছে, এক ম্যাচেও বাংলাদেশের মেয়েরা ১০০ রান করতে পারেনি!

৪৬, ৭৬, ৭২, ৭৯। স্কোরগুলো এশিয়া কাপজয়ী কোনো দেশের বললে আপনি বিশ্বাস করবেন? অবিশ্বাস্য হলেও এটাই সত্যি। ভারতের মতো পরাক্রমশালী দলকে হারিয়ে বাংলাদেশের যে মেয়েরা কিছুদিন আগেই এশিয়া সেরার মুকুট পরেছিল, মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাদেরই হয়েছে এই বেহাল দশা। যে টুর্নামেন্টে ভারত, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মেয়েরা মুড়ি-মুড়কির মতো ১৬০-১৯০ ছাড়ানো স্কোর করছে, সে টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের মেয়েরাই খারাপ ব্যাটিংয়ের পসরা সাজিয়ে বসেছিল যেন!

বড় স্বপ্ন নিয়েই মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পা রেখেছিল বাংলাদেশ দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে টুর্নামেন্ট শুরুর বেশ কদিন আগেই দেশটিতে পা রাখে সালমা খাতুনের দল। প্রস্তুতি ম্যাচও খেলেছিল তারা। কিন্তু এসব প্রস্তুতি কাজে লাগল কই? ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সর্বনিম্ন স্কোর করে টুর্নামেন্ট শুরু করা সালমা খাতুনের দল কালকেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হেরেছে, ৭৯ রানে থেমে গিয়েছে তাদের ইনিংস।

আগে ব্যাট করা দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশের মেয়েদের জন্য ১১০ রানের লক্ষ্য বেঁধে দেয়। লক্ষ্যটা দেখে মনে হচ্ছিল, যাক, একেবারে খালি হাতে হয়তো ফিরতে হবে না। আর বাংলাদেশ যদি সে লক্ষ্য ১৩ ওভারের মধ্যে অতিক্রম করতে পারত, তাহলে পরের রাউন্ডে না গেলেও অন্তত গ্রুপে দক্ষিণ আফ্রিকার ওপরে থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করতে পারত। তা করতে পারলে পরের বিশ্বকাপে আর বাছাইপর্ব খেলার ঝক্কি নিতে হতো না।

কিন্তু ম্যাচ জেতা দূরে থাক, হাতে ৫ উইকেট রেখে ৮০–ও পেরোনো হলো না। ফলে টুর্নামেন্ট থেকেও বিদায় নিতে হলো গ্রুপে সবার তলানিতে থেকে। শ্রীলঙ্কা আর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঝের দুটো ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটাররা করতে পেরেছিলেন যথাক্রমে ৭২ ও ৭৬ রান। ম্যাচগুলোতে ব্যাটারদের স্কোরগুলো পাশাপাশি সাজালে ফোন নম্বরের ডিজিট ভেবে ভুল হতে পারে! গতকালও সে রীতির ব্যত্যয় ঘটেনি। শুধু রুমানা আর ফারজানাই কিছুক্ষণ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পেরেছিলেন। তাও তাঁদের রান তোলার গতি দেখে খেলাটা কি টেস্ট না টি-টোয়েন্টি, সন্দেহে পড়ে গিয়েছিলেন দর্শকেরা।

পাওয়ার প্লের প্রথম ৬ ওভারে ১৩ রান, অষ্টম ওভারে প্রথম বাউন্ডারি, ফারজানা-রুমানার ২৭ রানের জুটি গড়তে প্রায় আট ওভার খেলা, ছোট ছোট এই পরিসংখ্যানই বুঝিয়ে দিয়েছে কতটা বেহাল দশা ছিল মেয়েদের ব্যাটিংয়ের। শেষ পর্যন্ত এই বিশ্বকাপটা বাংলাদেশের জন্য দুর্দান্ত বোলিং আর জঘন্য ব্যাটিংয়ের একটা বিজ্ঞাপন হয়েই থাকল!