কুংফু-কারাতের 'প্রতিভা' দেখিয়ে বড় শাস্তি পেলেন ফুটবলাররা

ফেডারেশন কাপের ফাইনাল দুই দলের খেলোয়াড়দের মারামারির একটি পর্যায়। প্রথম আলো ফাইল ছবি
ফেডারেশন কাপের ফাইনাল দুই দলের খেলোয়াড়দের মারামারির একটি পর্যায়। প্রথম আলো ফাইল ছবি
>ফেডারেশন কাপের ফাইনালে মারামারির ঘটনায় বড় শাস্তি পেয়েছেন ফুটবলাররা।

ফেডারেশন কাপের ফাইনালে ঢাকা আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংসের মধ্যকার ম্যাচে মারামারির ঘটনায় খেলোয়াড়দের বড় শাস্তি দিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। বাফুফের শৃঙ্খলাবিষয়ক কমিটির সুপারিশে উভয় দলের দুজন করে চার ফুটবলারই এই শাস্তির মুখে পড়লেন। এ ছাড়া একই টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে রেফারির গায়ে হাত তোলার অভিযোগে শাস্তি পেয়েছে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘও। ম্যাচ রিপোর্ট, ভিডিও ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখে সিদ্ধান্ত নেয় শৃঙ্খলা কমিটি।

মারামারির ঘটনায় সবচেয়ে বড় শাস্তি পেয়েছেন বসুন্ধরার ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরা। এক লাখ টাকা জরিমানার সঙ্গে আট ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাঁকে। একই দলের অধিনায়ক তৌহিদুল আলম সবুজকে করা হয়েছে ছয় ম্যাচ নিষিদ্ধ, সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা। অন্যদিকে ‘ফ্লাইং কিক’ মারা আবাহনীর ডিফেন্ডার মামুন মিয়াকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার সঙ্গে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ছয় ম্যাচ। ২ ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে স্ট্রাইকার নাবীব নেওয়াজ জীবনকে। এখন গুরুত্বপূর্ণ এই খেলোয়াড়দের ছাড়াই স্বাধীনতা কাপে মাঠে নামতে হবে দুই ক্লাবকে।

এর আগে রেফারির গায়ে হাত তোলায় বড় শাস্তির মুখে ছিল আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। এই ক্লাবকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। দলের ম্যানেজারকেও করা হয়েছে আর্থিক জরিমানা। ক্লাবের দুই বল বয়কেও দেওয়া হয়েছে আর্থিক দণ্ড।

কী ঘটেছিল ফাইনালে?
ফ্লাইং কিক, চড়-থাপ্পড়—কী না ছিল এই ম্যাচে। দুই দলের চারজন খেলোয়াড়কে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দিতে বাধ্য হয়েছেন রেফারি। ৩-১ গোলে জিতে মৌসুমের প্রথম ট্রফিটা আবাহনীর হলেও এই জয়ের গৌরব অনেকটাই মিলিয়ে গিয়েছে মারামারির ঘটনায়!

দারুণ একটা সমাপ্তির দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল ম্যাচটি। ৮৮ মিনিটে আবাহনীর সানডেকে থামাতে গিয়ে ফাউল করেন বসুন্ধরার ডিফেন্ডার নাসিরউদ্দিন চৌধুরী। এখান থেকেই শুরু হয় উত্তেজনা। পরক্ষণেই বল দখলের লড়াইয়ে ছিলেন আবাহনীর স্ট্রাইকার নাবীব নেওয়াজ জীবন ও বসুন্ধরার ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরা। একপর্যায়ে সুশান্তকে ঘুষি মারেন জীবন। পাল্টা জীবনকে লাথি মারেন সুশান্ত। পাল্টা জবাব দিতে অনেক দূর থেকে দৌড়ে এসে সুশান্তকে ফ্লাইং কিক মারেন আবাহনীর ডিফেন্ডার মামুন মিয়া।

পরে মামুন মিয়ার ওপর চড়াও হন বসুন্ধরার তৌহিদুল আলম সবুজ। এই মারামারি দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে দুই দলের কর্মকর্তা ও সহকারীদের মধ্যে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ডাগআউট থেকেও কোচিং স্টাফদের নেমে পড়তে হয় মাঠে, যার রাশ টানতে হাস্যকরভাবে আবাহনীর ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপু নিজের দলের ডিফেন্ডার মামুন মিয়াকে চড় মেরে বসেন।

কেন শাস্তি পেয়েছে আরামবাগ?
ফেডারেশন কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনীর বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। ২-২ গোলে ড্র থাকা অবস্থায় ম্যাচটি শেষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। শেষের দিকে ফ্রিকিক থেকে আরামবাগের জালে বল জড়িয়ে দেন কেভিন বেলফোর্ট।

আরামবাগের অভিযোগ ছিল, অফসাইড থেকে বলে পা ছুঁয়েছেন বেলফোর্ট। ম্যাচ শেষে ডাগআউট থেকে দৌড়ে মাঠের মধ্যে প্রবেশ করে সহকারী রেফারি হারুন-উর-রশিদকে পেটাতে শুরু করেন আরামবাগের এক কর্মকর্তা! সঙ্গে সাপোর্ট স্টাফরা মিলে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন ম্যাচের এই সহকারী রেফারিকে।