ম্যাচের আগে টসও জিততে চায় বাংলাদেশ

কাল টসে জেতাটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। মিরপুরের উইকেটও থাকছে চিন্তার মধ্যে। ছবি: প্রথম আলো
কাল টসে জেতাটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। মিরপুরের উইকেটও থাকছে চিন্তার মধ্যে। ছবি: প্রথম আলো
>কাল শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। তিনটি ম্যাচই দিবারাত্রির। ফলে আলোচনায় গুরুত্ব পাচ্ছে শিশির এবং টস

আর কোনো খেলায় টস নিয়ে বোধ হয় এতটা আলোচনা হয় না। ফুটবলে তো টস কেন হয়, সেটাই দর্শকেরা বুঝে উঠতে পারে না অনেক সময়। আর ক্রিকেটে ম্যাচ শুরুর আগে, এমনকি আগের দিনও দীর্ঘ আলোচনা হয় টস নিয়ে। আজ মাশরাফির সংবাদ সম্মেলনে যেমনটা হলো। বিশেষত এমন এক সময়ে খেলা হচ্ছে, যখন শিশির বড় প্রভাবক হয়ে উঠবে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে টস জেতা।

যেহেতু টস জেতা ভাগ্যের ওপর, মাশরাফি তাই এমন একটা একাদশ চান, টসের সিদ্ধান্ত পক্ষে আসুক কিংবা বিপক্ষে, তা যেন বেশি প্রভাব ফেলতে না পারে। মাশরাফি বলছেন, ‘আমাদের দুজন স্পিনার আছে যারা ব্যাটিং করতে পারে। এটা অনেক বড় সুবিধা। এ ক্ষেত্রে সরাসরি কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। এই সময় আমরা গত বছর বিপিএল খেলেছি। রাতের ম্যাচে শিশির মিরপুরের খুব বেশি প্রভাব ফেলেনি। তবে কোনো কোনো ম্যাচে ফেলেছে। এখানে কোনো দিন বেশি শিশির পড়ে, আবার কোনো দিন কম। আমরা আগে যদি ব্যাটিং করি, আর বেশি শিশির পড়লে আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যাবে। আবার কম শিশির পড়লে তা সামলে নিতে পারব। আমি মনে করি আদর্শ হচ্ছে আগে ব্যাটিং করতে পারা। আজকের শিশির কেমন থাকে সেটা ফিল্ডিং অনুশীলনের সময় কিছুটা অনুমান করতে পারব। কাল কী অবস্থা হবে তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। সিদ্ধান্ত আসলে ইতিবাচক হওয়াটাই ভালো।’

মিরপুরের উইকেট কেমন হয়, এ নিয়ে বাংলাদেশের অধিনায়কেরাও অনেক সময় ধন্দে থাকেন। কারণ উইকেট রহস্যময় হয়ে ওঠে অনেক সময়। মাশরাফি একটা ব্যাপারে নিশ্চিত। প্রস্তুতি ম্যাচের মতো উইকেট মিরপুরে হবে না, ‘প্রস্তুতি ম্যাচের উইকেট যেমন ছিল, এখানের উইকেট নিশ্চিত ও রকম থাকার কথা না। কারণ এখানে তিন শ রানের ইনিংস, আবার সেটা তাড়া করার ম্যাচ খুব কমই হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রস্তুতি ম্যাচে যেটা আত্মবিশ্বাস দরকার ছিল, যা যা দরকার ছিল করতে পেরেছি। এখন আসল কাজ শুরু কাল থেকে।’

খেলাটা মিরপুরে বলেই ব্যাটিং-বোলিং দুই দিয়েই জেতার মানসিকতা থাকতে হবে বলে মনে করেন অধিনায়ক। তবে ব্যাটিংয়ে তাঁর চাওয়াটা যে বেশি, সেটিও বলে দিলেন খোলাখুলি, ‘আমাদের সব বিভাগ ভালো করলেই আমাদের সুযোগ বেশি থাকে। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে। এ উইকেট কেমন আচরণ করবে, সেটার ওপরে অনেক কিছু নির্ভর করবে। যদি ব্যাটিংয়ে সাহায্য করে, তাহলে বোলারদের চ্যালেঞ্জ থাকবে। আসলে উইকেট পূর্বানুমান করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু মিরপুরে দুটি ওয়ানডে খেলা হবে, উইকেট কেমন আচরণ করবে সেই প্রাথমিক বিচারটা খুব জরুরি।’

শিশিরের কারণেই বাংলাদেশ টেস্টের মতো ওয়ানডেতেও স্পিন নির্ভর একাদশ সাজাবে না। সেটিও মাশরাফি জানিয়ে দিলেন, ‘শিশির কতটা প্রভাব ফেলবে তার ওপর কিন্তু অনেক কিছু নির্ভর করে। আসলে দিন-রাতের খেলায় এই সময়টায় ডিউ এফেক্টটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। স্পিনাররা কতটুকু সাহায্য পাবে, এটা এর ওপর নির্ভর করে। তবে আমাদের পেস বোলাররাও ভালো সমর্থন দিচ্ছে। যদি ২০১৫ থেকে দেখেন, আমরা একটা ছন্দে খেলছি। তিনজন পেস বোলার সব সময় খেলাচ্ছি। কখনো চারজন পেসারও খেলানো হয়েছে। তাই টেস্ট ম্যাচের ওপর নির্ভর আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। তিনজন পেস বোলার খেলাব, তিনজন খেলাতে চাই। এটা নিশ্চিত।’

টসে জিতুক বা হারুক, যদি বাংলাদেশ আগে ব্যাটিং করে, কত রান নিরাপদ? মাশরাফি বলছেন, ‘স্পষ্টতই এই উইকেটে যেটা হয়, ২৬০ সাধারণত অনেক সময় নিরাপদ ধরা হয়। ডিউ পড়লে হয়তো সেটা আরও ২০-২৫ রান দরকার হয়। আর যদি শুরুতে ডিউ না থাকে ২৫০-২৪০ স্কোরেও আমরা ম্যাচ জিতেছি। আর টসের কথা যেটা বললাম, অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করছে। সিদ্ধান্ত তো একটা নিতেই হবে। কিন্তু ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হলে অবশ্যই ডিউটা কতটুকু কী পড়ছে, তার ওপরই নিতে হবে। দিবারাত্রির ম্যাচে সব সময় এই ঝুঁকির অংশটা থাকেই। বিশেষ করে এই সময়টাতে, বাংলাদেশে এই সময়ে ঝুঁকিটা থাকেই যে, হয়তোবা আপনাকে আন্দাজের ওপরই নিতে হবে, ডিউ কতটুকু পড়তে পারে। যদি আগে ব্যাটিং করেন, আপনাকে কামনা করতে হবে আজকে যেন কম ডিউ পড়ে। আর টসে হেরে গিয়ে যদি আগে বোলিং করেন, সে ক্ষেত্রে আপনাকে কামনা করতে হবে পরে যেন একটু বেশি ডিউ পড়ে। আসলে এটা বেশ কঠিন। কিন্তু আপনাকে একটা সিদ্ধান্ত তো নিতেই হবে, ইতিবাচকভাবে।’