শেষ ওভারে কেন এই ঝুঁকিপূর্ণ বাজি?

শেষ ওভারে মাহমুদউল্লাহকে বল দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ছবি: প্রথম আলো
শেষ ওভারে মাহমুদউল্লাহকে বল দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ছবি: প্রথম আলো

অধিনায়কের কিছু কিছু সিদ্ধান্ত ক্যাসিনোর খেলার মতো। লেগে গেলেই জ্যাকপট। না হলে পুরোই গেল! অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফি বিন মুর্তজা এমন জুয়া অনেকবারই খেলেছেন। তাতে জ্যাকপটও মিলেছে বিস্তর। প্রশংসিত হয়েছে। আজ শেষ ওভারটা মাহমুদউল্লাহকে দিয়ে করানোটা কাজে লেগে গেলেই সবাই বলত ‘অবিশ্বাস্য, বুদ্ধিদীপ্ত!’ এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নও হতো। কিন্তু কাজে যেহেতু লাগেনি, প্রশ্নটা নেতিবাচক স্বরেই উঠল।

এর আগেও মাশরাফি একদম ডেথ ওভার পার্ট টাইমার দিয়ে করিয়েছেন। সর্বশেষ উদাহরণটা টাটকাই। এশিয়া কাপের ফাইনালে শেষ ওভার করেছেন মাহমুদউল্লাহ। ৬ বলে ৬ আর ১ বলে ১ রানের সমীকরণ মিলিয়ে দিয়েছিল ভারত। আজও ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ ওভারে ৬ রান দরকার ছিল। মাহমুদউল্লাহর চার বলেই সিরিজে সমতা ফেরাল তারা। এর কয়েক মাস আগে নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে শেষ ওভারটা করেছিলেন সৌম্য সরকার। শেষ বলে ৫ রান লাগত, সৌম্যকে ছক্কা মেরেছিলেন দিনেশ কার্তিক। টি-টোয়েন্টি ওই টুর্নামেন্টে অবশ্য অধিনায়ক ছিলেন সাকিব আল হাসান।

মাশরাফি অবশ্য এটিকে ফাটকা খেলা বলে মানতে রাজি হলেন না। তাঁর ব্যাখ্যা, হিসেব করেই প্রতিবার নেওয়া হয়েছে এমন সিদ্ধান্ত, ‘এশিয়া কাপে আমাদের বোলার ছিল না। মিরাজের ক্র্যাম্প (পেশিতে টান ধরা) করেছিল। আর নিহাদাস ট্রফিতে আমি খেলিনি। আজকে যেটা হয়েছে, রুবেল আগের ওভারে ১০ রান দিয়েছে। যেটা হয়, একজন থিতু ব্যাটসম্যান আছে, এক শ করে বসে আছে। সে থাকলেও স্পিনারের বলে শট খেলে রান নিতে হয়। তখন একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়। আর পেস বলে মুস্তাফিজের ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে, ওরা শুধু ফাইন লেগ দিয়ে ওর পেসটা ব্যবহার করেছে। এভাবে একটা চার হয়ে গেলে ম্যাচটা বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। স্পিনার থাকলে শট খেলতে হয়। সেই ভাবনা থেকেই একটা সুযোগ নিয়ে দেখা। আর রিয়াদ এই রকম পরিস্থিতিতে আগেও ভালো বোলিং করেছে।’

এখন এসব বলেও আর লাভ নেই। সিরিজে সমতা ফিরেই এসেছে। শেষ ম্যাচটা তাই হয়ে উঠল অলিখিত ফাইনাল। মাশরাফি আশাবাদী, শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ আবার জয়ের ধারায় ফিরবে, ‘অবশ্যই আমি মনে করি, সেই দাপট নিয়েই খেলা উচিত। আজকের ম্যাচটা অবশ্যই হতাশাজনক, আমরা হেরেছি। একই সঙ্গে কিছু ইতিবাচক ব্যাপার ছিল, যেখানে আমরা একটু ভালো করলে ম্যাচটা বের করে নিতে পারতাম। সেই জায়গাগুলো ঠিক করলে অবশ্যই পরের ম্যাচে আমাদের জেতা সম্ভব। এখানে যা খেলেছি তার চেয়ে অনেক ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। সিলেটে যতটুকু খেলেছি সেখানে উইকেট অনেক ভালো হয়। আমাদের ব্যাটিং, বোলিংয়ে আরও উন্নতি করতে হবে।’