পিচ্ছিল হাত আর নড়বড়ে মন

ক্যাচ হাতছাড়া করে চোট নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন ইমরুল কায়েস। ছবি: প্রথম আলো
ক্যাচ হাতছাড়া করে চোট নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন ইমরুল কায়েস। ছবি: প্রথম আলো

ক্যাচ ফেলে ম্যাচ জেতা যায় না। কথাটা হয়তো বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত সত্য নয়। কিন্তু এ ধরনের আপ্তবাক্য তো আর এক দিনে জন্ম নেয় না। ক্রিকেটীয় প্রবাদে তাই ক্যাচ ফেলা আর ম্যাচ ফেলে দেওয়ার কম প্রবচন নেই। বাংলাদেশ আরও একবার এই সত্যিটা ভালো করে বুঝল।

বাংলাদেশের ফিল্ডিংটা বেশ কিছুদিন ধরেই যাচ্ছেতাই হচ্ছে। ক্যাচ ফেলা নিয়মিত এক রোগে পরিণত হয়েছে। ম্যাচগুলো বাংলাদেশ জিতে গেছে বলে সেভাবে চোখে পড়েনি। জিম্বাবুয়ে সিরিজেও উইকেটের পেছনে কি আউট ফিল্ডে, ক্যাচ কম পড়েনি।

মাশরাফি পরাজয়ের কারণ হিসেবে দুটি জায়গা চিহ্নিত করলেন। ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ১৫-২০ রান কম তুলেছে। আর ফিল্ডিংয়ে ফেলেছে তিনটি সহজ ক্যাচ। এর মধ্যে বদলি ফিল্ডার নাজমুল ইসলাম কয়েক বলের ব্যবধানে ম্যাচের খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দুবার ক্যাচ ফেলেছেন। সহজ ক্যাচ ফেলেছেন ইমরুল কায়েসও।

মাশরাফি বলেছেন, ‘মনে হয় ১৫-২০টা রান আরও বেশি হওয়া উচিত ছিল। তামিম-সাকিব আরও কিছুক্ষণ ব্যাটিং করলে রান তিন শর কাছে যাওয়ার সুযোগ ছিল। যখন রিয়াদ-সাকিব ব্যাটিং করছিল, ৪১ ওভার হয়ে গিয়েছিল। আরও ৬-৭ ওভার ব্যাটিং করতে পারলে রান ২৭০-৮০ হয়ে যেত। তখন বোলারদের জন্য সুবিধা হতো। ফিল্ডিংয়ে অবশ্যই ক্যাচ মিসের কারণে ভুগতে হয়েছে। কিমো পলের ক্যাচ দুটো পরপর মিস হয়েছে। না হলে হয়তো কেমার রোচ উইকেটে আসত। তখন ওদের রানের চাকা সচল রাখা কঠিন হয়ে যেত।’

নাজমুল দাবি করেছেন, ফ্লাড লাইডের কারণে দুবারই ক্যাচ ধরতে সমস্যা হয়েছে তাঁর। মাশরাফি মনে করেন, পেশাদার ক্রিকেটে এমন অজুহাত দেওয়ার সুযোগ নেই, ‘আজকে দুজন ফিল্ডার চোট নিয়ে বাইরে ছিল। ইমরুল বাইরে যাওয়ার পর আমাদের সেরা ফিল্ডার আরিফুলকে মাঠে নামানো হয়। তারপর ওদের মধ্যে দ্রুতগতির এবং সেরা ফিল্ডার হচ্ছে অপু (নাজমুল)। ওই নেমেছে। সমস্যা হচ্ছিল ওই পাশ থেকে ফ্লাডলাইটে বল দেখতে সমস্যা হচ্ছিল। যদিও এ পর্যায়ের ক্রিকেটে অজুহাত দেওয়ার সুযোগ নেই।’

কিন্তু ফিল্ডিংয়ের এই রোগ তো নতুন নয়। ফিল্ডিং কোচ রেখেই–বা কাজ হচ্ছে কী? মাশরাফি মনে করেন, শুধু অনুশীলন করে লাভ নেই, মানসিকভাবেও দৃঢ়তা দরকার, ‘যদি অনুশীলন দেখেন, তাহলে বুঝবেন অনুশীলন কোন পর্যায়ের হচ্ছে। কোনো বিভাগে কোনো দিন অনুশীলন না হলেও ফিল্ডিং অনুশীলন আমাদের নিয়মিত হয়। দিন শেষে মাঠে আত্মবিশ্বাসের ব্যাপার থাকে। একটা ক্যাচ ড্রপ হলে মনের ভেতর অস্বস্তি থাকলে সহজ ক্যাচ অনেক সময় মিস হয়ে যায়। এটা আসলে পুরোপুরি মানসিক ব্যাপার। পরপর দুই ম্যাচে আমরা অনেক ক্যাচ মিস করেছি। কিন্তু তারপরও এখান থেকে ইতিবাচক জিনিসগুলো নিয়ে আমরা পরবর্তী ম্যাচে নামতে চাই।’