৬/৩ নিয়েই বেধেছিল ঝামেলা

নো বলের দাবিতে ড্রেসিংরুম থেকে নেমে আসেন কার্লোস ব্রাফেট। ছবি: প্রথম আলো
নো বলের দাবিতে ড্রেসিংরুম থেকে নেমে আসেন কার্লোস ব্রাফেট। ছবি: প্রথম আলো

কালোর্স ব্রাফেটকে ভীষণ ক্ষিপ্ত মনে হলো। তামিম ইকবালও খেপে গিয়ে কী যেন বলছেন। প্রেসবক্সের কাচ ভেদ করে কিছুটা উত্তাপও যেন এসে লাগল। মৃদু গুঞ্জরণ: কী হলো কী হলো!

প্রথম দফায় মনে হয়েছিল তামিম ইকবালের সঙ্গে হয়তো কিছু একটা ঝামেলা হয়েছে কার্লোস ব্রাফেটের। হালকা শীতের বিকেলে উলেন-উত্তাপ, মন্দ কী! ঘটনা ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসের ২৬তম ওভারে। ক্যারিবীয় অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েল মিরাজের বলে আউট। উইকেটের পেছনে পরিষ্কার ক্যাচ। ব্যাটে লেগেছে কি লাগেনি, সেটা সবচেয়ে ভালো বোঝার কথা যাঁর, সেই রোভম্যান পাওয়েলই কী বুঝে রিভিউটা নিলেন! প্রেসবক্সে যখন এই আলোচনা, তখনই ড্রেসিংরুম থেকে ব্রাফেটের সঙ্গী হয়ে আগমন ওই একপশলা নাটকের।

পাওয়েল হয়তো রিভিউ নিয়েছিলেন নো বল পাবেন, এই আশায়। না, পা দাগের অনেক ভেতরেই ছিল মিরাজের। সেই আশায় গুড়েবালি। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তখন খেপে গিয়েছিল অন্য এক নিয়মে নো বল হয় বলে। তখন বাংলাদেশের ফিল্ডিং পজিশন ছিল ৬/৩। লেগে ৬ জন, অফ সাইডে ৩। বোলার আর উইকেটরক্ষক বাদে। কিন্তু নিয়ম হচ্ছে, লেগ সাইডে ৫ জনের বেশি ফিল্ডার রাখা যাবে না।

ড্রেসিংরুম থেকে ব্রাফেটকে এই বার্তা দিয়েই পাঠিয়েছিলেন কোচ। ব্রাফেটের বাক্যবিনিময় আসলে মূলত আম্পায়ারদের সঙ্গেই। কিন্তু আম্পায়াররা শেষ পর্যন্ত আউটের সিদ্ধান্তেই অটল থাকেন। রোভম্যান পাওয়েল পরে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি ব্যাখ্যা করলেন এভাবে, ‘ওই সময় বাংলাদেশের ৬ জন ফিল্ডার লেগ সাইডে ছিল। সাধারণত লেগে ৬ জন থাকলে নো–বল হয়। এটা সত্যি হতাশার লেগে ৬ জন ফিল্ডার রেখে ওরা ৬-৭টা বল করে গেল, তবু আম্পায়াররা বিষয়টি ধরতে পারেননি। অবশ্য মানুষ মাত্রই ভুল করে। এটা আপনাকে মেনে নিতে হবে।’

ওই উইকেট পড়ে যাওয়াতেই ম্যাচটা বাংলাদেশের দিকে প্রায় হেলে যায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ তখন ৯৯ রানে ৫ ব্যাটসম্যানকে খুইয়েছে। পঞ্চম ব্যাটসম্যান পাওয়েল নিজে ছিলেন। তখনই ওই ঘটনা। হতাশাটা এখনো বুকে বিঁধে আছে ক্যারিবীয়দের, ‘অবশ্যই আপনি এভাবে উইকেট হারাতে চাইবেন না। হয়তো এ কারণেই কার্লোস ড্রেসিংরুম থেকে নেমে এসেছিল মাঠে। সত্যি বলতে কী, আমি ব্যাটিং করার সময় বিষয়টি খেয়াল করিনি, ওদিকে থাকা শাই হোপও না। আমাদের পুরো মনোযোগ ছিল ইনিংস মেরামতের দিকে, জুটি গড়ার দিকে। তখনই এমনটা ঘটল।’

ওই সময় লেগে ৬ ফিল্ডার ছিল, এই ভুলটা অকপটে স্বীকার করলেন পাওয়েলকে তুলে নিয়ে চতুর্থ উইকেট ও ১০ ওভারের কোটা পূর্ণ করা মিরাজ, ‘ক্রিকেট খেলায় ভুল হয়ই। অফে তিনটা, লেগে ছয়টা ফিল্ডার থাকলে নো হয়। আমরা কেউই লক্ষ্য করিনি। ও এসে আম্পায়ারকে বলছিল, আম্পায়ারও খেয়াল করেনি, আমরাও কেউ খেয়াল করিনি। ও এসে যখন আম্পায়ারকে বলেছিল তখনো প্রায় সবকিছু হয়েই গেছে। ও এসে আম্পায়ারকে বলছিল ব্যাপারটা খতিয়ে দেখতে।’

মাশরাফিও মানছেন এটা ভুল। তবে অনিচ্ছাকৃত ভুল, ‘আমরাও নিয়মটা জানি। ৬/৩ হলে নো বল হয়। ওই সময় যেটা হয়েছিল, আউট করার জন্য মিরাজ যেভাবে বোলিং করছিল, ফিল্ডারদের আরও কাছাকাছি আনার জন্যই কীভাবে যেন লেগে ৬ ফিল্ডার হয়ে যায়। আম্পায়ার যেহেতু আগেই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, কাজেই সেটাই থেকে গেছে।’