ব্যাটসম্যানরা এগোতে দিচ্ছেন না অস্ট্রেলিয়াকে

আরেকটি উইকেটের পতন। ভারতের অধিনায়ক কোহলির উল্লাস। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা আজও প্রাধান্য বিস্তার করতে পারেননি। ছবি: এএফপি
আরেকটি উইকেটের পতন। ভারতের অধিনায়ক কোহলির উল্লাস। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা আজও প্রাধান্য বিস্তার করতে পারেননি। ছবি: এএফপি
>পার্থ টেস্টে তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ১৩২ রান তুলেছে অস্ট্রেলিয়া। তবে আঙুলে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়েছেন অ্যারন ফিঞ্চ। কাল তিনি ব্যাট করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। এরই মধ্যে ১৭৫ রানের লিড পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া

প্রথম ইনিংসে ৪৩ রানের লিড পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে টপ অর্ডাররা এই লিডকে শক্ত ভিত্তি পাইয়ে দেবেন, এমনটাই প্রত্যাশা ছিল অস্ট্রেলিয়ান সমর্থকদের। তৃতীয় দিনের খেলা শেষে স্কোরবোর্ড দেখলে মনে হবে, প্রত্যাশা তো মিটেছে। ৪ উইকেটে ১৩২ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে অস্ট্রেলিয়া। হাতে ৬ উইকেট রেখে লিড এরই মধ্যে ১৭৫। কিন্তু উইকেট পড়েছে আসলে ৫টি। আঙুলে চোট পেয়ে ‘রিটায়ার্ড হার্ট’ হয়ে মাঠ ছেড়েছেন অ্যারন ফিঞ্চ। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ব্যাট করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তবে তৃতীয় দিনের খেলা যাঁরা দেখেছেন তাঁদের মনে হতে পারে, অস্ট্রেলিয়া আরও সুবিধাজনক অবস্থানে থাকতে পারত। ব্যাটসম্যানরা তা হতে দেননি!

অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে ৩২৬ রান তোলার পর দলটির বোলাররা নিজেদের কাজটি করেছেন। ২৮৩ রানেই গুটিয়ে দিয়েছেন ভারতকে। পার্থের পেসবান্ধব উইকেটে ৫ উইকেট নিয়েছেন স্পিনার নাথান লায়ন। যেখানে অস্ট্রেলিয়ার পেসারদের রাজত্ব করার কথা সেখানে স্পিনারের ৫ উইকেট নেওয়াই বলে দেয় বোলারদের নিবেদনে কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের মনঃসংযোগে যে ঘাটতি ছিল তা বোঝা গেল আউটের ধরন দেখে।

দলীয় ৫৯ রানে জসপ্রীত বুমরার বল ‘জাজ’ করতে নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দেন মার্কাস হ্যারিস। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে এসে বল ভেতরে ঢোকানোর চেষ্টা করছিলেন ভারতের এই পেসার। এমন একটি ডেলিভারি হ্যারিস কী ভেবে ছেড়ে দিলেন তা গবেষণার বিষয়। হয়তো ভেবেছিলেন বল বেরিয়ে যাবে। এতেই চরম সর্বনাশ। ঠিক এর দুই ওভার পর মোহাম্মদ শামির বলে অযথাই পুল করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন শন মার্শ। মাত্র ৫ রানের ব্যবধানে আরও একটি উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া তখন বিপদে। তার আগে শামির বলে ফিঞ্চও আঙুলে চোট পেয়ে হাসপাতালে গেছেন। ৬৪ রান তুলতে ২ উইকেট নয় অস্ট্রেলিয়া তখন আসলে ৩ উইকেট হারিয়েছে।

চতুর্থ উইকেটে হ্যান্ডসকম্ব-উসমান খাজার জুটি টিকেছে মাত্র ২১ রান তোলা পর্যন্ত। ইশান্ত শর্মার বলে বোল্ড হন পিটার হ্যান্ডসকম্ব। এরপর ট্রাভিস হেড-খাজার জুটি ৩৫ রান তুলে বিপর্যয় মেরামতের চেষ্টা করেন। এই চেষ্টা আরও বড় ভিত্তি পেত যদি হেড একটু মাথা খাটাতেন। শামিকে বেশ কিছুক্ষণ পর আক্রমণে এনেছিলেন বিরাট কোহলি। ৪১তম ওভারে তাঁর প্রথম বলেই ‘আত্মহত্যা’ করেছেন হেড। থার্ড ম্যানে ফিল্ডার রেখে ফাঁদ পেতেছিলেন কোহলি। হেড এই টেস্টে সেই ফাঁদে পা দিলেন দ্বিতীয়বারের মতো। শামির বলে অযথাই কাট করতে গিয়ে শর্মার তালুবন্দী হন হেড। অধিনায়ক টিম পেইন (৮*) আর খাজা (৪১*) মিলে দিনের বাকি সময় কাটিয়ে দেন। কাল এই জুটির ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে।

ভারতের চেষ্টা থাকবে যত দ্রুত সম্ভব অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংস গুটিয়ে দেওয়া। ২৫০ রানের মধ্যে লক্ষ্য পেলে কাজটা অন্তত খুব কঠিন হবে না তাঁদের জন্য। কিন্তু পেইন ও খাজা কাল দাঁড়িয়ে গেলে লক্ষ্যটা তিন শ-র ওপাশে যাওয়াই স্বাভাবিক। অস্ট্রেলিয়াকে এখন অবশ্য এই সমীকরণ কষতে হতো না যদি আজ এতগুলো উইকেট না পড়ত। কিন্তু ব্যাটসম্যানরা তা হতে দিলেন কোথায়!