বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

>
বাংলাদেশের বোলারদের নাস্তানাবুদ করেছেন উন্ডিজ ব্যাটসম্যানরা। ছবি: এএফপি
বাংলাদেশের বোলারদের নাস্তানাবুদ করেছেন উন্ডিজ ব্যাটসম্যানরা। ছবি: এএফপি

সিলেটে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৫৫ বল হাতে রেখে অনায়াস জয় পেয়ে সিরিজে এগিয়ে গেছে ১-০ ব্যবধানে

পুরো ২০ ওভার খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। সংগ্রহটাও সাদামাটা, মাত্র—১২৯। দল ফিল্ডিংয়ে নামার আগেই হার দেখেছেন অনেকেই। কিন্তু এমন পিটুনির কথা ঘুণাক্ষরেও কি কেউ ভেবেছে!

ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিশ্চিতভাবেই ভেবে রেখেছিল। টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে হয়নি, আজ বাগে পাওয়া গেছে! ক্রিকেটের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত সংস্করণে তাঁদের মতো ভয়ংকর দল আর নেই। ১২৯ রান তাড়া করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এই ভয়-ই ধরিয়ে দিয়েছিল—ম্যাচটা ১০ ওভারের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে না তো! নাহ, শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের বোলাররা তা হতে দেয়নি, আর বোলিংয়ে সাকিব-মিরাজদের এটুকুই যা প্রাপ্তি! আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের? গত জুলাইয়ে ফ্লোরিডায় এই বাংলাদেশের বিপক্ষেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরেছিল তাঁরা। সেই হারের শোধ নেওয়ার লক্ষ্যে এই জয় নিশ্চিতভাবেই ‘ফার্স্ট ব্লাড’।

৫৫ বল বা ৯.১ ওভার হাতে রেখে ৮ উইকেটে জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বলা ভালো স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে। স্কোরকার্ড অবশ্য ক্যারিবীয় ‘সাইক্লোন’-এর রূপটা পুরোপুরি বোঝাতে পারবে না। তবে চেষ্টা করা যেতে পারে। প্রথম ৬ ওভারে তাঁরা রান তুলেছে ১ উইকেটে ৯১! টি-টোয়েন্টিতে পাওয়ার-প্লে’তে এটা সর্বোচ্চ রান তোলার বিশ্ব রেকর্ড। আর মাত্র দুটি দল পাওয়ার প্লেতে এত রান তুলতে পেরেছে। রাগটা মূলত ঝেড়েছেন শাই হোপ। মাত্র ১৬ বলে তুলেছেন ফিফটি। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটাই দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড। চিন্তাটা বাড়িয়ে বিশ্বে টানলেও তৃতীয় দ্রুততম।

ঝড় উঠেছে দ্বিতীয় ওভার থেকেই। মেহেদী হাসান মিরাজের করা ওই ওভারে উঠেছে ২৩ রান। হোপ একাই মেরেছেন ৩ ছক্কা। পরের ওভারে আবু হায়দারও পড়েছেন হোপের রুদ্ররূপের সামনে। এই ওভারে এসেছ ১৫, এর মধ্যে হোপ একাই এক ছক্কা ও এক চারে ১০। পরের ওভারে হোপের মতো বলের ছাল-চামড়া তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন এভিন লুইস। মোহাম্মদ সাইফউদ্দীনের প্রথম বলেই ছক্কা তুলে নেওয়ার পর পরের বলে অবশ্য ফিরে যেতে হয় তাঁকে। কিন্তু রান আটকানো যায়নি। ওই ওভারেও এসেছে ১৩।

বেধড়ক পিটুনিতে দিশেহারা অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এরপরও চেষ্টা করেছিলেন স্রোতের মতো বেরিয়ে যাওয়া রান আটকাতে। পঞ্চম ওভারে তাই আক্রমণে নিয়ে এসেছিলেন পেসার মোস্তাফিজুর রহমানকে। কিন্তু কিসের কী! নিকোলাস পুরান আর হোপ মিলে ওই ওভারেও তুলেছেন ১৫ রান। মিরাজ এসে এর পরের ওভারে ১৮ রান দিয়ে পূরণ করেছেন বিশ্ব রেকর্ডের ষোলোকলা।

অষ্টম ওভারে মাহমুদউল্লাহর বলে হোপ (৫৫) যখন আউট হলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ততক্ষণে ২ উইকেটে ৯৯। অর্থাৎ বাকি ৭৪ বলে দরকার মাত্র ৩২। এই পরিস্থিতিতে ম্যাচটা গড়িয়েছে আর তিন ওভার এবং কেমো পল একাই করেছেন ২৮ রান। ক্যারিবীয়দের এই ঝড়ে ‘বিশেষজ্ঞ’ বোলারদের যখন তথৈবচ অবস্থা তখন ‘পার্ট টাইম’ বোলার হয়ে যাওয়া মাহমুদউল্লাহ মিছে সান্ত্বনা খুঁজতে পারেন তাঁর বোলিং ফিগার দেখে ২-০-১৩-১।