বসুন্ধরার নায়ক জিকো

ফাইনালে নেওয়া নায়ককে ঘিরেই চলছে উল্লাস। সৌজন্য ছবি
ফাইনালে নেওয়া নায়ককে ঘিরেই চলছে উল্লাস। সৌজন্য ছবি

ম্যাচের নায়ক হবেন কে ?

চোখ ছিল বসুন্ধরার বিশ্বকাপ খেলা তারকা দানিয়েল কলিন্দ্রেস ও আবাহনীর নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার সানডে চিজোবার দিকে। চোখ ছিল বসুন্ধরার ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের দিকেও। গোল করে ম্যাচ জেতানোর সামর্থ্য তো রাখেন তাঁরাই । কিন্তু গোল ঠেকিয়েও নায়ক হওয়া যায়। আর গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর দুর্দান্ত নৈপুণ্যেই আবাহনীকে টাইব্রেকারে ৭-৬ গোলে হারিয়ে স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে বসুন্ধরা। নির্ধারিত সময়ে ম্যাচটি ছিল ১-১ গোলের সমতায়।

টাইব্রেকারে প্রথম পাঁচ শটে ৪-৪ গোলে সমতা । ম্যাচের ভাগ্য গড়ায় সাডেন ডেথে। সেখানে তৃতীয় শটে নিষ্পত্তি হয়েছে ম্যাচের ভাগ্যের। আবাহনীর মিডফিল্ডার ইমতিয়াজ সুলতান জিতুর শট ঠেকিয়ে দেন জিকো। বসুন্ধরার হয়ে শেষ শটটি নিয়েছে এই গোলরক্ষকই এবং স্পট কিক থেকে গোল করে লাল জার্সিধারীদের আনন্দে ভাসিয়েছেন জিকো। নির্ধারিত সময়েও দুর্দান্ত খেলেছেন বসুন্ধরার এই গোলরক্ষক। তাঁর দুর্দান্ত সব সেভের কল্যাণেই ম্যাচটি টাইব্রেকারে গড়িয়েছিল।

আবাহনী-বসুন্ধরা ম্যাচ বলেই ফিরে আসছিল ২৩ নভেম্বরের ফেডারেশন কাপের ফাইনাল। সেদিনের বারুদে ম্যাচে দুর্দান্ত ফুটবলের পর শেষ দিকে দুই দলের খেলোয়াড়েরা মেতে উঠেছিল কুংফু-কারাতেতে। মাঝে কেটে গেছে ২৬ দিন। সেই স্মৃতি চাপা দিয়ে এসে আজ শুধুই দুর্দান্ত ফুটবলের পসরা। মাঠে উপস্থিত দর্শকেরা পেয়েছেন উপভোগ্য ফুটবলের ছোঁয়া।

আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা সাজানো ম্যাচে গোলের ছড়াছড়ি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুই দলের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল গোলপোস্ট। আবাহনীর সামনে পোস্ট বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল দুইবার আর বসুন্ধরার একবার। ১৪ মিনিটে কলিন্দ্রেসের ক্রসে নাসিরউদ্দিরের হেড ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বলে নাইম উদ্দিনের শটও ক্রসবার উঁচিয়ে বাইরে। গোল পেতে পারত আবাহনীও। ২৪ মিনিটে আবাহনীর দক্ষিণ কোরিয়ান মিডফিল্ডার মিনহোক কোর দুর্দান্ত ভলি সেভ করেছেন জিকো। প্রথমার্ধে নোট বুকে তোলার মতো এই তিনটি মুভই।

দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের রং যায় বদলে। ৬৯ মিনিটে কলিন্দ্রেসের দুর্দান্ত একটি মুভেই খুলে যায় আবাহনীর রক্ষণভাগের দরজা। বক্সের মধ্যে বল নিয়ে দৌড়ানোর সময় সুফিলের উদ্দেশে ব্যাকহিল করেন কলিন্দ্রেস। সুফিলের পাস থেকে সরাসরি জালে জড়িয়ে দিয়েছেন বদলি মতিন মিয়া, ১-০। গোল হজম করে তেতে ওঠে আকাশি-নীলরা। ৮২ মিনিটে মাশি সাইগানির ফ্রি কিকে হেডে গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান হাইতিয়ান বেলফোর্ট, ১-১। ম্যাচটি ৯০ মিনিটেই শেষ হতো, যদি শেষ বাঁশি বাজার আগে আবাহনীর মিডফিল্ডার সোহেল রানার দূরপাল্লার ভলি ক্রসবারের একটু নিচে লাগত।

ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। আবাহনীর পাসিং ফুটবলের সামনে অতিরিক্ত সময়টা শুধু দর্শকের মতো খেলাই দেখেছে বসুন্ধরা। ম্যাচটা টাইব্রেকারে যাওয়াতেই জয়ের পাল্লা ভারী হয় বসুন্ধরার দিকে। গোলরক্ষক জিকোর নৈপুণ্যেই রহমতগঞ্জকে টাইব্রেকারে হারিয়ে সেমিফাইনালে এসেছিল বসুন্ধরা।

২৬ ডিসেম্বর টুর্নামেন্টের ফাইনালে বসুন্ধরার প্রতিপক্ষ শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র।