অদ্ভুত টাইব্রেকারে সবাইকে চমক কাঞ্চনের

>

সাডেন ডেথের প্রথম অর্থাৎ পেনাল্টি শুট আউটের ৬ নম্বর শটে রোকুনজ্জামান কাঞ্চন যদি গোল করতে পারেন, তাহলে সমতা, না হলে বিদায়। এমন উত্তেজনার মুহূর্তে মাথা ঠান্ডা রেখে দর্শকদের রীতিমতো রোমাঞ্চ উপহার দিলেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক এই স্ট্রাইকার।

বুড়ো হাড়ে ভেলকি দেখালেন রোকনুজ্জামান কাঞ্চন। ছবি: প্রথম আলো
বুড়ো হাড়ে ভেলকি দেখালেন রোকনুজ্জামান কাঞ্চন। ছবি: প্রথম আলো

‘কী করতে যাচ্ছেন রোকনুজ্জামান কাঞ্চন ?’, প্রেসবক্সে সবার মুখেই কৌতূহলী এক প্রশ্ন।
গতকাল সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অদ্ভুত দৃশ্য দেখল সবাই। স্বাধীনতা কাপে আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংসের দ্বিতীয় সেমিফাইনাল গড়িয়েছিল টাইব্রেকারে। শুট আউটে শট নিতে গিয়ে রোকনুজ্জামান কাঞ্চন যখন গোলপোস্টকে পেছনে রেখে দাঁড়ালেন, তখনই সবাই বিস্মিত। রসিকতা করে কেউ কেউ বলছিলেন, কাঞ্চন গোলপোস্ট কোথায় সেটি ভুলে গেলেন নাকি! উল্টো দৌড় দিতে গিয়েই থেমে আবার গোলপোস্টের দিকে ছুটে শট নিলেন। গোল!!! কিন্তু এমন অদ্ভুতভাবে কেউ টাইব্রেকারে এর আগে শট নিয়েছিলেন কিনা, সেটি নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাবে।
টাইব্রেকারে প্রথম পাঁচ শট শেষে ছিল ৪-৪ গোলে সমতা। সাডেন ডেথের প্রথম অর্থাৎ ৬ নম্বর শটে আবাহনীর ডিফেন্ডার রায়হান হাসান গোল করতে পারেননি। কাঞ্চন গোল করতে পারলে সমতা , অন্যথায় স্বাধীনতা কাপ থেকে বিদায়। এমন উত্তেজনার মুহূর্তে মাথা ঠান্ডা রেখে দর্শকদের উপহার দিলেন রোমাঞ্চ। শুট আউট শেষ পর্যন্ত অষ্টম শটে গড়ায় এবং আবাহনীর বিপক্ষে ৭-৬ ব্যবধানের জয় নিয়ে টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেছে বসুন্ধরা কিংস।
কাঞ্চনের নামটি শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ২০০৩ সাফ ফুটবল। দেশের ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সাফল্যে তুলে নিতে এই স্ট্রাইকারের ছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এক সময়কার জাতীয় দল এবং ক্লাব সতীর্থেরা যখন বুটজোড়া তুলে রেখে ভিন্ন পেশা বেছে নিয়েছেন, তখনো অবিরাম খেলে চলেছেন আবাহনী ও মোহামেডানের সাবেক স্ট্রাইকার। কাঞ্চনের মাঠে নামার সুযোগ কম হলেও বিপদের সময়ে কোচরা তাঁকে বিভিন্ন পজিশনে খেলিয়ে থাকেন। গতকাল তো অতিরিক্ত সময়ে বদলি হিসেবে নেমেছিলেন লেফটব্যাক হিসেবে। আর টাইব্রেকার নামক স্নায়ুর পরীক্ষায় অংশ নিলেন নিজের সবটুকু অভিজ্ঞতাকে উজাড় করে দিয়ে।
এমন অদ্ভুত স্পট কিক নেওয়ার রহস্য কী ? এমনটা নাকি তাঁকে শিখিয়েছিলেন ২০০৩ সাফজয়ী অস্ট্রিয়ান কোচ জর্জ কোটান, ‘৬ নম্বর শট নেওয়া মোটেও সহজ নয়। আমি খুশি যে মাথা ঠান্ডা রেখে আমি আমার কাজটা করতে পেরেছি। এটা অনেক পুরোনো একটা কৌশল। সেই জর্জ কোটান জাতীয় দলের দায়িত্বে থাকতে শিখিয়েছিলেন। যদিও ঢাকার মাঠে আজই প্রথম এটি প্রয়োগ করলাম। ঢাকার বাইরে খেলতে গিয়ে এমনটা বহুবার করেছি। এই সেমিফাইনালের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে এটা অনেক চেষ্টা করেছিলাম।ফলও পেয়েছি। তাই ম্যাচে আর দ্বিতীয়বার ভাবিনি এটি করার আগে।’