ওই ঘটনার পরও ওয়েস্ট ইন্ডিজ কীভাবে চাঙা হলো?

‘নো বল’ বিতর্কের পর ভীষণ চাঙা হয়ে উঠেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তারই সুবাদে এসেছে জয় ছবি: প্রথম আলো।
‘নো বল’ বিতর্কের পর ভীষণ চাঙা হয়ে উঠেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তারই সুবাদে এসেছে জয় ছবি: প্রথম আলো।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো আজ বাংলাদেশের শুরুটাও হয়েছিল দুর্দান্ত। ওশান থমাসের যে ওভারে ‘নো’ বলের ঘটনা, সেটিতে বাংলাদেশ তুলেছে ৩০ রান। ৪ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১ উইকেটে ৬২, রানরেট ১৫-এর ওপরে। ম্যাচের পাল্লাটা তখন সাকিবদের দিকেই হেলে। বাংলাদেশের টপ অর্ডারের দুর্দান্ত শুরু তো আছেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে এল থমাসের ওভারে ‘নো-বল’ নিয়ে বিতর্ক।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক বললেনই, একটা তরুণ, অনভিজ্ঞ বোলার যখন কষ্টেসৃষ্টে একটা উইকেট বের করেছে, তখন উল্টো দেওয়া হলো নো-বল। তাঁকে আরও একটা অতিরিক্ত বল করতে হলো, সেটিতে ছক্কাও খেতে হলো! মানসিকভাবে শুধু বোলারই নয়, এটির প্রভাব পড়ে পুরো দলের ওপরই। আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত, ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতিবাদের পরও আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত না বদলানো। ৯ মিনিটের মতো খেলা বন্ধ থাকা—সব মিলিয়ে মনঃসংযোগ ধরে রাখা স্বাভাবিকভাবেই কঠিন।

যেখানে মনঃসংযোগ ধরে রাখাই কঠিন, সেখানে উল্টো চাঙা হলো ক্যারিবীয়রা। বিপুল বিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়ল বাংলাদেশের ওপর। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা তারা মুঠোয় পুড়েই ফিরল। ওই ঘটনার পর কীভাবে চাঙা হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সেটিই বললেন উইন্ডিজ অধিনায়ক ব্রাফেট, ‘আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই থেকেছে, খেলা ফের শুরু হয়েছে এবং ম্যাচটা শেষও হয়েছে। আমি অবশ্য ম্যাচ রেফারির কাছে পাঁচ মিনিট চেয়েছি আবার স্বাভাবিক হতে এবং যে ঘটনা ঘটেছে সেটা ভুলে যেতে। ধন্যবাদ তারা সে সময়টা আমাদের দিয়েছে। এতে করে সতীর্থদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছে। ঘটনাটা আমাদের সবার বিপক্ষেই গিয়েছিল। তবে প্রতিকূল সময়ে আমি শুধু কথা বলেছি। পরিস্থিতি সামলে সবাই আবার খেলায় ফিরেছে। সবাই বলেছে এটার জন্যই আমাদের জিততে হবে। এর পর তো দেখেছেনই কী হয়েছে। অনভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের কাছে থেকে এটা পাওয়া অনেক বড় ব্যাপার ছিল। আমি মনে করি তাদের সবাইকে আমরা এক রাখতে পারি, শেখাতে পারি কীভাবে পেশাদার হতে পারি। আমি মনে করি সামনে আমরা আরও ভালো করব।’

ব্রাফেটের কথাগুলো অদ্ভুত মনে হতে পারে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড়দের আত্মনিবেদন নিয়ে যখন হরহামেশা প্রশ্ন ওঠে, সেখানে ব্রাফেট স্থাপন করছেন ব্যতিক্রম দৃষ্টান্ত। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের জন্য জীবন দিয়ে লড়তে হবে—এই বার্তা তিনি ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন তরুণ সতীর্থদের প্রতি। ব্রাফেটের এ লড়াই দেখে তরুণ ক্যারিবীয় ক্রিকেটাররা যদি কিছু শিখতে পারে, সেটি নিশ্চয়ই অনেক বড় পাওয়া হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের।