২০২২ কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে বাফুফের পরিকল্পনা!

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। ফাইল ছবি

>

যেকোনো টুর্নামেন্ট বা বাছাইপর্ব সামনে এলেই হাঁক ছাড়ে বাফুফে। আগামী বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব নিয়েও শুরু হয়ে গিয়েছে তোড়জোড়।

শিরোনাম দেখে ভাবতে পারেন, দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের (সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ) গ্রুপ পর্ব পেরোতে পারে না, আবার বিশ্বকাপ পরিকল্পনা!

এমন ভাবলে অবাক হওয়া কিছুই নেই। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ১৯২তম হয়ে বাছাইপর্ব টপকে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ খেলা ‘ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা’র চেয়েও বেশি কিছু। তবে ব্যর্থতা নিয়ে বসে থাকাও যায় না। সূচি চূড়ান্ত না হলেও আগামী বছরেই বাংলাদেশকে নামতে হচ্ছে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের নামমাত্র দৌড় প্রতিযোগিতায়। সর্বশেষ রাশিয়া বিশ্বকাপে সরাসরি বাছাইপর্ব খেলার ছাড়পত্র পেলেও কাতার বিশ্বকাপে সম্ভবত তা আর হচ্ছে না। র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ এতটাই পিছিয়ে যে খেলতে হতে পারে প্রাক্‌বাছাইপর্ব—যেখানে সম্মানজনক ফলাফলের আশায় কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।

কাতার বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব নিয়ে পরিকল্পনার আগে দেখে নেওয়া যাক রাশিয়া বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের খেরোখাতা। রাশিয়া বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের আট ম্যাচে ৩২ গোল হজম করেছিল বাংলাদেশ। বাছাইপর্ব উতরে বাংলাদেশ ২০১৮ রাশিয়া ফুটবল বিশ্বকাপ খেলবে, এমন উচ্চাভিলাষী স্বপ্ন কারও ছিল না। একটি স্বপ্ন অবশ্যই ছিল, গ্রুপে তৃতীয় হতে পারলে খেলা যাবে ২০১৯ এশিয়ান কাপ। কিন্তু সেটি সম্ভব হয়নি। শেষ ম্যাচে তো জর্ডানের বিপক্ষে হজম করতে হয়েছে ৮ গোল। বাছাইপর্ব থেকে বাংলাদেশের অর্জন বলতে ঘরের মাঠে তাজিকিস্তানের বিপক্ষে এক ড্রয়ে মাত্র ১ পয়েন্ট।

অস্ট্রেলিয়া, তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান ও জর্ডানের গ্রুপ থেকে শেষ দল হিসেবে বাছাইপর্ব শেষ করার পরও এশিয়ান কাপে খেলার দরজাটা কিছুটা হলেও খোলা ছিল। কিন্তু এশিয়ান কাপের প্রাক্‌বাছাইপর্বে ভুটানের মতো দলের বিপক্ষেও দুই পর্ব মিলিয়ে বাংলাদেশ হেরেছিল ৩-১ গোলে। ঢাকায় প্রথম পর্বে গোলশূন্য ড্রয়ের পর থিম্পুতে স্বাগতিকদের কাছে ৩-১ গোলে হার—সেই হার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল কাজী সালাউদ্দিন জমানায় কোন পথে হাঁটছে বাংলাদেশের ফুটবল।

তৃণমূল থেকে খেলোয়াড় তৈরির কোনো উদ্যোগ না থাকায় জাতীয় দল হয়ে পড়েছে মেধাশূন্য। মাঝে এশিয়ান গেমসে একটু সাফল্য দেখা দিলেও ঘরের মাঠে নেপালের বিপক্ষে হেরে টানা চতুর্থবারের মতো সাফের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ। এরপর বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপে ব্যর্থতার জেরে জাতীয় দল পুনরায় স্থবির হয়ে পড়ে। কিন্তু যেকোনো টুর্নামেন্ট বা বাছাইপর্ব সামনে এলেই হাঁক ছাড়ে বাফুফে।

আগামী বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব নিয়েও শুরু হয়ে গিয়েছে তোড়জোড়। অবশ্যই বিষয়টি ইতিবাচকই বটে। নতুন বছরে অনেকগুলো আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলিয়ে জাতীয় দলকে তৈরি করার লক্ষ্য জানিয়েছেন ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ, ‘জাতীয় দল নিয়ে আমরা খুব একান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছি। ক্যালেন্ডার দেখে আমরা জানি যে ২০১৯–এর শেষ দিকে বাছাইপর্বে আমাদের দুটি ম্যাচ থাকবে। এই উপলক্ষে নতুন বছরে ফিফা উইন্ডোতে আমরা যদি একটি-দুটি করেও ম্যাচ খেলি, আমাদের ১০-১২টা ম্যাচ খেলা হয়ে যাবে। কোচের সঙ্গে আলোচনা করেই প্রতিপক্ষ দেশগুলোর সঙ্গে আলাপ করা হয়েছে। তালিকায় আছে কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশ।’

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের পর জাতীয় দলের ফুটবলাররা সবাই ব্যস্ত আছেন ঘরোয়া ফুটবলে। ফেডারেশন কাপ শেষে ছুটিতে আছেন কোচিং স্টাফরা। জানুয়ারিতেই স্বদেশি সহকারী স্টুয়ার্ট ওয়াটকেসিকে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরবেন জাতীয় দলের প্রধান কোচ ইংলিশ জেমি ডে।