পেলে-ম্যারাডোনার সমান নন মেসি!

মেসিকে সর্বসেরা মানছেন না জিকো (ছবি - রয়টার্স)
মেসিকে সর্বসেরা মানছেন না জিকো (ছবি - রয়টার্স)
ফুটবলার মেসির স্থান আসলে কোথায়? তিনি কি সর্বকালের সেরা? নাকি পেলে-ম্যারাডোনাকেই ছাড়াতে পারেননি এখনো? চিরায়ত এই বিতর্কে এবার অংশ নিলেন ব্রাজিলের ‘সাদা পেলে’ খ্যাত তারকা জিকো।


বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়ের খেতাব জিতেছেন পাঁচ-পাঁচবার। নিজের ক্লাব বার্সেলোনার হয়ে প্রতিনিয়ত গড়ে যাচ্ছেন নতুন নতুন ইতিহাস। কিন্তু আর্জেন্টিনার হয়ে খেলতে নামলেই লিওনেল মেসির সব অর্জন যেন ফিকে হয়ে যায়। আর্জেন্টিনার মূল দলের হয়ে এখনো যে কিছুই জেতেননি তিনি! সেই ব্যর্থতার দিকে আঙুল তুলেই ব্রাজিল কিংবদন্তি জিকো জানালেন, পেলে-ম্যারাডোনা হতে এখনো অনেকটুকু পথ পাড়ি দিতে হবে মেসিকে।

ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার দৌড়ে ম্যারাডোনার কাছাকাছি থাকলেও পেলেকে এখনো ধরতে পারেননি মেসি, এমনটাই ভাবছেন জিকো, ‘মেসিকে বড়জোর ম্যারাডোনার কাছাকাছি বলা যায়। তার মানে পেলের সঙ্গে মেসির তুলনা হওয়ার প্রশ্নই আসে না। কেননা আমার মতে পেলে সবার চেয়ে সেরা।’

একজন সফল ও সম্পূর্ণ ফুটবলারের যেসব গুণাবলি থাকা দরকার, তার সবকিছুই পেলের ছিল মনে অভিমত জিকোর, 'একজন সম্পূর্ণ ফুটবলারের সকল বৈশিষ্ট্য ও গুণ পেলের ছিল। ঈশ্বর যখন পেলেকে বানিয়েছিলেন, তাঁর মধ্যে একজন পরিপূর্ণ ফুটবলারের সকল গুণাবলিই দিয়ে দিয়েছিলেন— গতি, ড্রিবলিং করার ক্ষমতা, শট নেওয়ার দক্ষতা, হেড করার ক্ষমতা, শক্তি, যেকোনো পরিস্থিতিতে দলের হাল ধরতে পারার যোগ্যতা, সবকিছু। বিশ্বের খুব কম ফুটবলারই আছে যে পেলের মতো হেড করতে পারত। তিনি ছিলেন ১৭০ সেন্টিমিটার লম্বা, অর্থাৎ ভালোভাবে হেড করতে তাঁর কোনো সমস্যাই হতো না। বল নিয়ে কারিকুরি করতে পারা বা দলকে নিজের কাঁধে বয়ে নিয়ে যাওয়া— সম্ভাব্য সব দিকেই পেলে নিজেকে উন্নত করেছিলেন।’

মেসির মধ্যেও এসব গুণ কমবেশি আছে মানলেও মেসিকে পেলে-ম্যারাডোনার সমান ভাবতে নারাজ জিকো, ‘হ্যাঁ, মেসিও ভালো, তবে পেলের মতো নয়। সে এখনো আর্জেন্টিনার হয়ে একটা বিশ্বকাপও জিততে পারেনি, এটাই অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দেয়।’

এই এক ক্ষেত্রে ব্যর্থ হওয়ার কারণে মেসি ম্যারাডোনার সমানও নাকি হতে পারেননি, ‘মেসি এখন যেমন ক্লাব পর্যায়ে সবকিছু জিতছে, ম্যারাডোনার তেমন জিতেছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের হিসাব করলে ম্যারাডোনা একজন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন যেটা এখনো মেসি হতে পারেনি। ম্যারাডোনা সব সময় জাতীয় দলের হয়ে খেলতে এসে নিজের কাঁধে দায়িত্ব তুলে নিত। আন্তর্জাতিক যেকোনো প্রতিযোগিতায় সব সময় নিজের সেরাটা ঢেলে দিত। এমনকি ভালো দল না নিয়েও সে নিজে জানপ্রাণ দিয়ে লড়ত। মেসি তো তাও সতীর্থ হিসেবে ইনিয়েস্তা, জাভি, নেইমার, সুয়ারেজ, পিকেদের পেয়েছে।’
সত্তর-আশির দশকে ব্রাজিলের হয়ে মাঠ কাঁপিয়েছিলেন ‘সাদা পেলে জিকো। জিকোর এই বক্তব্য মেসিকে তাতিয়ে দিতে বাধ্য, আর এর মধ্যেই লিগের ১৫ ম্যাচে ১৫ গোল করা মেসি যদি আরও খেপে যান, তা আর্জেন্টিনা আর বার্সেলোনা, দুই দলের জন্যই ভালো!