৩৭ রানে ১০ উইকেটও যখন কিছুই না!

৩৭ রানের ১০ উইকেট পেয়েছেন পুষ্পকুমারা। ফাইল ছবি
৩৭ রানের ১০ উইকেট পেয়েছেন পুষ্পকুমারা। ফাইল ছবি

মালিন্দা পুষ্পকুমারার আন্তর্জাতিক অভিষেক একটু দেরিতেই হয়েছে। গত বছর শ্রীলঙ্কার জার্সি যখন গায়ে চাপিয়েছেন তত দিনে বয়স ৩০ ছুঁয়েছে। এসেও খুব একটা আলো কাড়েননি। কিন্তু গতকাল নিশ্চিত করে ফেলেছেন, আর যাই হোক ক্রিকেট ইতিহাস তাঁকে মনে রাখবে আজীবন। কলম্বো ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলতে নেমে ৩৭ রানেই নিয়ে নিয়েছেন প্রতিপক্ষের সব উইকেট!

রবিবার মোরাতুয়া মাঠে স্যারাসেন স্পোর্টস ক্লাবের দশ ব্যাটসম্যানই উইকেট দেওয়ার জন্য পুষ্পকুমারাকে বেছে নিয়েছেন। ১৮.৪ ওভারের টানা স্পেলে অন্য বোলারদের কোনো সুযোগ দেননি পুষ্পকুমারা। তাঁর এমন ভয়ংকর বোলিংয়ে ৩৪৯ রানের লক্ষ্যে নামা স্যারাসেন অলআউট হয়েছে ১১৩ রানে। ২০০৯ সালের পর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এই প্রথম কোনো বোলার ইনিংসে দশ উইকেট নিল। না, শ্রীলঙ্কায় নয়, সারা বিশ্বেই গত ১০ বছরে এমন কীর্তি কেউ করতে পারেননি। সর্বশেষ এমন কিছু দেখিয়েছেন আরেক বাঁহাতি স্পিনার পাকিস্তানের জুলফিকার বাবর। তবে মুলতানের হয়ে ১০ উইকেট নিতে বাবরকে অনেক খরচ (১৪৩ রান) করতে হয়েছিল।

সে তুলনায় পুষ্পকুমারা অনেক কিপটে। ১০ উইকেট নিতে মাত্র ৩৭ রান দিয়েছেন। অর্থাৎ প্রতি উইকেটের জন্য চারেরও কম! মজার ব্যাপার এমন কিপটে বোলিং করেও কোনো রেকর্ড গড়তে পারেননি এই স্পিনার। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এর চেয়ে কম রান দিয়ে ১০ উইকেট পাওয়ার ঘটনা ১২টি। ১৩তম স্থানেও দুজন সঙ্গী আছে পুস্পকুমারার। তবে এটা ভেবে সান্ত্বনা পেতে পারেন, ১৯৯৫ সালের পর সবচেয়ে কম রান দেওয়া বোলার তিনি।

মজার ব্যাপার, এ ম্যাচে আরও এক বোলার ১০ উইকেটের কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন। স্যারাসেনের বাঁহাতি স্পিনার চামিকারা এদিরিসংহে ৮৭ রান দিয়ে ৯ উইকেটে পেয়েছেন। বিশ্বে ১৩তম হলেও শ্রীলঙ্কায় অন্তত সেরা বোলিং ফিগার এখন পুষ্পকুমারার। ১৯৯২ সালে ইনিংসে ১০ উইকেট পেয়েছিলেন প্রমোদ্য বিক্রমাসিংহে। সিংহলিজের এই পেসার সেবার দিয়েছিলেন ৪১ রান।

প্রথম শ্রেণিতে ১০ উইকেট নেওয়ার ঘটনা এক সময় নিয়মিত দেখা গেলেও টেস্টে কিন্তু এ কীর্তি মাত্র দুবার। জিম লেকার ও অনিল কুম্বলেই শুধু এ অনন্য অর্জনের মালিক।

১০ উইকেট নেওয়া কিপটে বোলিং

বোলিং

বোলার

সাল

১০/১০

হেডলি ভেরিটি (ইংল্যান্ড)

১৯৩২

১৮/১০

জর্জ গিয়ারি (ইংল্যান্ড)

১৯২৯

২০/১০

প্রেমাংশু চেটার্জি (ভারত)

১৯৫৬/৫৭

২৬/১০

বার্ট ভোগলের (দক্ষিণ আফ্রিকা)

১৯০৬/০৭

২৮/১০

আলবার্ট মস (নিউজিল্যান্ড)

১৮৮৯/৯০

২৮/১০

বিল হাওয়েল (অস্ট্রেলিয়া)

১৮৯৯

২৮/১০

নাইম আখতার (পাকিস্তান)

১৯৯৫-৯৬

৩০/১০

কলিন ব্লাইথ (ইংল্যান্ড)

১৯০৭

৩২/১০

হ্যারি পিকেট (ইংল্যান্ড)

১৮৯৫

৩৫/১০

আলনোজো ড্রেক (ইংল্যান্ড)

১৯১৪

৩৬/১০

হেডলি ভেরিটি (ইংল্যান্ড)

১৯৩১

৩৬/১০

টিম ওয়াল (অস্ট্রেলিয়া)

১৯৩২/৩৩

৩৭/১০

অ্যালেক্স কেনেডি (ইংল্যান্ড)

১৯২৭

৩৭/১০

ক্ল্যারি গ্রিমেট (অস্ট্রেলিয়া)

১৯৩০

৩৭/১০

মালিন্দা পুষ্পকুমারা (শ্রীলঙ্কা)

২০১৮/১৯