প্রশংসা করতেই হচ্ছে করিমের ইচ্ছেশক্তি ও সাহসের

ফ্রেন্ডস ক্লাবের জার্সিতে নেপাল প্রিমিয়ার লিগ খেলেছেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক নুরুল করিম। সংগৃহীত ছবি
ফ্রেন্ডস ক্লাবের জার্সিতে নেপাল প্রিমিয়ার লিগ খেলেছেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক নুরুল করিম। সংগৃহীত ছবি
>দেশের ক্লাবে খেলার আশায় বসে না থেকে নেপাল লিগে খেলে এসেছেন ২৬ বছর বয়সী নুরুল করিম।

বাংলাদেশের সেরা বিশজন গোলরক্ষকের নাম বলা হলেও নিশ্চিতভাবে এর মধ্যে আসবেন না নুরুল করিম। তাঁর জায়গা হয় না প্রিমিয়ার লিগের কোনো দলেও। কিন্তু নিজ চেষ্টায় ও সাহস দেখিয়ে যোগ্যতা প্রমাণ করে খেলে এসেছেন নেপাল প্রিমিয়ার লিগে। করিমের ইচ্ছে শক্তি ও সাহসের প্রশংসা করতেই হয়। এবারের দুর্দান্ত পারফরমেন্সের ওপর ভর করে ভবিষ্যতেও করিমকে চায় তাঁর দল ফ্রেন্ডস ক্লাব। আগামী মৌসুমে বাংলাদেশের এই গোলরক্ষককে পেতে আগ্রহ দেখিয়েছে সেখানকার আরও তিন-চারটি ক্লাব।

প্রিমিয়ার লিগের কোনো ক্লাব করিমকে দলে নেওয়ার আগ্রহ দেখায়নি। নিজে চেষ্টা করলে হয়তো চ্যাম্পিয়নশিপের কোনো ক্লাবে খেলতে পারতেন। কিন্তু এই ‘যদি-কিন্তু’র ওপর ভরসা না করে চেষ্টা করেছেন নেপালে গিয়ে লিগ খেলার। দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলারদের জন্য নিজেদের দরজাটা খুলে দিয়েছে নেপাল। নতুন নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের ঘরোয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ‘এ’ ডিভিশন লিগে প্রথমবারের মতো চার বিদেশি কোটায় একজন হতে হবে দক্ষিণ এশিয়ান। আর এতেই কপাল খুলে যায় করিমের।

২০১০ সালেও নেপালের প্রিমিয়ার লিগ খেলেছিলেন করিম। সীতাকুণ্ডের ছেলে এর আগে খেলেছেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৬ এবং অনূর্ধ্ব-১৯ দলেও। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে খেলেছেন বিজেএমসি ও ফেনী সকারের হয়ে। কিন্তু চোটের কারণে ক্যারিয়ারটা প্রত্যাশামাফিক হয়নি। হাঁটুতে অপারেশন করাতে হয়েছে দুইবার। এরপর পথ হারিয়ে ফেলেছে করিমের ফুটবল ক্যারিয়ার। দেশে যখন সবাই করিমের ওপর থেকে নজর তুলে নিয়েছে, তখন দেশের বাইরে খেলার চেষ্টা করে সফলও হয়ে গেলেন।

ফ্রেন্ডস ক্লাবে এক নম্বর গোলরক্ষক ছিলেন করিম। দলটির সঙ্গে ছয় মাসের চুক্তি ছিল তাঁর। চার মাসেই লিগ শেষে ৮ ডিসেম্বর দেশে ফিরে এসেছেন। চোটের কারণে ম্যাচ খেলতে পেরেছেন মাত্র সাতটি। তাঁর দল সর্বশেষ নেপাল লিগে ১৪ দলের মধ্যে হয়েছে দশম। করিমের ফ্রেন্ডস ক্লাব মূলত অ্যাকাডেমি ভিত্তিক তারুণ্যনির্ভর দল। নেপাল জাতীয় দলের তিনজন ফুটবলার ছিলেন দলে। এবার দলটির রেজাল্ট খারাপ হওয়ার পেছনে দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড়ের চোটকে দায়ী করলেন করিম। সে সঙ্গে দুই বিদেশি ফুটবলারের অনুপস্থিতিও, অনাপত্তিপত্র না মেলায় খেলতে পারেননি তারা।

নেপাল লিগে খেলার সুযোগ মিলেছে বাংলাদেশে ফিফা স্বীকৃত এজেন্টের মাধ্যমে। ভবিষ্যতে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম বা মালদ্বীপ লিগে খেলার স্বপ্ন দেখেন করিম, ‘নেপালে ভালো খেলার সুবাদে এখন আমার সাহস বেড়েছে। নেপালে তো আমাকে চায়ই, আমি চাই মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ বা ইন্দোনেশিয়া লিগে খেলতে। দেশে খেলার সুযোগ না পেলে দেশের বাইরে খেলার চেষ্টা করা উচিত।’