'মোস্তাফিজকে বলেছি আমাদের কথা শোনার দরকার নেই'

মোস্তাফিজের কাঁধে এভাবে চড়ে বসলেন মিরাজ। ছবি: প্রথম আলো।
মোস্তাফিজের কাঁধে এভাবে চড়ে বসলেন মিরাজ। ছবি: প্রথম আলো।
>শেষ বলে দরকার ৭ রান। মোস্তাফিজকে ঘিরে বসলেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ, সৌম্য সরকার আর মোহাম্মদ হাফিজ। তিনজনই কী যেন বলছিলেন মোস্তাফিজকে। কী বলা হয়েছিল সে সংক্ষিপ্ত সভায়?

শেষ ওভারে দরকার ৯ রান। রংপুর রাইডার্সকে আটকাতে বোলিংয়ে এলেন মোস্তাফিজুর রহমান। রাইলি রুশো ১ রান নিয়ে স্ট্রাইকে দিলেন ফরহাদ রেজাকে। টানা চারটা ডট। পঞ্চম বলও ব্যাটেবলে হয়নি, বাই রান নিয়ে কোনোভাবে রুশো প্রান্ত বদল করলেন। শেষ বলে সমীকরণ নেমে এল ৭ রানে। রুশো একটা ছক্কা মেরে দিলেই ম্যাচ চলে যাবে সুপার ওভারে। মোস্তাফিজ পারবেন রংপুরের প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানকে আটকাতে?

একটু দম নিতে বোলিং প্রান্তে বসেই পড়লেন বাঁহাতি পেসার। তাঁকে ঘিরে মেহেদী হাসান মিরাজ, সৌম্য সরকার আর মোহাম্মদ হাফিজ। তিনজনই কী যেন বলছিলেন মোস্তাফিজকে। কী বলা হয়েছিল সে সংক্ষিপ্ত সভায়?

এমন স্নায়ুক্ষয়ী মুহূর্ত মোস্তাফিজকে আগেও সামলাতে হয়েছে। এই তো গত সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৬ বলে ৮ রান ‘ডিফেন্ড’ করে ফেললেন। আজও ব্যর্থ নন। রংপুর তাঁর শেষ ওভারে নিতে পারল মাত্র ৩ রান। শেষ মুহূর্ত যে ছোটখাটো একটা সভা হলো, সেখানে মোস্তাফিজকে কী পরামর্শ দিয়েছিলেন, সেটি সংবাদ সম্মেলনে খোলাসা করলেন মিরাজ, ‘মোস্তাফিজকে আমি একটা কথাই বলার চেষ্টা করেছি, সৌম্য সরকার ভাইয়ের কথা কিংবা হাফিজ ভাইয়ের কথাও শোনার দরকার নেই! ও যদি নিজের পরিকল্পনায় বোলিং করে তবে ভালো করে। তিনজনের কথা তখন মাথায় নিলে নিজেরটা করতে পারবে না। ওকে বলেছি, তুই ফিল্ড সেটআপ করে, তোর মতো বোলিং কর। সৌম্য ভাইও একই কথা বলেছে। কিন্তু হাফিজ ভাই বিভিন্ন রকম কথা বলছিলেন। আমি আর সৌম্য ভাই বলছিলাম, না, তুই তোর মতো কর। ও নিজের মতো বোলিং করলে ভালো করে। আমরা ওকে ওর মতো বোলিং করতে সহায়তা করেছি। এ কারণে ম্যাচটা জিততে পেরেছি। আমরা জানি মোস্তাফিজ কী ধরনের বোলার আর কী ধরনের মানুষ।’

অধিনায়কের কথা রেখেছে বলেই মোস্তাফিজের কাঁধে চড়ে বসলেন মিরাজ। দুজন শুধু সতীর্থ নন, ঘনিষ্ঠ বন্ধুও। মিরাজের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসের আরও একটা কারণ হতে পারে, বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার বিপক্ষে যে জিতেছেন। স্বাভাবিকভাবে রাজশাহী অধিনায়ক ভীষণ খুশি। আর ম্যাচটা জিততে তিনি কতটা উন্মুখ ছিলেন, সেটি মাঠে মিরাজের পদক্ষেপেই ফুটে উঠেছে। সতীর্থরা ভুল করলেই উত্তেজিত হতে দেখা গেছে তাঁকে। উত্তেজনায় তো ‘ফিল্ডিংয়ে ধোঁকাবাজি’ করে ৫ রান জরিমানা গুনেছেন।

অল্প পুঁজি নিয়ে জিততে অধিনায়ক মিরাজের এমন তৎপর না হয়ে উপায় ছিল না, ‘আমাদের শুরু থেকেই বিশ্বাস ছিল কারণ, আমাদের বোলিং দিকটা অনেক ভালো। বিশ্বাস ছিল আমাদের যে বোলার আছে মোস্তাফিজ-উদানা ওরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। আমি ছিলাম, হাফিজ ভাই ছিলেন। সানি ভাইও ছিলেন। বিশ্বাসটা প্রথম থেকেই ছিল। আমাদের যে ঘাটতি আছে, সেটা যদি আরও কাটিয়ে উঠতে পারি আরও ভালো করতে পারব।’