টি-টোয়েন্টির দুর্বলতা কাটবে যেভাবে

রাজশাহী সতীর্থ মুমিনুলের সঙ্গে আলাপচারিতায় শাহরিয়ার নাফীস। ছবি: প্রথম আলো
রাজশাহী সতীর্থ মুমিনুলের সঙ্গে আলাপচারিতায় শাহরিয়ার নাফীস। ছবি: প্রথম আলো
>বিপিএলে স্থানীয় খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স শুধু হতাশাই ছড়িয়ে যাচ্ছে। শাহরিয়ার নাফীস অবশ্য এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার একটা পথ দেখতে পাচ্ছেন

বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা টি-টোয়েন্টি খেলতে পারেন না—এই অভিযোগ অনেক পুরোনো। বিপিএলের ষষ্ঠ আসর চলছে, কিন্তু পরিস্থিতি খুব বেশি পাল্টায়নি। উল্টো ক্রিকেটের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত সংস্করণে আফগানিস্তানও বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানিস্তান সরাসরি খেলার সুযোগ পেলেও বাংলাদেশকে মূল আসরে খেলতে হবে বাছাইপর্ব পেরিয়েই। ব্যাপারটা কিন্তু যথেষ্ট হতাশারই।

ক্রিকেটপ্রেমীরা আরও হতাশ বিপিএল দেখে। এই টুর্নামেন্টে টি-টোয়েন্টির সেই মার মার কাট কাট ব্যাপারটাই অনুপস্থিত। মাঠে দর্শক হচ্ছে না। স্থানীয় খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স শুধু হতাশাই ছড়িয়ে যাচ্ছে। শাহরিয়ার নাফীস অবশ্য এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার একটা পথ দেখতে পাচ্ছেন। তিনি বুঝতে পারছেন বিপিএলে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের কয়েকজন ছাড়া বাকিরা কেন আলো ছড়াতে পারে না। এই টুর্নামেন্ট ছয়-ছয়টি আয়োজন দেখে ফেললেও কেন বাংলাদেশের ক্রিকেটর এটি থেকে খুব বেশি ফসল ঘরে তুলতে পারেনি! টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট উপযোগী ক্রিকেটারই বা বাংলাদেশ কেন তৈরি করতে পারছে না!

জাতীয় ক্রিকেট দলের বাইরে থাকা এই ব্যাটসম্যান মনে করেন বিপিএলের বাইরে কেবল স্থানীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট আয়োজন করা উচিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)। কিছুদিন আগে মুশফিকুর রহিমও ঠিক একই কথা বলেছিলেন। আজ বিপিএলে রাজশাহী কিংস ও খুলনা টাইটানস ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে সে কথাই আবার বললেন এই তারকা।

নাফীসের মতে টি-টোয়েন্টির সঙ্গে স্থানীয় ক্রিকেটাররা সেভাবে নিজেদের পরিচিতই করতে পারছেন না, ‘আমরা জাতীয় দলের বাইরে থাকা ক্রিকেটাররা বিপিএলের বাইরে একটা আলাদা টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের অভাব খুব বেশি করে অনুভব করছি। এতে করে যেটি হবে সেটি হচ্ছে আমরা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সঙ্গে পরিচিত থাকব। এর জন্য যে কৌশলের দরকার সেটি আয়ত্ত করতে পারব। সেই সঙ্গে আমাদের শক্তি ও দুর্বলতার ব্যাপারে আমরা একটা ধারণা পাব। পাশাপাশি খেলার মধ্যে থাকলে তো পুরো বিষয়টাই সহজ হয়ে যায়।’

সেই টুর্নামেন্টটা বিসিবি কখন আয়োজন করতে পারে, সেটিও বলেছেন নাফীস, ‘আমি মনে করি জাতীয় লিগের সঙ্গে নয়তো বিসিএলের সঙ্গে অথবা প্রিমিয়ার লিগের সঙ্গে সেটি আয়োজন করা যেতে পারে। বিশেষ করে এটি জাতীয় লিগকে টার্গেট করে আয়োজন করা যেতে পারে। এতে করে মোট ১২০ জন স্থানীয় ক্রিকেটার টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজেদের ঝালাই করে নিতে পারবে।’

বিপিএলে দেশি ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স ভালো না হওয়ার আরও একটি কারণ নাফীস ধরতে পেরেছেন। সেটি হচ্ছে প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সময়ের অভাব। নাফীসের মতে বিপিএলের আগে সেটি পান না স্থানীয় ক্রিকেটাররা, ‘২৭ তারিখ বিসিএল শেষ করে মাসের পয়লাতেই আমরা বিপিএলের ক্যাম্পে যোগ দিয়েছি। তিন-চার দিন পরে টুর্নামেন্টই শুরু হয়ে গেল। প্রস্তুতিটা অন্তত ১৫ থেকে ২০ দিন হওয়া উচিত। আগের বিপিএলে আমরা ৭ থেকে ১০ দিন প্রস্তুতির সময় পেয়েছিলাম। সেটি কিন্তু কাজে এসেছিল। আইপিএলে দলগুলি প্রায় এক মাস আগে ক্যাম্প শুরু করে।’

বিপিএল নিয়ে বড় আক্ষেপই ঝরেছে নাফীসের কণ্ঠে, ‘বিপিএল টুর্নামেন্টটা কিন্তু করাই হয়েছিল বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের উন্নতির লক্ষ্যে। এটির ছয়টি আসর হয়ে গেল। কিন্তু এ থেকে প্রাপ্তি আমাদের খুবই কম। প্রায় সব আসরেই বাইরের টি-টোয়েন্টি তারকারা এসে পারফর্ম করে যাচ্ছে।’