পুঁচকে জিরোনায় মাদ্রিদ গেল!

কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার আনন্দ জিরোনার খেলোয়াড়দের। কাল ম্যাচ শেষে ড্রেসিং রুমে। ছবি: টুইটার
কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার আনন্দ জিরোনার খেলোয়াড়দের। কাল ম্যাচ শেষে ড্রেসিং রুমে। ছবি: টুইটার

লা লিগা পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষ পাঁচ দূর অস্ত শীর্ষ আট দলের মধ্যেও নেই জিরোনা। এমন দলের মাঠে গত সপ্তাহে শেষ ষোলো প্রথম লেগে ১-১ গোলে ড্র করেছিল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। ‘রোজি ব্লাঙ্কোস’ ভক্তরা তখন যদি ঘুণাক্ষরেও জানতেন, ফিরতি লেগেই আশ্চর্য পতন!

কোচ ডিয়েগো সিমিওনে আঁচ করতে পেরেছিলেন? হয়তো। নইলে কাল ফিরতি লেগে শক্তিশালী একাদশ মাঠে নামাতেন না। জিমিনেজ, গোডিন, কোরেয়া, সাউল, কোকে, কালিনিচদের শুরুতে খেলান অ্যাটলেটিকো কোচ। যে আঁতোয়ান গ্রিজমানের এই ম্যাচটা খেলার কথা ছিল না তাঁকেও বদলি হিসেবে নামাতে বাধ্য হয়েছেন সিমিওনে। হয়নি, তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। অবিশ্বাস্য এক ম্যাচে অ্যাটলেটিকোকে তাদেরই ঘরে ৩-৩ গোলে আটকে জিরোনা উঠেছে শেষ আটে!

অর্থাৎ অ্যাটলেটিকো সবাইকে চমকে দিয়ে ছিটকে পড়ল কোপা ডেল রে থেকে। যে দলটি এর আগে কখনোই এই টুর্নামেন্টে শেষ আটের দেখা পায়নি, লা লিগায়ও গতবার উঠে এসেছে প্রথমবারের মতো—সেই জিরোনার কাছে হেরে বাড়ির পথ ধরল কিনা সিমিওনের তারকাখচিত শিষ্যরা! ১৯৫০ বিশ্বকাপে মারাকানায় শিরোপানির্ধারণী ম্যাচে উরুগুয়ের কাছে ব্রাজিলের হারকে আখ্যা দেওয়া হয়েছিল ‘মারাকানাজ্জো’। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ঠিক একইভাবে কাল অ্যাটলেটিকোর হারকে আখ্যা দিয়েছে ‘জিরোনাজ্জো ইন দ্য মেট্রোপলিতান।’

‘অ্যাওয়ে গোল’—নিয়মের খাঁড়ায় পরে ছিটকে পড়ল অ্যাটলেটিকো। জিরোনার মাঠে ১ গোল করেছিল সিমিওনের দল। অন্যদিকে লা লিগায় রিয়াল-বার্সার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলা অ্যাটলেটিকোর মাঠে একটি-দুটি নয় তিন-তিনটি গোল করেছে ইউসেবিও সাক্রিস্তানের শিষ্যরা। স্প্যানিশ এই কোচ এক সময় বার্সেলোনা ‘বি’ দলের হেড কোচ এবং মূল দলের সহকারী কোচ ছিলেন। দুই লেগ মিলিয়ে গোল ব্যবধান ৪-৪ হলেও সাক্রিস্তান শেষ আটের দেখা পেয়েছেন প্রতিপক্ষের মাঠে শ্রেয়তর গোলসংখ্যার জন্য।

কোপা ডেল রে-র শেষ আট গত কয়েক বছর ধরেই সমার্থক ছিল অ্যাটলেটিকোর জন্য। গত সাত বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো তাঁরা এই টুর্নামেন্টের শেষ আটে উঠতে ব্যর্থ হলো। অথচ ফিরতি লেগে দলটির শুরু কিন্তু এমন হতাশার ছিল না। ১২ মিনিটে নিকোলা কালিনিচের গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকেরা। ৩৭ মিনিটে ভ্যালেরি ফার্নান্দেজের গোলে সমতায় ফেরে জিরোনা। ১-১ গোলে শেষ হয় ম্যাচের প্রথমার্ধ।

বিরতির পর ৫৯ মিনিটে ক্রিস্টিয়ান স্টুয়ানির গোলে এগিয়েও যায় জিরোনা। বিপদ আন্দাজ করতে পেরে গ্রিজমানকে মাঠে নামান সিমিওনে। কোরেয়ার গোলে স্বাগতিকেরা ফের সমতায় ফিরলেও ফরাসি তারকার গোলে এগিয়ে গিয়েছিল অ্যাটলেটিকো। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের ২ মিনিট আগে জিরোনার গার্সিয়ার গোলে জয়বঞ্চিত হয় দলটি। অর্থাৎ ম্যাচ ড্র। যদিও তিন গোলেই ততক্ষণে শেষ আট নিশ্চিত করে ফেলেছে জিরোনা। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, অ্যাটলেটিকো এ নিয়ে টানা পাঁচ ম্যাচে জিরোনা-বাধা টপকাতে পারল না! এর আগে দলটির বিপক্ষে টানা চার ম্যাচেই ড্র করেছিলেন সিমিওনে। আর্জেন্টাইন এই কোচ কী তাই ফিরতি লেগের আগেই বিপদ টের পেয়েছিলেন?

তবু শেষ রক্ষা তো হলো না!