চার বিদেশির সঙ্গে লড়াইটা এক বাঙালির!

বসুন্ধরা কিংসের কোচ অস্কার ব্রুজোন, শেখ জামাল ধানমন্ডির জোসেফ আফুসি, শেখ রাসেলের সাইফুল বারি, আবাহনী লিমিটেডের মারিও লেমোস, সাইফ স্পোর্টিংয়ের জোনাথন ম্যাকিস্ট্রি। ফাইল ছবি
বসুন্ধরা কিংসের কোচ অস্কার ব্রুজোন, শেখ জামাল ধানমন্ডির জোসেফ আফুসি, শেখ রাসেলের সাইফুল বারি, আবাহনী লিমিটেডের মারিও লেমোস, সাইফ স্পোর্টিংয়ের জোনাথন ম্যাকিস্ট্রি। ফাইল ছবি
>

আজ থেকে শুরু হচ্ছে প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের একাদশ আসর। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের বিচারে শিরোপা জয়ের দৌড়ে এগিয়ে থাকবে বসুন্ধরা কিংস, আবাহনী লিমিটেড, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র, শেখ জামাল ও সাইফ স্পোর্টিং। এদের মধ্যে ডাগ আউটে চার বিদেশির সঙ্গে স্থানীয়দের হয়ে লড়বেন শুধু সাইফুল বারি।

আবাহনী লিমিটেড পেয়েছে ছয়বার, তিন বার পেয়েছে শেখ জামাল আর একবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পেয়েছে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। বাংলাদেশের ফুটবল ‘পেশাদার’ জগতে পা রাখার পর এই হলো দশ মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগ জয়ের পরিসংখ্যান। একাদশ আসরে কি নতুন চ্যাম্পিয়নের দেখা মিলবে? তিন ঘোড়ার রেস ভাঙার জন্য গত মৌসুমে হাজির হয়েছে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। আর এবার দৌড়াতে উন্মুখ বসুন্ধরা কিংস। ফলে রেসটি হতে যাচ্ছে পাঁচ ঘোড়ার। উন্মুক্ত এক লড়াইয়ের আবহ ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আসরে।

খাতা-কলম ও সাম্প্রতিক সময়ের পারফরম্যান্সের বিচারে এ যাত্রায় ধারাবাহিকভাবে সবার আগে থাকবে স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজোনের বসুন্ধরা কিংস, পর্তুগিজ মারিও লেমোসের আবাহনী লিমিটেড, সাইফুল বারি টিটুর শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র, নাইজেরিয়ান জোসেফ আফুসির শেখ জামাল ও নর্দান আয়ারল্যান্ডের জোনাথন ম্যাকিস্ট্রির সাইফ স্পোর্টিং। অর্থাৎ ডাগ আউটে চার বিদেশির সঙ্গে লড়াইয়ে স্থানীয়দের মধ্যে থাকবেন শুধু সাইফুল বারি।

এর বাইরে বাকিরা যতই আশার ফুলঝুরি ফোটান না কেন, বাস্তবতার নিরিখে তা বলার জন্যই বলা। বড় পাঁচটি দলকে পেছনে ফেলে ইংলিশ লিগে লেস্টারসিটির মতো কোনো ক্লাব রূপকথার জন্ম দেবে; এ চিন্তা দেশের ফুটবল ইতিহাসের সঙ্গে একেবারেই বেমানান।

মৌসুমের প্রথম দুই প্রতিযোগিতা ফেডারেশন কাপ ও স্বাধীনতা কাপের দিকে তাকালেও পাওয়া যাচ্ছে সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়নদের দৌড়। ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনাল খেলেছিল আবাহনী, বসুন্ধরা, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল। স্বাধীনতা কাপের শেষ চারেও ছিল এদের তিন দল। বাস্তবতার নিরিখে ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে খেলা দলগুলোই শিরোপার দৌড়ে এগিয়ে রাখলেন শেখ রাসেলের কোচ সাইফুল বারি, ‘ফেডারেশনের কাপে যে চারটি দল সেমিফাইনালে খেলেছে তারাই শিরোপা রেসে এগিয়ে থাকবে। চার দলের সঙ্গে থাকতে পারে সাইফ স্পোর্টিং। তবে কোচ মারুফ ভাইয়ের জন্য আরামবাগকে ফেলানো যাচ্ছে না। মিন্টুর জন্য চট্টগ্রাম আবাহনী বড় দলগুলোর জন্য হবে হুমকি।’

লিগে ১৩টি দলের কোচের মধ্যে দেশ ও দেশের বাইরে শিরোপা জয়ের স্বাদ আছে কেবল মারুফুল, আফুসি ও অস্কারের। প্রথম দুজনই দুটি করে শিরোপা জিতেছেন। ২০১২-১৩ ট্রেবল জয়ের মৌসুমে মারুফুলের হাত ধরেই প্রথম লিগ শিরোপা জয় করে শেখ রাসেল। পরের মৌসুমেই শেখ জামালের দায়িত্ব নিয়ে আবারও লিগ জেতেন এই কোচ। তাঁর হাত ধরে তারুণ্যনির্ভর আরামবাগ দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দেবে, এ আশা করছেন সবাই। কিন্তু লিগ জেতার দৌড়ে থাকা কঠিন এ দলের পক্ষে।

বর্তমান বসুন্ধরার কোচ অস্কারের অধীনে দেভেই লিগ খ্যাত মালদ্বীপ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা ঘরে তুলেছিল নিউ রেডিয়ান্ট। দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলটা ভালোই জানা স্প্যানিশ অস্কারের। মালদ্বীপ জয় শেষ, এবার বাংলাদেশ জয় করার চ্যালেঞ্জটা নিলেন ৪১ বছর বয়সী কোচ, ‘স্বাধীনতা কাপ জিতে লিগ শুরু করতে যাচ্ছি। যা আমাদের আত্মবিশ্বাস জুগাবে। এখন আমাদের একটাই লক্ষ্য লিগ জেতা। এখানে শেখ জামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, সাইফ, আবাহনীর মতো দল রয়েছে। সুতরাং আমাদের কাজটা সহজ হবে না।’

এবারের লিগটি আক্ষরিক অর্থেই কোচদের লড়াই। সব ঠিক থাকলে ঢাকাসহ ছয়টি ভেন্যুতে হবে খেলা। ফলে ভ্রমণের মধ্যে থাকা অবস্থায় খেলোয়াড়দের প্রয়োজন শেষ পর্যন্ত মনোযোগ ধরে রাখা। স্বাভাবিকভাবে মাঠের অনুশীলন ও অনুশীলনের বাইরে কোচকেই নিতে হবে দলকে উজ্জীবিত রাখার বাড়তি দায়িত্ব। এ ছাড়া সময়মতো ট্যাকটিকস বোর্ডের মারপ্যাঁচের খেল তো থাকবেই।