বিপিএল দেখে রোডস যা বুঝছেন

সৌম্যদের পারফরম্যান্স খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছেন রোডস। ছবি: প্রথম আলো
সৌম্যদের পারফরম্যান্স খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছেন রোডস। ছবি: প্রথম আলো
>ছুটি কাটিয়ে স্টিভ রোডস চলে এসেছেন বাংলাদেশে। গভীর দৃষ্টিতে দেখছেন বিপিএলে স্থানীয় ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স কেমন দেখছেন, সেটিই বললেন রোডস

বাংলাদেশ দলের নিউজিল্যান্ড সফর দেরি আছে এখনো। তবে নিউজিল্যান্ড সফরের দল হয়তো দেওয়া হতে পারে এ সপ্তাহেই। কোচ স্টিভ রোডস ছুটি কাটিয়ে চলে এসেছেন বাংলাদেশে। এই মুহূর্তে তিনি সিলেটে, দেখছেন বিপিএলের ম্যাচ। গভীর দৃষ্টিতে দেখছেন স্থানীয় খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স।

টুর্নামেন্টে এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে কারা দৃষ্টি কেড়েছে কোচের? দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে রোডসের বিশ্লেষণে উঠে এল কয়েকজনের নাম, ‌‘আমাদের খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স ওঠা-নামা করছে। কয়েকজন খুবই ভালো খেলেছে। বিশেষ করে কয়েকজন বোলারের নাম বলব যেমন—তাসকিন, শফিউল ও আরও কয়েকজন খুবই ভালো করেছে। স্পিনাররা ভালো করেছে। এতে বোঝা যাচ্ছে আমাদের স্পিন বোলিং কতটা শক্তিশালী। ব্যাটসম্যানরাও কখনো কখনো ভালো করেছে। লিটন সেদিন খুব ভালো খেলেছে। মুশফিক ভালো খেলেছে মিরপুরে। স্থানীয় খেলোয়াড়দের জন্য কাজটা মোটেও সহজ নয়। কখনো কখনো তারা পর্যাপ্ত সুযোগ পাচ্ছে না। অনেক বিদেশি তারকা এখানে আছে। টুর্নামেন্টের বাকি পর্বে তারা আরও ভালো করব, এটাই আশা করছি। সেটি হলে অনেক ভালো হবে।’

মুশফিক-তাসকিন-লিটনের পারফরম্যান্স নিয়ে রোডস খুশি। কিন্তু তাঁকে নিশ্চয়ই ভাবাবে সৌম্য সরকারের পারফরম্যান্স। রাজশাহী কিংসের হয়ে খেলা বাঁ হাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ৫ ম্যাচে করেছেন ৩৫ রান। রাজশাহীর গত ম্যাচে তো একাদশ থেকেই বাদ পড়লেন। সৌম্যর এ রানখরা নিয়ে অবশ্য ভাবতে চান না রোডস। তবে বাঁ হাতি ব্যাটসম্যানের ভূমিকা নিয়ে ভাবাচ্ছে কোচকে। এই বিপিএলেই বিভিন্ন পজিশনে সৌম্যকে ব্যাটিং করতে হচ্ছে। অনেক দিন হলো জাতীয় দলেও তাঁর নির্দিষ্ট ব্যাটিং পজিশন নেই।

সৌম্যর ভূমিকা নিয়ে তাই রোডস সন্দিহান, ‘সৌম্য দুর্দান্ত খেলোয়াড়। যদি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রামে শেষ ওয়ানডেটা (গত অক্টোবরে) দেখেন, কী অসাধারণ এক ইনিংস সে খেলেছে। সে এমন এক খেলোয়াড় যে সব সংস্করণে খেলতে পারে, বিভিন্ন পজিশনে খেলতে পারে। সে কি একজন ওপেনার? সে কি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান? সে কি অলরাউন্ডার? প্রশ্নগুলোর উত্তর এখনো পাওয়া যায়নি। সৌম্য নিজেই এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। আশা করি সে ধারাবাহিক হবে, একটা পজিশনে ধারাবাহিক সফল হবে। তবে সে অসাধারণ খেলোয়াড়, এক সঙ্গে অনেক কিছু করতে পারে।’

সৌম্যকে একটা নির্দিষ্ট পজিশনে খেলানো হয়নি বলেই নয়, বিপিএলে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো স্থানীয় খেলোয়াড়দের ওপর কতটা আস্থা রাখে সেটি নিয়েও আছে প্রশ্ন। মিরপুরে চিটাগং-খুলনার সুপার ওভারেই দেখুন এক মুশফিক বাদে সব বিদেশি খেলোয়াড়দের ওপর আস্থা রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। এ নিয়ে রোডসের কণ্ঠে আফসোসও ঝড়ে পড়ছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে স্থানীয় ক্রিকেটারদের যদি এ ধরনের পরিস্থিতি সামলানোর অভিজ্ঞতা না থাকে, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এ ধরনের পরিস্থিতি কীভাবে সামলাবেন তাঁরা?

তবে রোডস মনে করেন দেশি-বিদেশি বলে নয়, একাদশে টিকে থাকতে হলে দরকার পারফরম্যান্স, ‘বিপিএলে বেশির ভাগ দলের মালিকই তো বাংলাদেশি। আপনাকে তাই মনে করতে হবে স্থানীয় খেলোয়াড়দের নিয়ে তাঁদের ভালো আগ্রহ আছে।। তবুও বলতে হয় তারা এখানে জিততেও এসেছে। যদি দেখেন বিদেশি তারকারা সুযোগ পাচ্ছে, সৌম্য পাচ্ছে না, তাহলে বুঝতে হবে সে রান করতে পারছে না। তাঁরা (দল) চাচ্ছে সে (সৌম্য) রান করুক। এটা আমি বুঝি। অনেক খেলোয়াড়ের সঙ্গে খেলার সুযোগ পেতে পারেন, কিন্তু দলে থাকা ও ভালো করাটা সৌম্যদের ওপর নির্ভর করছে।’