ওয়ার্নার-সাকিব দুজনই যখন শিক্ষাগুরু

আজ শিক্ষাসফর ছিল জাকিরের। ছবি: প্রথম আলো
আজ শিক্ষাসফর ছিল জাকিরের। ছবি: প্রথম আলো
>তরুণ জাকির আলী আজ সিলেট সিক্সার্সের হয়ে দারুণ খেলেছেন। ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে দুর্দান্ত এক জুটি। ম্যাচটা সিলেট জিততে না পারলেও জাকিরের প্রাপ্তি অনেক

জাকির আলী অনীক নামটা খুব বেশি পরিচিত নয় সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলেছেন, ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্ম করেন। সম্ভাবনাময় এই ক্রিকেটারের পরিচিতি ব্যস, এতটুকুই। সেই জাকির আজ ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে দারুণ এক জুটির সঙ্গী হয়েছিলেন। বিপিএলে ঢাকা ডায়নামাইটস আর সিলেট সিক্সার্সের ম্যাচে জাকির-ওয়ার্নার জুটির কল্যাণেই স্কোরবোর্ডে বলার মতো স্কোর তুলেছিল সিলেট। কিন্তু দুর্ভাগ্য, ম্যাচটা জিততে পারেনি। তবে এই ম্যাচটা জাকিরের কাছে ছিল অনেক কিছুই শেখার। প্রথমে ওয়ার্নার, পরে সাকিব আল হাসানের কাছ থেকে এক ম্যাচেই অনেক কিছু শিখলেন এই তরুণ ক্রিকেটার।

জাকির যখন ব্যাটিংয়ে নামেন, সিলেটের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। একপ্রান্ত আঁকড়ে ধরে আছেন ওয়ার্নার। কিন্তু তিনি সঙ্গীহীন হয়ে পড়ছেন। নামী ব্যাটসম্যানরা প্রায় সবাই ডাগআউটে ফিরেছেন। এমন একটা সময় জাকির যখন মাঠে নামলেন তখন সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ভরিয়ে তোলা ক্রিকেট-উৎসাহী দর্শকেরা খুব একটা আশান্বিত হতে পারেননি। কিন্তু সেই জাকিরই ওয়ার্নারকে আশ্বস্ত করলেন। তাঁকে সঙ্গ দিলেন দুর্দান্তভাবে।

ওয়ার্নার বিধ্বংসী হয়ে উঠতে পেরেছেন অন্যপ্রান্তে জাকির নির্ভরতা দিয়েছিলেন বলে। রান করেছেন ২৫, কিন্তু ম্যাচটা তাঁর জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে অনেক দিন। জয়-পরাজয় ছাপিয়ে সেটি খুব করেই ওয়ার্নার-সাকিবকে খুব কাছ থেকে পারফর্ম করতে দেখার কারণে। কী শিখলেন জাকির? ম্যাচ শেষ সংবাদ সম্মেলনে এসে বললেন, ‘একেবারেই চাপে ছিলাম না ডেভের মতো বিশ্বসেরা একজন ক্রিকেটারের সঙ্গে ব্যাটিং করার সময়। ও খালি বলেছে ব্যাটে বল লাগাও। আর কিচ্ছু করতে হবে না। একটা কথা সে বলেছে, “বি স্মার্ট”। তুমি কেবল তোমার খেলাটাই খেলো।’

ওয়ার্নারের ফিটনেস জাকিরের কাছ বিস্ময়ের অপর নাম। এবারের বিপিএলে ফিটনেস নিয়ে অনেক কিছুই ওয়ার্নারের কাছ থেকে শিখেছেন জাকির, ‘আজ সকালেই (শুক্রবার) ডেভ বলছিল ফিটনেসটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তোমার যত বয়সই হোক না কেন, ফিটনেসটা ধরে রাখতে হবে। ম্যাচের পরদিনও জিম করতে হবে। টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দ্রুত শরীর সতেজ করতে হবে। ঠিক সময়মতো ঘুমাতে হবে। তোমার উদ্যম আছে। এবার শক্তি লাগবে। সেটা ফিটনেস ঠিক করেই হবে। জিমে নিয়মিত ওজন তুলে সেটি বাড়াতে হবে।’

ওয়ার্নারের সঙ্গে ব্যাটিংয়ের অভিজ্ঞতা জাকিরের জন্য ছিল অমূল্য, ‘সে আমার সঙ্গে খুব ধীরে ধীরে ইংরেজিতে কথা বলেছে। যেন আমি ওর প্রতিটি কথাই বুঝতে পারি। অনেক কিছু শেখার আছে ওর কাছ থেকে। দলের প্রতি নিবেদনটা দেখুন কী দুর্দান্ত। গত ম্যাচে যখন আমরা জয়ের প্রায় কাছাকাছি তখনো সে ডাইভ দিয়ে বাউন্ডারি ঠেকিয়েছে।’

কেবল ওয়ার্নারই নয়, সাকিবেও মুগ্ধ জাকির, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সাকিব ভাইকেই সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। তিনি সবচেয়ে সেরা। তাঁর সবকিছুই উপভোগ করি। আজ তিনি পাওয়ার প্লে দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছেন। ইনিংসের মাঝখানে যেভাবে খেলার দরকার ছিল, সেভাবেই খেলেছেন। তবে এটা ঠিক, আজ চাচ্ছিলাম সাকিব ভাই যেন দ্রুত আউট হয়ে যান। যদি জিততে পারতাম তাহলে খুবই ভালো লাগত।’