ওপেনারদের ম্যাচে তামিমই সেরা

জুনায়েদের ইনিংসের জবাব তামিমই দিলেন ছবি: প্রথম আলো
জুনায়েদের ইনিংসের জবাব তামিমই দিলেন ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশি ওপেনারদের জন্য দুর্দান্ত এক ম্যাচ গেল। প্রথম দুর্দান্ত ফিফটি করে পথ দেখিয়েছেন জুনায়েদ সিদ্দিক। তামিম ইকবাল স্ট্রাইক রেট ও রানে তাঁকে ডিঙিয়ে যাওয়া ইনিংস খেললেন। তাঁকে দারুণ সঙ্গ দিয়ে স্বভাব বিরুদ্ধ ঠান্ডা মাথার এক ইনিংস খেললেন এনামুল হক। আর ইমরুল কায়েসের এক ক্যামিও শেষ পর্যন্ত ম্যাচের দিক পরিবর্তনে ভূমিকা রাখল। এমন এক দিনে জুনায়েদকে তাই হার মানতে হলো বাকিদের কাছে। খুলনা টাইটানসকে ৩ উইকেটে হারিয়ে দিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস।

ম্যাচটা যে এভাবে বারবার রূপ বদলাতে পারে, সেটা ভাবা কঠিন ছিল। ১০ ওভারে ১০৪ রান তোলা কুমিল্লা তামিমকে হারাল ১৩তম ওভারের প্রথম বলে। ১৫তম ওভারের প্রথম বলেও সামসুর রহমান বিদায় নিলেন রান আউট হয়ে। এই ১৩ বলের মধ্যে কুমিল্লার স্কোরবোর্ডে যোগ হয়েছে ১৪ রান, উইকেটের ঘরে শূন্যের বদলে জায়গা নিয়েছে ৩। ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ১৫ ওভারের পরই এভাবে পথ হারিয়েছিল খুলনা। কুমিল্লাও কি তবে সে পথেই যাচ্ছে?

কার্লোস ব্রাফেটের পরের বলেই ছক্কা মেরে পরিস্থিতি একটু ঠান্ডা করলেন ইমরুল কায়েস, পরের বলেই আরেক ছক্কায় বোঝালেন তামিম-এনামুলের বিদায়েও কোনো সমস্যা হবে না কুমিল্লার। বাদবাকিরা সবাই মিলে দলকে এ যাত্রা পার করিয়ে দিয়েছেন।

শুরুটা অবশ্য অন্যরকম ছিল। প্রথম দুই ওভারে একটি করে চার মেরেও তামিম-এনামুল মাত্র ১০ রান করতে পেরেছেন। তৃতীয় ওভারেই তামিম তাই বাড়তি কিছু করে দেখাতে চাইলেন। জুনায়েদ খানকে হুক করে ছক্কা মেরে শুরু হলো, ওভারের শেষ হলো আরও ২ চারে। তামিমের উগ্রমূর্তি সবচেয়ে ভালোভাবে দেখা গেল ব্রাফেটের ওভারে। ষষ্ঠ ওভারে তামিমের চারটি চারসহ এল ১৮ রান। পাওয়ার প্লেতে ৫৮ রান পেল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। তবু খুলনার চেয়ে ৭ রান পিছিয়ে ছিল তারা।

খুলনার হয়ে যা করতে পারেননি আল আমিন ও জুনায়েদ সিদ্দিক। সেটাই করলেন তামিম ও এনামুল হক। পঞ্চাশোর্ধ্ব জুটিটা এক শ পার করিয়েছেন দুজন। সেটাও রান তোলার গতিতে একটুও ছাড় না দিয়ে। অষ্টম ওভারে ২৮ বলে ফিফটি পেয়ে যাওয়া তামিম দশম ওভারে আল আমিনকে মারলেন আরও তিন চার। কিন্তু ১২ চার ও এক ছক্কায় ৭৩ রানের (৪২ বলে) ইনিংসটা শেষ হলো জুনায়েদের বলে। মিড উইকেটে তামিম ফেরার পরের ওভারেই ফিরেছেন এনামুল (৪০)।

৪ ওভারে মাত্র ২৯ রান দরকার ছিল কুমিল্লার। এমন সহজ সমীকরণকে কঠিন বানিয়ে দিলেন লিয়াম ডসন (৪) ও ইমরুল কায়েস। পর পর দুই বলে আউট হয়ে গেলেন দুজন। এর মাঝে ১১ বলে ২৮ রান তোলা ইমরুলের বিদায়ই চিন্তায় ফেলে দিয়েছে কুমিল্লাকে। ১৭তম ওভারে মাত্র ১ রান তুলতে পেরেছে দলটি! তবু উইকেটে শহীদ আফ্রিদি ও থিসারা পেরেরার মতো দুজন ব্যাটসম্যান থাকায় দুশ্চিন্তা আতঙ্কে রূপ নেয়নি।

পরের দুই ওভারে একটি চার ও ছক্কায় সমীকরণটা আবার সহজ বানালেন আফ্রিদি। আবার সেই আফ্রিদিই আকাশে বল তুলে ফিরলেন ডাগআউটে। কুমিল্লা তখনো ১৩ রান দূরে, হাতে আছে ৯ বল। থিসারা পেরেরা ২ বলে ৫ রান করে চাপ কমালেন, জিয়াউর রহমান শেষ বলে গোল্ডেন ডাক নিয়ে আবার বাড়ালেন চাপ!
শেষ ওভারের প্রথমেই ওয়াইড, পরের বলে ডট। দ্বিতীয় বলে এক রান নিলেন সাইফউদ্দীন। ৪ বলে দরকার ৬ রান। হাফ ভলি পেয়ে একস্ট্রা কভার দিয়ে বুলেট ছোটালেন পেরেরা। ফিল্ডার দুই পায়ের বেশি এগোনোর সুযোগ পেলেন না। পরের বলটা গ্যালারিতে থাকা গোটা কয়েক দর্শককে ক্যাচ ধরার প্র্যাকটিস করালেন পেরেরা। ৭ বলে ১৮ রান করে ২ বল আগে দলকে জিতিয়ে ফেরালেন শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার।