রাজশাহীর এ কী দশা!

সিলেটের হয়ে ২ উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। ছবি: প্রথম আলো
সিলেটের হয়ে ২ উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। ছবি: প্রথম আলো
>বিপিএলে আজ সিলেট সিক্সার্সের কাছে ৭৬ রানে হেরেছে রাজশাহী কিংস

টি-টোয়েন্টি সংস্করণে প্রতিপক্ষ তুলেছে ১৮০ রান। তাড়া করতে নেমে শুরুটা কেমন হওয়া উচিত? বিধ্বংসী না হলেও অন্তত বলের চেয়ে রানসংখ্যার ব্যবধান একটু বেশি রাখা উচিত। তাতে শেষ ১০ ওভারে অন্তত জয়ের ভালো সুযোগ থাকে। এই হিসেবে সিলেটের স্কোর তাড়া করতে নেমে রাজশাহী কিংস ইনিংসের প্রথম ৬ ওভারের মধ্যেই হারের গন্ধ পেয়েছে!

তৃতীয় ওভারের মধ্যে ১৬ রান তুলতে পরেছে ২ উইকেট। রাজশাহীর দুই ওপেনার লরি ইভান্স ও মুমিনুল হককে তুলে নিয়েছেন সিলেটের পেসার সোহেল তানভীর ও তাসকিন আহমেদ। আর ৬ ওভার শেষে রাজশাহীর আর কোনো উইকেট না পরলেও স্কোরবোর্ডে রান উঠেছে মাত্র ৩৫। অর্থাৎ ৯৪ বলে দরকার ১৪৬। পাহাড়সম এই চাপ থেকে রাজশাহীর ব্যাটসম্যানরা আর বের হতে পারেননি। ফলটা তাই অনুমিতই ছিল। সিলেটের কাছে বড় ব্যবধানে হেরেছে রাজশাহী।

১০ ওভার শেষে রাজশাহীর স্কোর ৩ উইকেটে ৬৬। ১২ রান করা রায়ান টেন ডেসকাটকে অষ্টম ওভারে ফিরিয়েছেন সিলেট অধিনায়ক অলক কাপালি। দলে ফেরা ফজলে মাহমুদ এক প্রান্ত আগলে ফিফটি তুলে নিলেও রাজশাহীর ব্যাটিং দেখে কখনোই দলটিকে জয়ের পথে আছে বলে মনে হয়নি। শেষ ৬০ বলে ১১৫ রান দরকার ছিল তাঁদের। তখন দলটির সমর্থকদের মনে হতেই পারে, শুরুটা গতিময় করলে ইনিংসের বাকি অর্ধেক পথে এতটা চাপে পড়তে হতো না।

প্রথম ছয় ওভারে রাজশাহী যদি হারের গন্ধ পেয়ে থাকে তাহলে ১৫তম ওভারটি হার নিশ্চিতে। সিলেট স্পিনার মোহাম্মদ নওয়াজ এই ওভারে নিয়েছেন ৩ উইকেট। প্রথম দুই বলে ফজলে মাহমুদ (৫০) ও ক্রিস্টিয়ান জঙ্কারকে ফেরানোর পর পঞ্চম বলে মেহেদী হাসান মিরাজকেও তুলে নেন নওয়াজ। ৭ উইকেটে ৯০ রানের ধ্বংসস্তূপে পরিণত রাজশাহী তখন জয় থেকে ৩০ বলে ৯১ রানের দূরত্বে। এরপর আর ম্যাচের কিছু থাকে!

হারের আনুষ্ঠানিকতা বলতে যেটুকু বাকি ছিল সে পথটুকু রাজশাহীর লোয়ার অর্ডার পারি দিয়েছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। রাজশাহীর শেষ ছয় ব্যাটসম্যানের স্কোর দেখুন—জঙ্কার (১), প্রসন্ন (২), মিরাজ (১), আরাফাত সানি (৮), কামরুল ইসলাম রাব্বি (২) ও মোস্তাফিজ ১ রানে অপরাজিত ছিলেন। ৪ বল হাতে রেখেই ১০৪ রানে গুটিয়ে যায় রাজশাহী। ৭৬ রানের এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলে খুলনা টাইটানসকে টপকে ছয়ে উঠে এল সিলেট। সিলেটের হয়ে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন দুই পাকিস্তানি নওয়াজ ও সোহেল তানভীর।

এই ম্যাচের আগে পয়েন্ট টেবিলে বেশ ভালো অবস্থানেই ছিল রাজশাহী। শীর্ষ চার দলের মধ্যে থাকার সম্ভাবনা উজ্জ্বল ছিল তাঁদের। কিন্তু এই হারে রাজশাহী থাকল টেবিলের পাঁচে। ৯ ম্যাচে তাঁদের সংগ্রহ ৮ পয়েন্ট। চারে থাকা রংপুর রাইডার্সের পয়েন্টসংখ্যাও ৮, তবে রানরেটে এগিয়ে চারে রয়েছে দলটি। অর্থাৎ ম্যাচটি জিতলে চারে উঠে যেত রাজশাহী। কিন্তু পা হড়কানোয় এখন সামনের সব ম্যাচই দলটির জন্য অনেক সমীকরণ মেলানোর লড়াই।