লড়াই ছাপিয়ে ভ্রাতৃত্ব, প্রতিযোগিতা ছাপিয়ে বন্ধুত্ব

সাকিব-মাশরাফির আড্ডা। ছবি: শামসুল হক
সাকিব-মাশরাফির আড্ডা। ছবি: শামসুল হক
>কাল বিপিএলে রংপুর-ঢাকার আগুনে লড়াই। লড়াইয়ের আগে চুটিয়ে আড্ডা দিলেন দুই দলের দুই অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ও সাকিব আল হাসান।

দেখা হয়ে গেল দুজনের। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুশীলন পর্বে মাশরাফি বিন মুর্তজা আর সাকিব আল হাসান তৈরি করলেন দারুণ কিছু মুহূর্ত। চুটিয়ে আড্ডা দিলেন। দুই পুরোনো সৈনিকের এই আড্ডা খেলাবিহীন দিনটিতে তৈরি করল অন্য রকম এক ছবির ফ্রেম। অনুশীলন ছাপিয়ে সেটিই হয়ে উঠল আলোকচিত্রীদের ক্যামেরা আর লেন্সের লক্ষ্য। কেবল গল্প করেই থেমে গেলেন না তাঁরা। একই গাড়িতে করে কোথায় যেন গেলেনও।

সকালে অনুশীলন দেখতে এসে অনেকেই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। স্টেডিয়ামের প্যাভিলিয়নের দিকটায় দুই দিকে অনুশীলনের নেট। একদিকে ঢাকা, অন্যদিকে রংপুর। টুর্নামেন্টের বিরতির দিন বলেই হয়তো সবখানে একটু ছাড়া ছাড়া ভাব। দুদলের কেউ কেউ হোটেলেই থেকে গিয়েছিলেন। বাকিরা নেটে হালকা ব্যাটিং, একটু ক্যাচিং আর স্ট্রেচিং করে সময় কাটালেন। রংপুর অধিনায়ক মাশরাফি মাঠে ঢুকেই চুটিয়ে আড্ডা মারলেন সাংবাদিকের সঙ্গে। মাশরাফি এমনই। সাকিব আবার এই জায়গায় কিছুটা কাঠখোট্টা। আড্ডা, গল্পের খোশমেজাজে থাকলে ভালো, না থাকলে পুরোদস্তুর পেশাদার।

আগামীকাল মুখোমুখি হচ্ছে সাকিবের ঢাকা আর মাশরাফির রংপুর। ছবি: শামসুল হক
আগামীকাল মুখোমুখি হচ্ছে সাকিবের ঢাকা আর মাশরাফির রংপুর। ছবি: শামসুল হক

মাশরাফি যখন আড্ডা মারছেন, তখন সাকিব প্যাড-ট্যাড পরে নেটে ব্যাটিং অনুশীলনে ব্যস্ত। চোখে-মুখে বেশ একাগ্রতাও। বিপিএলে দুর্দান্ত শুরুর পরও শীর্ষ অবস্থান থেকে সরে গেছে দল। শেষ দুটি ম্যাচে দল হেরেছে জিততে জিততে। রংপুরের বিপক্ষে পরের ম্যাচটা তাই বেশ গুরুত্বপূর্ণ। জিততে পারলে আবার শীর্ষে ওঠা যাবে। হারলে সমস্যা। সাকিবের বাড়তি অনুশীলনটা তাই কারও দৃষ্টি এড়াল না।

মজাটা হলো অনুশীলন শেষে। ঢাকা ডায়নামাইটসের ড্রেসিং রুমের সামনে দেখা হয়ে গেলে মাশরাফি আর সাকিবের। ‘আড্ডাবাজ’ মাশরাফি কি আর এত সহজে ছেড়ে দেন সাকিবকে? শুরু হয়ে গেল হাসি-খুনসুটি। এখানে সাকিবও বেশ খোশমেজাজে। ড্রেসিং রুমের বারান্দায় দাঁড়িয়ে, বসে বেশ কিছুক্ষণ চুটিয়ে আড্ডা মারলেন দুজন। তারপর বেরিয়ে গেলেন স্টেডিয়াম ছেড়ে। রংপুর রাইডার্সের লোগো লাগানো গাড়িতে চড়ে বসলেন সাকিব-মাশরাফি দুজনই। সেখানে ছিলেন রাইলি রুশোও।

মাশরাফি-সাকিবের ভ্রাতৃত্বের সম্পর্কটা অনেক দিনের। ছবি: শামসুল হক
মাশরাফি-সাকিবের ভ্রাতৃত্বের সম্পর্কটা অনেক দিনের। ছবি: শামসুল হক

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারের আগে থেকেই সাকিব মাশরাফিকে চেনেন। দুজনের সম্পর্কের গতিপথের সঙ্গে মিশে আছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের নানা বাঁকও। মাশরাফির কাছ থেকেই সাকিবের নেতৃত্বভার নেওয়া, ২০১১ বিশ্বকাপে মাশরাফির বাদ পড়া, দুজনের সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে কত গল্প লেখা হলো। সব ধুলোর সঙ্গে মিশে গেছে। মাশরাফি আবারও বাংলাদেশের ক্রিকেটে ফিরে এসেছেন মহানায়ক হয়ে। তবে সাকিবের কাছে বরাবরই তিনি বড় ভাই। এবারের বিপিএলের দুই টপ ফেবারিট, পরদিন মুখোমুখি, যে ম্যাচ নিয়ে উত্তেজনার আবহ একটা থাকছেই...কোনো কিছুই যেন স্পর্শ করতে পারল না দুজনকে।