৬৮ বছর বয়সে ক্রিকেট থেকে অবসর!

এই বয়সেও খেলে যাচ্ছিলেন ক্রিকেট! ফাইল ছবি
এই বয়সেও খেলে যাচ্ছিলেন ক্রিকেট! ফাইল ছবি
>ইউয়েন চ্যাটফিল্ডের অভিষেক হয়েছিল ১৯৭৫ সালে। ১৯৮৯ সালের পর আর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা হয়নি। তবে গত ৩০ বছর ক্লাব ক্রিকেট খেলে গেছেন চুটিয়ে

অভিষেকেই সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। তা অভিষেকে সাড়া ফেলে দেওয়ার অনেক উপায়ই আছে। কেউ ব্যাট হাতে দারুণ কিছু করেন, কেউ বল হাতে। ফিল্ডিংয়ে দারুণ কিছু করেও সেটা হতে পারে। কিন্তু ইউয়েন চ্যাটফিল্ড যে কারণে সাড়া ফেলেছিলেন, সেটার সঙ্গে অন্য কিছুর তুলনা চলে না।

ব্যাট বা বল হাতে কিছু করে নয়, চ্যাটফিল্ড নজর কেড়েছিলেন অভিষেক টেস্টেই মরতে বসে! ১৯৭৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে অকল্যান্ডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক ২৪ বছর বয়সী কিউই পেসার চ্যাটফিল্ডের। ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্যাট করছিলেন। হঠাৎই ইংলিশ পেসার পিটার লেভারের একটি বাউন্সারে চোয়ালে আঘাত পান। সঙ্গে সঙ্গেই মাটিতে পড়ে যান চ্যাটফিল্ড, কিছুক্ষণের জন্য শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় তাঁর। সবাই ধরে নিয়েছিল তিনি মারা গেছেন। ভাগ্যিস, ইংল্যান্ড দলের তখনকার ফিজিও বার্নান্ড টমাস মাঠে ছিলেন। তাঁর চেষ্টাতেই ধীরে ধীরে আবার স্বাভাবিক হন চ্যাটফিল্ড।

সেই চ্যাটফিল্ডের গল্প হঠাৎ আবার আসার কারণ এত দিনে ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন তিনি। ৬৮ বছর বয়সে কাল ক্রিকেট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক কিউই পেসার। না, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নয়, ১৯৮৯ সালের পর সেটা তাঁর আর খেলা হয়নি। কিন্তু এই ৩০ বছর ক্লাব ক্রিকেট খেলে গেছেন চুটিয়ে। এবার সেই পাটটাও চুকিয়ে ফেললেন।

বল হাতে রিচার্ড হ্যাডলির জুটি ছিলেন চ্যাটফিল্ড। ক্যারিয়ারজুড়ে লাইন-লেন্থ ধরে রেখে বল করার বেশ খ্যাতিও ছিল নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৪৩টি টেস্টে ১২৩ ও ১১৪ ওয়ানডেতে ১৪০ উইকেট নেওয়া পেসারের। তারপরও আসলে পুরো ক্যারিয়ারেই হ্যাডলির ছায়া হয়ে থাকতে হয়েছে। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট অবশ্য তাঁকে অভিষেকের ওই ঘটনা ছাড়াও আরেকটি কারণেও বিশেষভাবে মনে রাখবে। ১৯৮৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ উইকেটে ৫০ রানের জুটি গড়ে কিউইদের দারুণ এক টেস্ট জিতিয়েছিলেন। এগারো নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে সেই ম্যাচে করেছিলেন ২১ রান।

আন্তর্জাতিক ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ছাড়ার পরও নিজের শহরের ক্লাব নায়েনায়ে ওল্ড বয়েজের হয়ে নিয়মিত খেলে গেছেন এত দিন। শুধু খেলার জন্য খেলা নয়, রীতিমতো পারফর্ম করেই দলে ছিলেন। ‘নায়েনায়ে এক্সপ্রেস’ খেতাবটা এই ক্লাবে খেলেই পেয়েছেন। কাল জীবনের শেষ ইনিংসে শূন্য রানে আউট হওয়ার পর মনে হয়েছে, এবার সময় হয়েছে বিদায় বলার। স্থানীয় সাংবাদিকদের সেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে অনুরোধ করেছেন, শেষ ইনিংসে তাঁর শূন্য রানে আউট হওয়াটা যেন শিরোনামে না আসে।

‘তাহলে কী শিরোনাম দিলে আপনি খুশি হবেন?’—সাংবাদিকেরা জানতে চান তাঁর কাছে। চ্যাটফিল্ড হেসে বলেন, ‘লিখে দিন, নায়েনায়ে এক্সপ্রেসের বাষ্প শেষ হয়ে গেছে।’
এ কারণেই চ্যাটফিল্ড আলাদা!