'প্রথম' পাঁচ হাজারি তামিমের কাছাকাছি সেই বন্ধু সাকিবই

তামিম ইকবাল। ছবি: প্রথম আলো
তামিম ইকবাল। ছবি: প্রথম আলো
>প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ৫ হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়েছেন তামিম।

২০১৩ সালের কথা, ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের লড়াইটা বেশ জমে উঠেছিল সেবার। এই সিরিজে তামিম ইকবাল শীর্ষে উঠে যান তো আরেক সিরিজে সাকিব আল হাসান। দুই বন্ধুর উপভোগ্য এই ‘ইঁদুর-দৌড়’ বেশ কয়েক বছর দেখেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। জমজমাট এই লড়াইয়ে সাকিবকে পেছনে ফেলে তামিম শীর্ষে উঠেছেন অনেক দিন হয়েছে। অনেকটা ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছেন। ওয়ানডেতে দুজনের রানের পার্থক্য প্রায় ১ হাজার। তামিমের রান ৬৪৫০, সাকিবের ৫৫৭৭।

তামিম শীর্ষে ওঠার আরেকটি লড়াই শুরু করেছিলেন ২০১৬ সালে। সেটি বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপের আরেক স্তম্ভ মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে। সে বছর লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে বলতে গেলে প্রতি ম্যাচেই শীর্ষে ওঠার মিউজিক্যাল খেলা চলেছে তামিম-মুশফিকের। শেষ পর্যন্ত সেই লড়াইয়েও তামিমই বিজয়ী। আসলে বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপনই যেন এখন তামিম। টেস্ট, ওয়ানডে ও স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি—সবখানেই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান করা ব্যাটসম্যান বাঁহাতি এই ওপেনার।

৩০.১১ গড়ে এবারের বিপিএলে ১০ ম্যাচে তামিমের রান ২৭১, দুটি ফিফটি। এটাকে খুব একটা খারাপ কেউ বলবেন বলে মনে হয় না। কিন্তু যাঁর ব্যাটে দর্শকেরা রানের প্রবাহ দেখতে অভ্যস্ত, নামটা সেই তামিম বলেই হয়তো অনেকে বলছেন, বিপিএলটা এবার বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানের ভালো কাটছে না! তা যে যা-ই বলুক, কাল চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে পাওয়া এবারের বিপিএলের দ্বিতীয় ফিফটিতে একটি মাইলফলকে পৌঁছে গেছেন তামিম। প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে পেয়েছেন ৫ হাজার রান। কালকের অপরাজিত ৫৪ রানসহ স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে এখন তাঁর রান ৫০২৯। তামিম এই রান করেছেন ১৭টি দলের হয়ে। বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি দল ছাড়াও তামিম খেলেছেন বাংলাদেশ জাতীয় দল, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড একাদশ, বাংলাদেশ একাদশ, আইসিসি বিশ্ব একাদশ, ইউসিবি-বিসিবি একাদশ ও ওয়ার্ল্ড ইলেভেনের হয়ে।

স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে রানের হিসেবে তামিমের কাছাকাছি সেই বন্ধু সাকিবই। বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের রান ৪৬৬৭। ৩২৬৭ রান নিয়ে তৃতীয় স্থানে মুশফিক। সেঞ্চুরি আর ফিফটিতেও অন্য দুজনের চেয়ে এগিয়ে তামিম। টি-টোয়েন্টিতে সাকিব ও মুশফিকের কোনো সেঞ্চুরি নেই, ফিফটি যথাক্রমে ১৭ ও ১৯টি। তামিমের সেখানে ২টি সেঞ্চুরি ও ৩৩টি ফিফটি।

স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি থেকে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে আলাদা করে ফেললে সেখানেও তামিম সবার ওপরে। ৭১ ম্যাচে একটি সেঞ্চুরিসহ ২৩.৫৭ গড়ে তামিমের রান ১৫৫৬। এখানেও বন্ধুর পিছু পিছু সাকিব। ২৩.৩৪ গড়ে করেছেন ১৪৭১ রান। ম্যাচ খেলেছেন তামিমের চেয়ে একটি বেশি। ওয়ানডের মতো টেস্টেও শীর্ষ তিনে তামিম, সাকিব আর মুশফিক থাকলেও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মুশফিককে পেছনে ফেলে তৃতীয় স্থানে মাহমুদউল্লাহ। ২৩.১৬ গড়ে ১২৫১ রান তাঁর। ১১৩৮ রান নিয়ে এরপরই মুশফিক।

এত অর্জন তামিমের, তবু একটা আফসোস তামিম-ভক্তরা করতেই পারেন। একটা জায়গায় যে তিনি বাংলাদেশিদের মধ্যে শীর্ষে নেই! সেটি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে। সেখানে তুষার ইমরানের জয়জয়কার। ১৭১ ম্যাচে ১১৪৩৩ রান নিয়ে সবার শীর্ষে জাতীয় দলের সাবেক ব্যাটসম্যান। তামিমের রান তাঁর অর্ধেকের চেয়ে কিছু বেশি, ৬৩৫৯। প্রথম শ্রেণির ম্যাচও অবশ্য তুষারের চেয়ে অনেক কম খেলেছেন তামিম, মাত্র ৮৬টি!

টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের শীর্ষ পাঁচ:

   খেলোয়াড়

রানসংখ্যা

তামিম ইকবাল

৫০২৯

সাকিব আল হাসান

৪৬৬৭

মাহমুদউল্লাহ

৩৪৩৪

মুশফিকুর রহিম

৩২৬৭

সাব্বির রহমান

২৮১৭