ঘুমিয়েই মিনিটে ২৭ লাখ টাকা!

জুলিয়ান ফোবার্ট। যখন রিয়ালে ছিলেন। ছবি: এএফপি
জুলিয়ান ফোবার্ট। যখন রিয়ালে ছিলেন। ছবি: এএফপি

কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে। ফুটবলের ক্ষেত্রেও তাই। কিন্তু যদি এমন হয় আপনি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে আয় করছেন! কেমন হয়? তেমনটি হয়েছিল দশ বছর আগে, জুলিয়ান ফোবার্টের সঙ্গে। 

২০০৮-০৯ মৌসুমের কথা। রিয়াল মাদ্রিদ কোচ হুয়ান্দে রামোস একজন রাইট উইঙ্গার খুঁজছিলেন। ফেব্রুয়ারিতে ইংলিশ ক্লাব ওয়েস্টহাম থেকে ফোবার্টকে ধারে দলে ভেড়ায় রিয়াল মাদ্রিদ। রিয়ালের হয়ে মাঠে নামার স্বপ্ন দেখে এসেছিলেন এই উইঙ্গার, কিন্তু প্রায় পুরো সময় বেঞ্চেই কাটাতে হয় ফোবার্টকে। অর্ধেক মৌসুম জুড়ে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন মাত্র দুই ম্যাচ!

ফোবার্ট সেই দুই ম্যাচে খেলতে পেরেছেন মোট ষাট মিনিটের কিছু বেশি সময়। বেঞ্চে শুয়ে-বসে বেশ আয়েশি মৌসুমই কাটিয়েছিলেন এই ফরাসি উইঙ্গার। তবে ফোবার্টের সবচেয়ে মজার ঘটনা বিবেচনা করা হয় ভিলারিয়ালের বিপক্ষে এক ম্যাচে। রিয়াল যখন হারছিল মাঠেই ছিলেন তিনি। কিন্তু দল যে হারছে এ নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা ছিল না তাঁর। ফোবার্ট নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছিলেন!

দলের অন্য খেলোয়াড়দের যখন বেতন পেতে ঘাম ঝড়াতে হচ্ছে তখন ফোবার্টকে বলতে গেলে প্রায় কিছুই করতে হয়নি। নিশ্চিন্ত মনে ফুরফুরে মেজাজে সপ্তাহ শেষে নিজের বেতন বুঝে নিয়েছেন। খেলতে যে তাঁকে নামানো হয়নি এই নিয়েও তাঁর কোনো আক্ষেপ থাকার কথা নয়। অন্তত পারিশ্রমিকের কথা ভেবে। কারণ বেঞ্চে বসে থাকা অবস্থায় তাঁর বেতন ছিল মিনিট প্রতি প্রায় সাতাশ লাখ টাকা। অর্থাৎ ফোবার্ট যখন বেঞ্চে ঘুমোচ্ছেন, তখনো তাঁর বেতন থেমে ছিল না। জমা পড়েছে তাঁর ব্যাংক হিসাবে। আর তাঁর ঘুমিয়ে পড়ার সেই ছবি পড়ে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিল সংবাদমাধ্যম থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ফোবার্ট অবশ্য সেই ঘটনা নিয়ে জানিয়েছিলেন, ‘আমি শুধু চোখ দুটোকে বিশ্রাম দিচ্ছিলাম।’

সেদিনের সেই ‘বিশ্রাম’-এর পর ফোবার্টের রিয়াল ক্যারিয়ারে আর উল্লেখযোগ্য কোনো ঘটনা ঘটেনি। তাঁকে রিয়াল মাদ্রিদ দলে নেওয়ার পর নানারকম সমালোচনা হয়েছিল। সেই প্রসঙ্গে ফোবার্ট বলেন, ‘আমি মনে করিনা রিয়াল মাদ্রিদ ঠাট্টা করার জন্য কোনো খেলোয়াড় কেনে। যাই ঘটুক না কেন, আমার জীবনবৃত্তান্তে সব সময়ই রিয়াল মাদ্রিদের নাম থাকবে।’সেই মৌসুম শেষে রিয়াল ছাড়েন ফোবার্ট।