নির্বাচন এলেই তাদের কথা মনে পড়ে বাফুফের!

গতকালের সভা শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান। ছবি: বাফুফে
গতকালের সভা শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান। ছবি: বাফুফে
>

আগামী বছরের এপ্রিলে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন। প্রায় ১৫ মাস আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে নির্বাচনের ডামাডোল।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচনে জেলা ফুটবল সংস্থা (ডিএফএই) সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাই ডিএফএকে সন্তুষ্ট করার একটা প্রতিযোগিতাই যেন শুরু হয়েছে। পরশুই যেমন ডিএফএ সভাপতিদের সভা করেছেন বাফুফে সভাপতি ও পরবর্তী নির্বাচনের সভাপতি প্রার্থী হতে যাওয়া কাজী সালাউদ্দিন। গতকাল তাঁর নেতৃত্বে বাফুফের কর্মকর্তারা দেখা করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসানের সঙ্গে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনে প্রায় তিন ঘণ্টা হয়েছে এই বৈঠক।

মূলত ডিএফএর জন্য তিনটি দাবি তুলে ধরা হয়েছে মন্ত্রীর কাছে। প্রথম দাবি, প্রতিটি ডিএফএকে বছরে ১২ লাখ টাকা করে সরকারি অনুদান দিতে হবে। মজার ব্যাপার, সরকার জেলা ক্রীড়া সংস্থাগুলোকেই এখন বছরে পাঁচ-ছয় লাখ টাকার বেশি অনুদান দেয় না। সেটিও ২০-২২টি খেলা পরিচালনার জন্য। ফুটবলে ডিএফএ ৬৪টি (কিশোরগঞ্জ ডিএফএ কার্যকর নয়), বিভাগে ৮টি। সবার জন্য বছরে ১২ লাখ টাকা চাওয়ার অর্থ শুধু ফুটবলের জন্য সরকারকে বরাদ্দ দিতে হবে ৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। বাফুফে কতটা কী পায়, তা দেখার কৌতূহল থাকছেই।

বাফুফের দ্বিতীয় চাওয়া, সব ডিএফএর জন্য নিজস্ব অফিস। এ দাবি যৌক্তিক ও খুব জরুরি। কারণ, জন্মের ১১ বছর পরও ডিএফএগুলোর বেশির ভাগই ঠিকানাবিহীন ঠুঁটো জগন্নাথ। আর তৃতীয় চাওয়া, ফুটবলের জন্য স্থানীয় মাঠটা নির্দিষ্ট একটা সময় পর্যন্ত বরাদ্দ পাওয়া। এখন মাঠ থাকে জেলা ক্রীড়া সংস্থার অধীনে। অনেকগুলো খেলা তারা চালায়। তবে সমন্বয় করে খেলা চালিয়ে নেয় বেশির ভাগ ডিএফএ।

ডিএফএ কর্মকর্তারা এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তৃণমূলে ফুটবল জাগাতে বাফুফের আরও সক্রিয় ভূমিকা চেয়েছেন তাঁরা। কিন্তু বাফুফের ওপর তো কোনো আস্থা নেই জেলা ফুটবল কর্তাদের। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ডিএফএ সদস্য তৌফিকুল ইসলাম তোফা বলেছেন, ‘ফুটবল ফেডারেশনের কথা ও কাজে মিল নেই। আর কত ফাঁকি দেবে ফেডারেশন।’ তবে এটাও ঠিক, কাজী সালাউদ্দিনের সময়ই ফুটবলের জন্য অনুদান পেয়েছে জেলা।

সভা শেষে নড়াইল ডিএফএর সভাপতি এবং জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠকদের সংগঠক ফোরামের মহাসচিব সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান মিকুর কণ্ঠ ছিল বেশ ঝাঁজালো, ‘টাকা বড় কথা নয়। আসলে তৃণমূলের জন্য তেমন কিছুই করেনি ফুটবল ফেডারেশন। একটা দিকনির্দেশনাও দেয়নি। এমন মিটিং অনেক হয়েছে। কিন্তু কোনো ফল দেখিনি।’

তবে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জেলার ফুটবল উন্নয়নে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। আর্থিক বরাদ্দের ব্যাপারে তাঁর কথা, পুরোটা না হোক, কাছাকাছি যেতে পারলেও ভালো। সেই চেষ্টা করবে মন্ত্রণালয়।