পাকিস্তানকে 'না'-ই বলে দিল অস্ট্রেলিয়া

বিশ্ব একাদশের হয়ে একগাদা তারকাকে পাকিস্তানে নিয়ে গিয়েও আস্থা ফেরাতে পারেনি পিসিবি। ফাইল ছবি
বিশ্ব একাদশের হয়ে একগাদা তারকাকে পাকিস্তানে নিয়ে গিয়েও আস্থা ফেরাতে পারেনি পিসিবি। ফাইল ছবি

অতি-আশাবাদী ছাড়া কেউ হয়তো ভাবেনি, পাকিস্তান যা ভাবছে তা সম্ভব হবে। হলোও না। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের শেষ আশাটুকুও মিশে গেল মাটিতে। আজ অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তানের ৫ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের সূচি প্রকাশ করেছে পিসিবি। সেই সূচি বলছে, সব কটি ম্যাচই হবে আরব আমিরাতে। পিসিবির আশা ছিল, অন্তত দুটি ম্যাচ পাকিস্তানের ভেন্যুতে খেলতে। ১৯৯৮ সালের পর অস্ট্রেলিয়া কখনোই পাকিস্তান সফর করেনি। অস্ট্রেলিয়াকে নিজ দেশে আতিথ্য দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের অপেক্ষা তাই বাড়ছে।

অনেক বিলম্ব শেষে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে শুরু এই সিরিজের সূচি প্রকাশ করেছে পিসিবি। দেরির কারণ ছিল একটাই। শেষ পর্যন্ত ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে (সিএ) রাজি করানোর চেষ্টা করা। কিন্তু তাতে কাজ হলো না। সিএ অবশ্য আগেই আভাস দিয়ে রেখেছিল, অন্তত এইবার পিসিবির আশা পূরণ হচ্ছে না।

পিসিবির আন্তর্জাতিক ক্রিকেট পরিচালক জাকির খানের কণ্ঠে তাই হতাশা, ‌‘গত ১৮ মাসে আমরা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সিরিজ আর পাকিস্তান সুপার লিগের ম্যাচ আয়োজন সফলভাবে করেছিলাম। পিসিবি আশাবাদী ছিল, এতে করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া রাজি হবে এই সিরিজের কিছু ম্যাচের জন্য তাদের দল পাঠাতে। কিন্তু পাকিস্তানের ক্রিকেটপাগল সমর্থকদের জন্য দুঃসংবাদ হলো, ১৯৯৮ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার কোনো দলকে চোখের সামনে খেলতে দেখার জন্য তাদের এই অপেক্ষাটা আরও বাড়ছে।’

অস্ট্রেলিয়া ঐতিহাসিকভাবেই পাকিস্তানে সফর করেছে খুব কম। ২০০২ সালের সফরটিও তারা শ্রীলঙ্কা ও আরব আমিরাতে গিয়ে খেলেছে। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের ওপর সন্ত্রাসী আক্রমণের ঢের আগে থেকেই দেশটির নিরাপত্তা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সংশয় ছিল। আর ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কা দলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে বলতে গেলে পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তো নির্বাসিতই। তবে পিসিবি চাইছে, ১০ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর এখন পরিস্থিতি বদলাতে বিদেশি দলগুলোকে আস্থার মধ্যে আনতে।

বর্তমান অস্ট্রেলিয়া ওয়ানডে দলের বেশ কজন ক্রিকেটার এরই মধ্যে পাকিস্তানে এসে খেলে গেছেন, যাঁদের মধ্যে আছেন বর্তমান টেস্ট অধিনায়ক টিম পেইনও। সতীর্থ জর্জ বেইলি ও বেন কাটিংয়ের সঙ্গে বিশ্ব একাদশের হয়ে লাহোরে তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন পেইন। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ে কিছু ম্যাচ খেলে গেছে দেশটিতে। পিএসএল টি-টোয়েন্টি লিগের কিছু ম্যাচও পাকিস্তানে আয়োজন করা হয়েছিল।

অস্ট্রেলিয়া দলকে দেশটির নিরাপত্তাব্যবস্থা নিজ চোখে দেখে আসার আরজি জানিয়েছিল পিসিবি। বোর্ডের বিশ্বাস ছিল, নিরাপত্তা কর্মকর্তারা একবার নিজ চোখে এসে দেখে ঘুরে গেলে সিএ মত বদলাতেও পারে। কিন্তু তা আর হলো না। তবে সিএর নিরাপত্তা কর্মকর্তারা পাকিস্তানে আসবেন আগামী পিএসএলে, খেলোয়াড় পাঠানোর আগে পাকিস্তানের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিজ চোখে দেখে যাবেন সিএর কর্মকর্তারা।

১৪ ফেব্রুয়ারি শুরু পিএসএলের আটটি ম্যাচ হবে করাচি ও লাহোরে। গ্রুপ পর্ব শেষে পরের রাউন্ডের সব কটি ম্যাচ রাখা হয়েছে পাকিস্তানের এই দুই শহরে।