সেরা তিনের দুই-ই নেই এবার!

গত নিউজিল্যান্ড সফরে সেরাদের অনেকেই থাকছেন না এবার। ফাইল ছবি
গত নিউজিল্যান্ড সফরে সেরাদের অনেকেই থাকছেন না এবার। ফাইল ছবি

আরেকটি নিউজিল্যান্ড সফরে গেছে বাংলাদেশ। ইতিহাস বলছে, এ সফরটি কখনোই সুসংবাদ দেয়নি বাংলাদেশকে। এখনো পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কোনো জয় পায়নি বাংলাদেশ। জয় তো দূরের কথা, হার এড়ানোও সম্ভব হয়নি কখনো। সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম গত সফরে একবার আশা দেখিয়েছিলেন। কিন্তু টেস্টের পঞ্চম দিনে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া বাংলাদেশ দল হেরে অনন্য এক রেকর্ড গড়েছিল।

আগামীকাল নেপিয়ারের ওয়ানডে দিয়ে শুরু হচ্ছে তিন ম্যাচের সিরিজ। অনেক দিন পর নিউজিল্যান্ডে কোনো সফরে গিয়ে ম্যাচ জেতার আশা করা যাচ্ছিল। কারণ, উপমহাদেশের আরেক দল ভারত মাত্রই নাকানিচুবানি খাইয়েছে নিউজিল্যান্ডকে। নিউজিল্যান্ডের মাঠেই তাদের ৪-১ ব্যবধানে হারিয়েছে ভারত। প্রথম তিন ম্যাচ জেতার পর বিরাট কোহলিকে বিশ্রাম দেওয়ার মতো বিলাসিতাও দেখিয়েছে তারা। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে হারের বৃত্ত ভাঙার জন্য এটাই তো সবচেয়ে ভালো সময়!

দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশ কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই নিউজিল্যান্ডে খেলতে গিয়েছে। মাত্রই শেষ হয়েছে বিপিএল। এ টুর্নামেন্টের কারণে পুরো দল এক সঙ্গে ঢাকা ছাড়তে পারেনি, পরিপূর্ণ প্রস্তুতি তো দূরে থাক। মাত্র একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেই কাল মাঠে নেমে পড়ছে বাংলাদেশ। দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে সাম্প্রতিক অতীতও। ২০১৬ সালের শেষভাগে নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সেবার ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বেশ ভালো অবস্থাতে ছিল বাংলাদেশ। ম্যাচের দুই তৃতীয়াংশ সময় এগিয়ে থেকেও হেরতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার সে অতৃপ্তি দূর করার পথে সে সিরিজের সেরা খেলোয়াড়রা ভালো অস্ত্র হতে পারতেন।

বাংলাদেশের জন্য শঙ্কার বিষয় হলো গত সিরিজের সেরা খেলোয়াড়দের অধিকাংশই এ সিরিজে নেই! গতবার তিন ওয়ানডের সিরিজে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন ইমরুল কায়েস। তিন ম্যাচে ৩৯.৬৬ গড়ে ১১৯ রান নিয়েছিলেন কায়েস। এর মাঝে দ্বিতীয় ম্যাচে পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংসে দলকে জয়ের আশাও দেখিয়েছিলেন এই ওপেনার। স্ট্রাইকরেট (৬৯.১৮) ওয়ানডে উপযোগী না হলেও, সে সিরিজে বাংলাদেশের অন্যান্য ব্যাটসম্যানের তুলনায় যথেষ্ট এগিয়ে ছিলেন কায়েস। এবার দলেই জায়গা হয়নি তাঁর।

সে সিরিজে ৩৭.৬৬ গড় ও ৬৬.৪৭ স্ট্রাইকরেটে ১১৩ রান নিয়ে দ্বিতীয় সেরা ছিলেন তামিম ইকবাল। বাংলাদেশের জন্য সুখবর বিপিএলের ফাইনালে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করে সেরা ফর্মেই নিউজিল্যান্ডে যাচ্ছেন তামিম। কিন্তু গত সিরিজের দলের তৃতীয় সেরা ব্যাটসম্যানকে বাংলাদেশ পাচ্ছে না এবার। সেবার এক ফিফটি ও ৮৪.৮৪ স্ট্রাইকরেট নিয়ে ৮৪ রান করেছিলেন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। বিপিএলের ফাইনালের পর হঠাৎ করেই চোটের কথা জানিয়েছেন সাকিব। তাই তাঁকেও নিউজিল্যান্ড সিরিজে পাচ্ছে না বাংলাদেশ।

সাকিবের অনুপস্থিতি অন্য বিভাগে দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে। গতবার সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ছাড়া বাকি ম্যাচগুলোতে বোলাররা ভালো করেননি। তিন ম্যাচে সর্বসাকল্যে ১৮ উইকেট নিয়েছেন বোলাররা। এর মাঝে ৫টিই ছিল সাকিবের। ওভারপ্রতি রান (৬.০৩) একটু বেশি দিলেও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট এনে দেওয়ায় সাকিবই ছিলেন অধিনায়কের মূল ভরসা। সাকিবের পরই দলের সেরা ভরসা ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। ওভার প্রতি রান দেওয়া (৪.৮৬) ও গড়ে (২৩.৫) সাকিবের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন মোস্তাফিজ। ২ ওয়ানডে খেলে ৪ উইকেট পেয়েছিলেন মোস্তাফিজ। এবারও উইকেট তুলে নেওয়া ও রান আটকানো—দুটি কাজেই মোস্তাফিজের দিকে তাকিয়ে থাকবে দল।

উইকেট তুলে নেওয়ার কাজে বিশ্বস্ত এক সঙ্গীকে যদিও হারিয়েছেন মোস্তাফিজ। সিরিজের আগে বিপিএলে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন এই পেসার। কিন্তু গোড়ালির চোটে নিউজিল্যান্ডে ওয়ানডে সিরিজ খেলা হচ্ছে না তাসকিনের। গত সিরিজে ৪ উইকেট পাওয়া তাসকিনের অনুপস্থিতিও দলকে ভোগাবে।