হার দিয়ে শুরু মাশরাফিদের

সেঞ্চুরি করেছেন গাপটিল। ছবি: এএফপি
সেঞ্চুরি করেছেন গাপটিল। ছবি: এএফপি
>

নেপিয়ারে বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। মার্টিন গাপটিল করেছেন অপরাজিত ১১৭ রান।

মার্টিন গাপটিল একেবারে সাব্বির রহমানের মাথার ওপর দিয়ে তুলে মারলেন। বলটা মাথার অনেক ওপর দিয়ে যাচ্ছে, তবুও সাব্বির মাথা নিচু করে বসে যাওয়ার চেষ্টা করলেন। এটি অসহায় আত্মসমর্পণের একটা প্রতীকী ছবি মাত্র। নেপিয়ারে নিউজিল্যান্ডকে মোটেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারল না বাংলাদেশ। কিউইরা মাশরাফিদের বেশ স্বচ্ছন্দেই ৮ উইকেটে হারিয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল।

২৩৩ রান দরকার, ওভার প্রতি ৫ রানও লাগে না। নিউজিল্যান্ড কোনো ঝুঁকি নেয়নি। ওভারপ্রতি যেটা দরকার সেভাবেই তারা এগিয়েছে। বাংলাদেশের ২৩২ রান তাড়া করতে নিউজিল্যান্ডের ৪৪.৩ ওভার লেগেছে বলে এটা বলার উপায় নেই, বাংলাদেশের বোলাররা দুর্দান্ত বোলিং করে তাদের আটকে রেখেছে। ব্লাক ক্যাপসররা খুব সাবধানে এগিয়েছে, এই যা! কদিন আগে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে মাত্র ৪৭ রান করা মার্টিন গাপটিলের ফর্ম নিয়েই উঠে গিয়েছিল প্রশ্ন। তাঁর কাছে একটা লম্বা ইনিংস পাওনা ছিল কিউইদের। নিউজিল্যান্ড ওপেনার সেই পাওনা মেটালেন বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই।

বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাছে যে কাজটা খুব কঠিন মনে হচ্ছিল, সেটিই গাপটিল অনায়াসে করে দেখালেন। বাংলাদেশের বোলারদের একটুও পেয়ে বসতে দেননি। স্ট্রাইক রেখে ঠিক রেখে স্বচ্ছন্দে খেলে গেলেন। ১১৬ বলে করেছেন অপরাজিত ১১৭ রান। স্ট্রাইকরেট ১০০.৮৬। এই ইনিংসটা খেলতে ভীষণ আক্রমণাত্মক তাঁকে হতে হয়নি। অহেতুক চালাতেও হয়নি। ২০১৫ বিশ্বকাপে হ্যামিল্টনে বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন, চার বছর পর আবারও সেই বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করলেন।

গাপটিলের দিনে সতীর্থ ব্যাটসম্যানরা শুধু তাঁকে সঙ্গে দিয়ে গেছেন। হেনরি নিকোলসের সঙ্গে তাঁর ওপেনিং জুটি ১০৩ রানের পর কেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৩৪। মেহেদী হাসান মিরাজ নিকোলসকে (৫৩) আর মাহমুদউল্লাহ উইলিয়ামসনকে (১১) ফিরিয়ে দিলেও নিউজিল্যান্ডের কাছে এটি কোনো ব্যাপারই মনে হয়নি। গাপটিল যে ছিলেন! রস টেলরের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেটে ৯৬ রান যোগ করে মাশরাফিদের বুঝিয়ে দিলেন নিউজিল্যান্ডের মাটিতে জিততে হলে এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।

এ উপলব্ধিটা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের হওয়া দরকার। নিউজিল্যান্ড সফরের আগেই অধিনায়ক মাশরাফি বেশ কবার বলেছেন, সীমিত ওভারের উইকেট এখন সব জায়গায় ব্যাটিংসহায়ক থাকে। বিশ্বকাপের আগে সেটির ব্যতিক্রম হওয়ার কথা নয়। এই উইকেটে তাই ২৩২ রান করে যে জেতা যাবে না, সেটি তো আজ বুঝল। অবশ্য বলতে পারেন শুরুতেই যে ব্যাটিং বিপর্যয়, ৯৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর মোহাম্মদ মিঠুন (৬২) আর সাইফউদ্দীনের (৪১) অষ্টম উইকেট জুটি ৮৪ রান যোগ না করলে এ লড়াইও হয় না।

প্রস্তুতি ছাড়া এক প্রকার লড়াইয়ে নেমে যাওয়া, নেপিয়ারে প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত কিছু করে ফেলবে বাংলাদেশ, সেটি আশা করা বাড়া বাড়ি। ১৬ ফেব্রুয়ারি ক্রাইস্টচার্চে বাংলাদেশ কোন চেহারায় আবির্ভূত হয়, সেটিই দেখার।