চেলসির দুর্দশার কারণ কী?

এ সপ্তাহে প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরাজয় দেখেছে চেলসি। সারির মাথায় ভাঁজ ছবি: এএফপি
এ সপ্তাহে প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরাজয় দেখেছে চেলসি। সারির মাথায় ভাঁজ ছবি: এএফপি
>লিগে প্রথম ১২ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর খেই হারিয়ে ফেলেছে চেলসি। পরের ১৪ ম্যাচে হেরেছে ৬ বার, ড্র করেছে একবার। এ সপ্তাহে ম্যানচেস্টার সিটির কাছে ৬-০ গোলে হারের লজ্জা

ম্যাচ শেষে সৌজন্যমূলক করমর্দন করতে এগিয়ে এলেন ম্যানচেস্টার সিটির কোচ পেপ গার্দিওলা। কিন্তু আগের নব্বই মিনিটে দলের কাছে যেমন পারফরম্যান্স দেখেছেন চেলসি কোচ মরিজিও সারি, তারপর আর সৌজন্য-টৌজন্যের ধার ধরলেন না । করমর্দন না করেই ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটা ধরলেন এই মৌসুমে নাপোলি থেকে চেলসিতে আসা এই ইতালিয়ান কোচ। আধডজন গোল খাওয়ার পর কার মাথাই–বা ঠিক থাকে!

অথচ মৌসুমের শুরুতে অবস্থা কিন্তু এমন ছিল না। লিগে টানা ১২ ম্যাচ অপরাজিত ছিল চেলসি। ইডেন হ্যাজার্ড-জর্জিনহো-উইলিয়ান-এনগোলো কান্তেদের দিয়ে গড়া মূল একাদশকে ইংল্যান্ডের কোনো দল আদৌ হারাতে পারে বলে মনে হচ্ছিল না। কিন্তু প্রিমিয়ার লিগে দৃশ্যপট কত তাড়াতাড়িই না বদলে যায়! লিগের প্রথম ১২ ম্যাচে শীর্ষে থাকা চেলসি পরের ১৪ ম্যাচে ৬ বার হেরে পয়েন্ট তালিকার ৬ নম্বরে ঝুলে আছে এখন। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এই সপ্তাহে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটির কাছে গুনে গুনে আধডজন গোল খেয়েছে তারা। হ্যাটট্রিক করেছেন সার্জিও আগুয়েরো, জোড়া গোল করেছেন রহিম স্টার্লিং। বাকি গোলটা ইলকায় গুন্দোগানের। কিন্তু এমন কেন হচ্ছে চেলসির? ভালো খেলতে খেলতে হঠাৎ এভাবে খেই হারিয়ে ফেলল কেন তারা?

কারণ বিশ্লেষণ করতে গেলে সবার আগে যেটা বের হয়ে আসে, সেটা হলো সারির একরোখা স্বভাব। ইতালিয়ান এই কোচ ফুটবল মহলে বেশ প্রাজ্ঞ বলে সমাদৃত। নিজের দলকে সব সময় নিজের বিশেষ একটা ধরনে খেলাতে পছন্দ করেন তিনি, যে ধরনের একটা গালভরা নামও রয়েছে—‘সারিবল’। এমনকি ইতালিয়ান অভিধানে ‘সারিজমো’ নামের এক আলাদা শব্দের অন্তর্ভুক্তি ঘটেছে কিছুদিন আগে। সারি যেভাবে তাঁর দলকে খেলান, সেই বিশেষ স্টাইলের নাম সারিজমো। পেপ গার্দিওলা থেকে হোসে মরিনহো, কার্লো আনচেলত্তি থেকে জিনেদিন জিদান, কেউই কিন্তু কখনো নিজের খেলানোর ধরনের জন্য আলাদা বিশেষায়িত শব্দ পাওয়ার এই সম্মান পাননি। সারিবল স্টাইলে দলকে খেলিয়েই সম্মান কুড়িয়েছেন তিনি। গত মৌসুমে নাপোলি তাঁর এই স্টাইলে খেলেই প্রায় ইতালিয়ান লিগ জিতে যাচ্ছিল, শেষ মুহূর্তে যদিও জুভেন্টাসের সঙ্গে পেরে ওঠেনি।

নাপোলিকে এই ফরমেশনেই খেলাতে সারি। ফাইল ছবি
নাপোলিকে এই ফরমেশনেই খেলাতে সারি। ফাইল ছবি

সারিকে যখন নাপোলি থেকে চেলসিতে নিয়ে আসা হলো, সারির সারিবল কৌশলের সর্বোচ্চ প্রয়োগ ঘটিয়ে সম্ভাব্য সব শিরোপা জিতবে চেলসি, এমনটাই আশা করা হয়েছিল। নিজের স্টাইলের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে, এমন বেশ কিছু খেলোয়াড়কে গত গ্রীষ্মের দলবদলে এনেছিলেন সারি। নাপোলি থেকে কোচের পিছু পিছু এসেছিলেন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার জর্জিনহো, যে জর্জিনহো বলতে গেলে নাপোলির প্রাণ ছিলেন। দলে এসেছেন নতুন গোলরক্ষক কেপা, গোলরক্ষকের কাজগুলো করা ছাড়াও একদম পেছন থেকে আক্রমণ শুরুর জন্য যাঁকে উপযুক্ত হিসেবে ভেবেছিলেন সারি। রিয়াল মাদ্রিদের ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডার মাতেও কোভাচিচকে নিয়ে এসে সরাসরি মূল একাদশে খেলানো শুরু করেছিলেন। তা সত্ত্বেও প্রথম কয়েক ম্যাচ দুর্দান্ত খেললেও আস্তে আস্তে সারির কৌশল ধরে ফেলে প্রিমিয়ার লিগের বাকি ক্লাব। ফলে এখন হোঁচট খেতে হচ্ছে চেলসিকে।

চেলসিতে এসে সারি তাঁর কৌশলের প্রয়োগ ঘটিয়েছেন অনেকটা এভাবে: চেলসি খেলবে ৪-৩-৩ ছকে। গোলরক্ষককে শট আটকানোর পাশাপাশি যথেষ্ট পরিমাণ ‘রিফ্লেক্স’–এর অধিকারী হতে হবে, সেন্টারব্যাক দুজনের সঙ্গে বোঝাপড়া ভালো হতে হবে, যেন নিজেদের ডি-বক্স থেকেই আক্রমণ রচনা করা যায়। নাপোলিতে এই কাজ ছিল স্প্যানিশ গোলরক্ষক পেপে রেইনার। এখন এই কাজ দেওয়া হয়েছে কেপাকে। দুজন সেন্টারব্যাককে বল পায়ে স্বচ্ছন্দ হতে হবে, শুধু ধাক্কাধাক্কি করে ট্যাকল করা ছাড়াও যেন ঠিকঠাক পাস আদান-প্রদান করতে পারেন। এ কাজ গত মৌসুমে নাপোলির হয়ে করতেন সেনেগালের কালিদু কোলিবালি ও স্পেনের রাউল আলবিওল।

এবার চেলসির হয়ে করছেন ব্রাজিলের ডেভিড লুইজ ও জার্মানির আন্তোনিও রুডিগার। দুই ফুলব্যাককে সমানতালে আক্রমণ ও রক্ষণের কাজে পটু হতে হবে। আক্রমণ করতে গিয়ে রক্ষণের কথা ভুলে গেলাম, এমনটা হলে চলবে না। ডান দিকে গতবার নাপোলির হয়ে ছিলেন আলবেনিয়ার এলসাইদ হুসাই, চেলসিতে আছেন স্পেনের সেজার অ্যাজপিলিকুয়েতা। বাঁ দিকে নাপোলির ছিলেন আলজেরীয় লেফটব্যাক ফওজি গুলাম, চেলসিতে আছেন স্পেনের মার্কোস আলোনসো। দুই সেন্টারব্যাকের মাঝখানে একটু ওপরে অনেকটা তৃতীয় সেন্টারব্যাকের মতো খেলবে দলের সেন্ট্রাল ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। তিনজন মিডফিল্ডারের মধ্যে যার অবস্থান একদম মাঝখানে হবে।

সে মিডফিল্ডারের কাজ হবে পাসের ফুলঝুরি ছুটিয়ে পুরো খেলার গতিপ্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ করা, সেটা স্ট্রাইকার-উইঙ্গারদের দিকে বাড়ানো লম্বা পাস হোক, বা আশপাশের মিডফিল্ডার বা ফুলব্যাকদের দিকে দেওয়া ছোট পাস হোক। সারির প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হবেন তিনিই। এ কাজ করার জন্যই নাপোলি থেকে জর্জিনহোকে নিয়ে এসেছেন সারি। সেন্ট্রাল ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের দুই পাশে বাকি দুই মিডফিল্ডারের কাজ হবে ক্রমশ মাঝমাঠ থেকে প্রতিপক্ষের আক্রমণভাগে উঠে আক্রমণ ও মাঝমাঠের একটা সমন্বয় ঘটানো। নাপোলির হয়ে যে কাজ করতেন স্লোভাকিয়ার মারেক হামশিক ও ব্রাজিলের অ্যালান, চেলসিতে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মাতেও কোভাচিচ ও এনগোলো কান্তেকে।

আক্রমণভাগের তিনজনের মধ্যে দুজন থাকবেন দুই দিকে, উইঙ্গার হিসেবে, মাঝে থাকবেন স্ট্রাইকার। ডি-বক্সের মধ্যে থেকে যার কাজ হবে শুধুই গোল করা ও দুই উইঙ্গারের সঙ্গে সমন্বয় রাখা। এই জায়গায় নাপোলি গতবার খেলিয়েছে বেলজিয়ান স্ট্রাইকার ড্রাইস মার্তেন্সকে। দুই উইঙ্গারের একজনের দায়িত্ব থাকবে একদম প্রথাগত। আক্রমণভাগের এক কোনার অংশকে নিজের করে নিয়ে যার মূল কাজ হবে প্রতিপক্ষের এক-দুজন ডিফেন্ডারকে ব্যস্ত রাখা, যাতে বাকি দুই আক্রমণভাগের খেলোয়াড় খেলার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা পান। কাজটা বেশ নিঃস্বার্থ। গোল করার চেয়ে যার মূল কাজ হবে দুই সতীর্থ আক্রমণকারী যেন গোল পান, নিশ্চিন্তে খেলতে পারেন।

এই কাজটা নাপোলিতে করতেন রাইট উইঙ্গার হোসে কায়েহন, চেলসিতে এই কাজ দেওয়া হয়েছে ব্রাজিলীয় উইঙ্গার উইলিয়ানকে। আরেক উইঙ্গারের ওপর রক্ষণের কোনো দায়িত্ব দিতে চান না সারি, আরেক উইঙ্গারের কাজ হবে শুধু নির্দিষ্ট কোনো দায়িত্বের বেড়াজালে আটকে না থেকে আক্রমণ করা, গোল করা-করানো। আধুনিক ফুটবলের পরিভাষায় ‘ফ্রি রোল’ বা স্বচ্ছন্দভাবে খেলার এই দায়িত্বটা সারি দিয়ে থাকেন তাঁর দলের সবচেয়ে প্রতিভাবান তারকাকে। নাপোলিতে যে খেলোয়াড়টা ছিলেন ‘ইতালীয় মেসি’–খ্যাত লরেঞ্জো ইনসিনিয়া, চেলসিতে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বেলজিয়ান তারকা ইডেন হ্যাজার্ডকে।

সবকিছুই ঠিকঠাক খাপে খাপ মিলেই গিয়েছিল, তাহলে সমস্যাটা কোথায় হলো?

সমস্যা হলো সারির এই কৌশল রপ্ত করার জন্য নাপোলির খেলোয়াড়েরা যে সময় পেয়েছিলেন, চেলসির খেলোয়াড়েরা সেটা পাচ্ছেন না। স্বাভাবিক, নাপোলির চেয়ে চেলসি অবশ্যই বেশি উচ্চাভিলাষী ক্লাব। ফলে নিজের কৌশল খেলোয়াড়দের আয়ত্ত করাতে গিয়ে সারি নাপোলিতে যে সময় পেয়েছেন, চেলসি সারিকে তত সময় দিতে পারবে না, এটা স্বাভাবিক। সারিবল কৌশলে অভ্যস্ত হতে গেলে খেলোয়াড়দের বেশ সময় লাগবে। এমনকি নাপোলির খেলোয়াড়েরাও তিন বছর একসঙ্গে একই কৌশলে খেলে খেলে অভ্যস্ত হয়েই গতবার লিগ শিরোপাটা প্রায় জিতেই গিয়েছিলেন। এই কৌশলে খাপ খাওয়ানোর জন্য ছয় মাস বেশ অল্প সময়। আরও বেশি সময় লাগবে চেলসির। কিন্তু চেলসির মালিকপক্ষ কি সারিকে অতটা সময় দেবে?

চেলসিকেও এখন নাপোলির মতো করেই খেলাচ্ছেন সারি। ফাইল ছবি
চেলসিকেও এখন নাপোলির মতো করেই খেলাচ্ছেন সারি। ফাইল ছবি

নিজের কৌশল চেলসির খেলোয়াড়দের মধ্যে ঢোকাতে গিয়ে বেশ কিছু খেলোয়াড়ের স্বাভাবিক অবস্থান ও ভূমিকা পরিবর্তন করে দিয়েছেন সারি। এই তালিকার সর্বাগ্রে আছেন ফরাসি মিডফিল্ডার এনগোলো কান্তে। ফ্রান্সের এই তারকা সেন্ট্রাল ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে গত দুই-তিন মৌসুমে নিজেকে বিশ্বের অন্যতম সেরা হিসেবে প্রমাণ করেছেন। লেস্টার-চেলসির হয়ে জিতেছেন লিগ। ফ্রান্সকে জিতিয়েছেন বিশ্বকাপ শিরোপা। সেই কান্তেকেই নিজের স্বাভাবিক অবস্থান থেকে সরিয়ে সেখানে জর্জিনহোকে এনে বসিয়েছেন সারি।

নতুন এই ভূমিকায় আগের মতো কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারছেন না কান্তে। যে কান্তেকে আগে দেখা যেত দুই সেন্টারব্যাকের মাঝখানে একটু ওপরের জায়গাটায় থেকে প্রতিপক্ষের সব আক্রমণ বিনষ্ট করে দিতে, সে কান্তেকেই এখন দেখা যায় ট্যাকল বা প্রতিপক্ষের পা থেকে বল কাড়া বাদ দিয়ে গোল করা বা করানোর দিকে মনোযোগ দিতে। ওদিকে জর্জিনহো মিডফিল্ড থেকে অসাধারণভাবে খেলা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও কান্তের মতো ট্যাকল বা বল কেড়ে নেওয়ার কাজটা অত ভালো পারেন না। ফলে জর্জিনহো-হ্যাজার্ডকে আটকাতে পারলেই চেলসিকে থামানো যাবে, এই সরল কৌশলটাও প্রতিপক্ষ বুঝে গিয়েছে, তাই জর্জিনহোও প্রত্যাশামাফিক খেলতে পারছেন না। ফলে তিন মিডফিল্ডারের মধ্যে দুই মিডফিল্ডারই ‘ফ্লপ’ খেলছেন। আর দুই মিডফিল্ডার প্রত্যাশামাফিক খেলতে না পারলে দলে আরেক মিডফিল্ডারও জ্বলে উঠতে পারেন না।

সমস্যা হচ্ছে স্ট্রাইকারের জায়গাতেও। নাপোলিতে সারি মার্তেন্সের মতো একজন গোলমেশিনকে পেলেও চেলসিতে কোনো স্ট্রাইকারই সারিকে নিয়মিত গোলের জোগান দিতে পারছেন না, না ফরাসি স্ট্রাইকার অলিভিয়ের জিরু, না স্প্যানিশ স্ট্রাইকার আলভারো মোরাতা। অগত্যা মাঝে কিছুদিন হ্যাজার্ডকে স্ট্রাইকার হিসেবেই খেলানো শুরু করেছিলেন সারি। এই জানুয়ারিতে যদিও নতুন স্ট্রাইকার হিসেবে নিজের প্রিয় শিষ্য গঞ্জালো হিগুয়েইনকে নিয়ে এসেছেন সারি, যে সারির অধীনে নাপোলিতে খেলেছিলেন হিগুয়েইন।

সারির কপালে চিন্তার ভাঁজ বাড়াচ্ছেন ফুলব্যাকরাও। আগেই বলেছি, সারির কৌশলে দুই ফুলব্যাককে সমানতালে আক্রমণ ও রক্ষণের কাজে পটু হতে হবে। আক্রমণ করতে গিয়ে রক্ষণের কথা ভুলে গেলাম, এমনটা হলে চলবে না। চেলসিতে সারির দুই মূল ফুলব্যাক দুই স্প্যানিশ—আলোনসো ও অ্যাজপিলিকুয়েতা; দুজনের কেউই সমানতালে আক্রমণ ও রক্ষণ করতে পারেন না। আলোনসো আক্রমণের দিক দিয়ে অসাধারণ হলেও রক্ষণকাজে দিন দিন অপটু হচ্ছেন। ওদিকে আক্রমণে যেতে অ্যাজপিলিকুয়েতার যেন বড় অনীহা।

সারির রাইট উইঙ্গার উইলিয়ানও বহুদিন ধরে ফর্মে নেই।
এই অবস্থায় অন্তত নিজের চাকরি বাঁচানোর জন্য হলেও নিজের স্টাইল ও আদর্শ থেকে একটু সরে এসে চেলসিকে ফলাফলনির্ভর খেলা খেলাতেই পারেন সারি। কিন্তু ওই যে নিজের একরোখা স্বভাব! এই স্বভাবের কারণে নিজের কৌশল তো বদলাচ্ছেনই না, উল্টো বলতে গেলে একই রকম একাদশ নিয়ে ম্যাচের পর চেলসিকে খেলিয়ে যাচ্ছেন তিনি। প্রতিপক্ষের যে কেউ এখন ম্যাচের আগে থেকেই বলে দিতে পারে সারি কাকে কাকে মাঠে নামাবেন, কোন ছকে চেলসিকে খেলাবেন, ম্যাচের মধ্যে কাকে বসিয়ে কাকে নামাবেন...! একরকম ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন, ফলাফল যা হয় হোক, দরকার হলে চাকরি হারাবেন, তবু স্টাইলের সঙ্গে বিন্দুমাত্র সমঝোতা করবেন না। ম্যানচেস্টার সিটিতে গার্দিওলা যেমন নিজের দর্শন অনুযায়ী দল বানিয়েছেন, সারির ইচ্ছা তিনিও চেলসিতে নিজস্ব একটা সাম্রাজ্য গড়বেন, যে সাম্রাজ্যর ভিত্তি হবে সারিবল!

সে সাম্রাজ্য গড়ার পর্যাপ্ত সময় পাবেন তো সারি? আজ রাত দুইটায় ইউরোপা লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে সুইডিশ ক্লাব মালমোর সঙ্গে মুখোমুখি হবে চেলসি। চেলসিকে এই কয় দিনে সারি তার সারিবল কতটুকু শেখাতে পারলেন, বোঝা যাবে আজই।