পেলের পরেই ব্রাজিলের সর্বকালের সেরা নেইমার!

ক্রাচে ভর করে এখন চলাফেরা করতে হয় নেইমারকে। ছবি: এএফপি
ক্রাচে ভর করে এখন চলাফেরা করতে হয় নেইমারকে। ছবি: এএফপি
>

কিছুদিন আগে পেলের পর ব্রাজিলের সেরা খেলোয়াড় নেইমার বলে দাবি করেছিল ব্রাজিলের একটি পত্রিকা। প্রচুর সমালোচনা হলেও হোসে মরিনহোর মতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি শিরোপাই পারে নেইমারকে সে পর্যায়ে নিতে।

ব্রাজিলের সর্বকালের সেরা প্রশ্নে বিতর্ক নেই। এক বাক্যে প্রায় সবাই পেলেকেই সেই সম্রাটের মুকুট পরিয়ে দিয়েছে। প্রশ্নটা যদি হয়, পেলের পরে কে? এ নিয়ে যুক্তিতর্ক তো হবেই। কিছুদিন আগে ব্রাজিলিয়ান পত্রিকা প্ল্যাকার ব্রাজিলের সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়ের তালিকা করেছিল। যাতে পেলের পরের নামটা ছিল নেইমারের, যা বিতর্ক তুলেছে ব্রাজিলজুড়ে। ব্রাজিলে কিংবদন্তির তালিকা করতে গেলে তো কলমের কালি ফুরানোর দশা হবে। বিশ্বকাপজয়ীই কত খ্যাতিমান আছেন। সবাইকে ছাপিয়ে নেইমার দুইয়ে?

নেইমার এখনো ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ জেতাতে পারেননি। গত দুবারই প্রত্যাশার বেলুনটাকে ফট্টাস করে দিয়েছেন। ফলে, তাঁকে পেলের পরের আসনটা দিতে রাজি নন ব্রাজিলেরই অনেকে। হোসে মরিনহোর মতে, পেলের সমান হতে নেইমারকে ব্রাজিলের জার্সিতে জেতাতে হবে বড় কিছু।

নেইমারকে বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় মানেন অনেকে। কিন্তু নিয়মিত চোট তাঁকে সে খেলা দেখানোর সময় দিচ্ছে কোথায়? সঙ্গে রয়েছে অনিয়মিত ফর্ম। চোট আর অনিয়মিত ফর্মের কারণে গত মৌসুমে ব্যালন ডি’অর তালিকার সেরা দশেও দেখা মেলেনি। এ বছরেও সে পথেই হাঁটছেন নেইমার। চোট কাটিয়ে ফিরতে না ফিরতেই আবারও চোটের কবলে। প্যারিসের জার্সিতে লিগ ওয়ানে যে জাদু দেখান, সে তুলনায় প্রত্যাশার প্রতিদান দিতে পারেন না চ্যাম্পিয়নস লিগে।

ফলে, পেলে আর নেইমারের মাঝখানের দূরত্ব এখনই এতটা কমে গেছে বলা হয়তো বাড়াবাড়ি। কিন্তু প্ল্যাকারের জরিপে গারিঞ্চা, জিকো, সক্রেটিস, রোনালদিনহো, রোনালদো, রিভালদোদেরও পেছনে ফেলে তালিকার দুইয়ে নেইমার। বিতর্ক তো হবেই। ব্রাজিলের জার্সি গায়ে গোলের হার অবিশ্বাস্য হলেও দেশকে কেবল এনে দিতে পেরেছেন ফেডারেশনস কাপ ও অলিম্পিক শিরোপা। ২০১৮ বিশ্বকাপে তাঁর গড়াগড়ি নিয়ে খোদ ব্রাজিলেই বিরক্তিমাখা সমালোচনা। এর মধ্যে নেইমারকে সম্রাটের পাশের আসন দিয়ে দেওয়া!

এই বিতর্কের মধ্যে হোসে মরিনহো নেইমারকে পথই দেখাচ্ছেন, ‘নেইমার খুবই প্রতিভাবান খেলোয়াড়। এ ব্যাপারে কারও কোনো সন্দেহ থাকার কথা না। সে ইউরোপে এসেই জিততে শুরু করেছে। কিন্তু ইউরোপে তার আগেও অনেক ব্রাজিলিয়ান এসেছে। তাঁদের মধ্যে মনে রাখার মতো রয়েছেন রিভালদো ও রোনালদো। অন্যদের কথা কালেভদ্রে মনে পড়ে। কারণ, তারা শুধু ইউরোপের ক্লাব ফুটবলে নয়; আন্তর্জাতিক পর্যায়েও ছড়ি ঘুরিয়েছে। অন্যরা সেদিকে ব্যর্থ। যে কারণে ইউরোপে ভালো করার পরেও তাদের নাম আমাদের মুখে মুখে নেই।’

পিএসজির জার্সিতে এখনো বড় কিছু করতে পারেননি নেইমার। তবে বার্সার জার্সিতে চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন। ইউরোপে ছড়ি ঘোরানোর অভিজ্ঞতা কম নেই। তবু এই আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ব্যর্থতা পিছিয়ে রাখবে অন্যদের থেকে। মরিনহো তাই বলছেন, ‘নেইমার ইতিমধ্যে ইউরোপ জয় করেছে। ইউরোপে তার সাফল্যের অভাব নেই। কিন্তু পেলের পর্যায়ে যেতে হলে তাঁকে ব্রাজিলের জার্সিতে কিছু একটা জিততে হবে। তবেই সে সেই পর্যায়ে পৌঁছাতে পারবে। নইলে অন্যদের মতো হারিয়ে যাবে।’