'গরু চরানো' মাঠে লাল কার্ডের সঙ্গে পয়েন্টও হারাল বসুন্ধরা

বল দখলের লড়াইয়ে বসুন্ধরার ডিফেন্ডার রেজাউল রেজা (নীল জার্সি) ও সুমন দাস। ছবি: বাফুফে
বল দখলের লড়াইয়ে বসুন্ধরার ডিফেন্ডার রেজাউল রেজা (নীল জার্সি) ও সুমন দাস। ছবি: বাফুফে
>প্রিমিয়ার লিগে টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে উড়ছিল বসুন্ধরা। নীলফামারী-ঢাকা-গোপালগঞ্জ—তিন মাঠেই প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিয়েছেন কলিন্দ্রেস-মতিনরা। কিন্তু আজ নোয়াখালীতে জিততে পারেননি তাঁরা, বিজেএমসির বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করে মাঠ ছেড়েছেন।

এই মাঠে ঘরোয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ফুটবল কীভাবে সম্ভব? বিজেএমসি ও বসুন্ধরা কিংসের ম্যাচটি দেখে থাকলে সবার আগে মনে উঁকি দেবে এই প্রশ্নটি। নোয়াখালীর শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামের এবড়োখেবড়ো ন্যাড়া মাঠে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ হওয়া ফুটবলে বাংলাদেশের তলানিতে থাকার বিজ্ঞাপন ফুটে ওঠে। মাঠের চেহারার মতো স্কোর লাইনের ডিজিটও সাদামাটা—গোলশূন্য ড্র। লিগে আজই প্রথমবারের মতো পয়েন্ট হারাল উড়তে থাকা বসুন্ধরা কিংস।

প্রিমিয়ার লিগে টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে উড়ছিল নবাগত বসুন্ধরা। নীলফামারী-ঢাকা-গোপালগঞ্জ—তিন ভেন্যুতেই প্রতিপক্ষকে দুমড়ে দিয়েছেন দানিয়েল কলিন্দ্রেস-মতিন মিয়ারা। নোয়াখালীতে গিয়ে থামল তাঁদের জয়রথ। বসুন্ধরা প্রতিপক্ষ বিজেএমসির সঙ্গে পেরে উঠল না কি নিজেদের সেরাটা দিতে পারল না বলে ‘গরু চরানো’র মাঠে? প্রশ্নটি উঠত না। যদি মাঠ দেখে ভীষণ হতাশ না হতেন নবাগত দলটির খেলোয়াড় থেকে কোচিং স্টাফ। দলটির স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজোন নোয়াখালীর ভেন্যুকে ‘গরু চরানো’র মাঠ বলেই উল্লেখ করেছেন।

বসুন্ধরার টানা পাঁচ জয়ের বিপরীতে ৬ ম্যাচে মাত্র দুই ড্রয়ে ২ পয়েন্ট ছিল বিজেএমসির পুঁজি। এমন একটি দল পেয়ে কোথায় উড়িয়ে দেবে, উল্টো বলের নিয়ন্ত্রণ রাখতে গিয়ে পরতে পরতে খাবি খেলেন কলিন্দ্রেসরা। প্রতিপক্ষের তুলনায় বলের দখল ও আক্রমণে এগিয়ে থাকলেও অন্যান্য মাঠের মতো বল পায়ে জমিয়ে রাখতে পারছিলেন না তাঁরা। স্বাভাবিকভাবে বিজেএমসি হোম ভেন্যুতে নিজেদের খেলাটা ঠিকই খেলে আটকে দিয়েছে বসুন্ধরাকে। কপাল ভালো ৭৭ মিনিটে লাল কার্ড দেখে ডিফেন্ডার নাসিরউদ্দিন চৌধুরী মাঠ ছাড়ার পরেও ১০ খেলোয়াড় নিয়েও ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে পেরেছে বসুন্ধরা।

স্বাভাবিকভাব বিজেএমসির লক্ষ্য ছিল ড্র। মাঠে অহেতুক সময় নষ্ট করতে দেখা গেছে তাদের খেলোয়াড়দের। এ ছাড়া পোস্টের নিচে বসুন্ধরার সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বিজেএমসির গোলরক্ষক আবদুল কাশেম মিলন। দুর্দান্ত কয়েকটি সেভ করেছেন। আর একবার গোললাইন থেকে বল ক্লিয়ার করে বিজেএমসিকে বাঁচিয়েছেন ক্যামেরুনের সেন্টারব্যাক বাইবেক।

ম্যাচের ৭ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত বসুন্ধরা। ব্রাজিলিয়ান মার্কোস ভিনিসিয়ুসের শট দুর্দান্ত সেভ করেন বিজেএমসি গোলরক্ষক। দ্বিতীয়ার্ধে আরও আক্রমণাত্মক হয় বসুন্ধরা। কিন্তু গোলমুখ খুলতে পারেনি। ৫৬ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে কলিন্দ্রেসের ক্রসে ভিনিসিয়ুসের হেড সেভ করেছেন মিলন। ৬৩ মিনিটে কলিন্দ্রেসের ফ্রি-কিকে গোলমুখের জটলা থেকে নাসিরউদ্দিন চৌধুরীর টোকা গোলমুখ থেকে স্লাইড করে রক্ষা করেছেন বাইবেক।

৭৭ মিনিটে এই নাসিরউদ্দিনকেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে লাল কার্ড দেখে। গোল কিক থেকে উড়ে আসা বল দখলের লড়াইয়ে বিজেএমসি অধিনায়ক স্যামসন ইলিয়াসুকে ফাউল করলে সরাসরি লাল কার্ড দেখানো হয় তাঁকে। ১০ খেলোয়াড় নিয়েও বাকিটা সময় বেশ কয়েকবার আক্রমণে গিয়েছিল বসুন্ধরা। কিন্তু আজ প্রথমবারের মতো তারা গোল করতে হয় ব্যর্থ।

এই ড্রয়ে ৬ ম্যাচ শেষে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে বসুন্ধরা। এক ম্যাচ বেশি খেলে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আবাহনী লিমিটেড। আর ৭ ম্যাচ খেলে তিন ড্রয়ে ৩ পয়েন্ট নিয়ে ১১তম স্থানে বিজেএমসি।