ঢাকার বাইরে পারে না আবাহনী!

আবাহনীর বিপক্ষে আক্রমণে শেখ রাসেলের খালেকুজ্জামান সবুজ। ছবি: প্রথম আলো
আবাহনীর বিপক্ষে আক্রমণে শেখ রাসেলের খালেকুজ্জামান সবুজ। ছবি: প্রথম আলো
>চলতি প্রিমিয়ার লিগের আট ম্যাচে দুই হার আবাহনী লিমিটেডের। দুইটি ম্যাচই হেরেছে তাঁরা ঢাকার বাইরের ভেন্যুতে। ঢাকার বাইরে আরামবাগের বিপক্ষে জয়ও আছে তাদের। তবে দুটি হারই যখন ঢাকার বাইরে, তখন বাইরের ভেন্যুগুলোতে তাদের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই হয়।

‘ঘরের বাঘ আবাহনী’, কথাটি ফুটবল পাড়ায় শোনা যায় প্রায়ই। অভিযোগটি উড়িয়ে দেওয়ার সামর্থ্য নেই দেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির। যে দল পেশাদার ফুটবল লিগের দশ আসরের ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন, তারাই কিনা এএফসি প্রেসিডেন্ট কাপ ও এএফসি কাপের (দুই টুর্নামেন্ট মিলিয়ে সাতবার) দ্বিতীয় পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি একবারও।

আন্তর্জাতিক আসরের কথা বাদ দিন। এবার দেখা যাচ্ছে ঢাকার বাইরে খেলতে গেলেই পারছে না আবাহনী। চলতি প্রিমিয়ার লিগে আট ম্যাচে দুই হার। দুইটি হারই ঢাকার বাইরের ভেন্যুতে। শুধু কি তাই! বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে যেখানে প্রতিপক্ষের গলায় গোলের মালা পরিয়ে দেয় আকাশি-নীলরা, সেখানে ওই দুই ম্যাচে ৫ গোল হজমের বিপরীতে গোল করতে পারেনি একটিও। নীলফামারীতে বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে ৩-০ গোলে হেরে প্রিমিয়ার লিগ শুরু করেছিল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। এর পরে আর পেছনে না তাকিয়ে টানা ছয় ম্যাচে জয়। অবশেষে আজ আবার হেরেছে সিলেটে শেখ রাসেলের বিপক্ষে ২-০ গোলে। স্কোর লাইনের ডিজিটই বলে দিচ্ছে সাইফুল বারির টিটুর দলের সামনে খুব একটা পাত্তা পায়নি পর্তুগিজ মারিও লেমোসের শিষ্যরা।

দেশের অন্যতম সেরা কোচ সাইফুল বারির মূল কারিশমা আঁটসাঁট রক্ষণভাগে। ফলে শেখ রাসেল ২-০ গোলে জিতলে একটু ভ্রু কুঁচকাতেই হয়! মূলত গোল হজম না করাটাই রাসেলের প্রধান লক্ষ্য। নাইজেরিয়ান আলিসন উদোকার নেতৃত্বে বিশ্বনাথ-ইয়াসিন-ইয়ামিনদের নিয়ে সলিড রক্ষণভাগ। তাঁদের সামনে সোহেল রানার নেতৃত্বে তিনজনের জমাট মাঝমাঠ। আর ফরোয়ার্ড লাইনে উজবেকিস্তানের আজিজভ আলিশার, রাফায়েল অনব্রো ও বিপলু আহমেদ। মূলত আজ আবাহনীকে ধসিয়ে দিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড অ্যালেক্স রাফায়েল। নাইজেরিয়ান রাফায়েল অনব্রোকে দিয়ে একটি গোল করিয়েছেন আর নিজে করেছেন অন্যটি।

প্রথমার্ধের ২৪ মিনিটে রাফায়েলের গোলে এগিয়ে যায় শেখ রাসেল। তাদের দ্বিতীয় গোলটি প্রশ্ন তুলে দেয় আবাহনী রক্ষণভাগ ও গোলরক্ষকের সোহেলের মান নিয়ে। বিপলুর বাড়ানো বল আবাহনী ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে বের হয়ে গেলে বলের নিয়ন্ত্রণ নেন রাফায়েল। ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ডের সামনে তখন টুটুল হোসেন বাদশা, ওয়ালি ফয়সালসহ তিন ডিফেন্ডারের বাধা। কিন্তু একজন বলের লড়াইয়ে গেলেও দুজন অলস দাঁড়িয়ে। ওই মুহূর্তেই অহেতুক গোল পোস্ট ছেড়ে বের হয়ে সামনে এসে গেলেন সোহেল। ব্রাজিলিয়ান রাফায়েলকে এমন সুযোগ কি চলে? তাঁর নিরীহ শটটিই শেষ পর্যন্ত গড়িয়ে গড়িয়ে জালে।

এই হারের পরেও ৮ ম্যাচ খেলে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আবাহনী। তাদের চেয়ে এক মাচ কম খেলে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে শেখ রাসেল। আর ৬ ম্যাচ খেলে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে বসুন্ধরা কিংস।