মোহামেডানবিহীন বাংলাদেশ

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। ফাইল ছবি
>ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং লিমিটেডের ফুটবল দলের এখন কী অবস্থা, তা একটা তথ্যেই পরিষ্কার হয়ে যাবে। জাতীয় ফুটবল দলের প্রাথমিক ক্যাম্পে জায়গা পাননি সাদা-কালোদের একজন ফুটবলারও। এমনকি অনূর্ধ্ব-২৩ যুবদলেও নেই ক্লাবটির কোনো খেলোয়াড়। ফলে মোহামেডানবিহীন হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ।

অনেক বছর ধরেই ফুটবলে ধুঁকছে মোহামেডান স্পোর্টিং লিমিটেড। চলতি মৌসুমে ঐতিহ্যবাহী দলটির খারাপ অবস্থা পৌঁছেছে চরম পর্যায়ে। প্রিমিয়ার লিগে হেরেছে টানা চার ম্যাচ। টানা হারের বৃত্ত থেকে বের হয়ে টানা দুই ড্রতেই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে ক্লাবটি। ৭ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে ১৩ দলের লিগে এখন দশম মোহামেডান। অবশ্য রেলিগেশনের বাইরে আছে, এতেই স্বস্তি পাচ্ছে বাংলাদেশের সেরা দুই ঐতিহ্যবাহী ক্লাবের একটি!

ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান দল এখন কোন অবস্থায়, আছে সেটা একটি তথ্য দিলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে। জাতীয় ফুটবল দলের প্রাথমিক ক্যাম্পে জায়গা পাননি সাদা-কালোদের একজন ফুটবলারও। জাতীয় দলের কথা বাদ দিন। অনূর্ধ্ব-২৩ যুবদলেও নেই ক্লাবটির কোনো খেলোয়াড়। ভাবা যায়!

কম্বোডিয়ার বিপক্ষে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচের জন্য ২৭ সদস্যের প্রাথমিক দল ডেকেছেন জাতীয় ফুটবল দলের কোচ জেমি ডে। এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বের জন্য ডাকা হয়েছে ২৯ জন। এঁদের মধ্যে ১২ জন খেলোয়াড় আছেন উভয় দলে। অর্থাৎ সিনিয়র ও যুব জাতীয় দল মিলে ডাকা হয়েছে ৪৪ জন। বর্তমান সময়ের ফুটবলে যেখানে খেলোয়াড় নেই, খেলোয়াড় নেই বলে রব উঠে প্রতিদিন, সেখানে ৪৪ জন খেলোয়াড়ের মধ্যেও নেই মোহামেডানের কোনো ফুটবলার। এমনটা আগে কখনো হয়েছে বলে মনে হয় না।

বিষয়টি শুনে খুব মর্মাহত হয়ে পড়লেন মোহামেডানের সাবেক অধিনায়ক ইমতিয়াজ সুলতান জনি। এমনটা আগে কখনো হয়েছে বলে মনে পড়ে না সাবেক এই ডিফেন্ডারের, ‘জাতীয় বা যুবদলের প্রাথমিক ক্যাম্পে মোহামেডানের কোনো ফুটবলার ডাক পাননি, স্বাধীনতার পর এমনটা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। এতেই বোঝা যায় বর্তমান মোহামেডান দলে এখন কারা খেলছেন। যাঁরা দলটির দায়িত্ব আছেন, তাঁদের মোহামেডান সমর্থকদের কথা ভাবা উচিত। ক্লাবের সম্মানের কথা ভাবা উচিত।’

সর্বশেষ ২০০৯ সালে ২০ সদস্যের চূড়ান্ত দলে সর্বোচ্চ ১৪ জন ফুটবলার ছিলেন মোহামেডানের। এর পরে সংখ্যাটা কমে গেলেও জাতীয় বা যুবদলে ছিল মোহামেডানের প্রতিনিধিত্ব। কিন্তু এবার একেবারেই মোহামেডানবিহীন বাংলাদেশ। মোহামেডানের যেখানে একজন খেলোয়াড়ও নেই, সেখানে জাতীয় দলে বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেডের ফুটবলার আছেন সর্বোচ্চ ৮ জন করে। পাঁচজন আছেন শেখ রাসেলের, আরামবাগের তিনজন, সাইফ স্পোর্টিংয়ের দুজন ও একজন শেখ জামালের। কম্বোডিয়ার জন্য ২৩ সদস্যের চূড়ান্ত দল ঘোষণা করা হবে ৫ মার্চ। ৬ মার্চ কম্বোডিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বে বাংলাদেশ দল, ৯ মার্চ ম্যাচ খেলার পরদিনই ফিরবে ঢাকায়।