নেইমার-এমবাপ্পেদের 'কুলাঙ্গার', 'শিরদাঁড়াহীন', 'বেহায়া'র গালি!

নেইমার – এমবাপ্পেদের এখন হজম করতে হচ্ছে গালি। ফাইল ছবি
নেইমার – এমবাপ্পেদের এখন হজম করতে হচ্ছে গালি। ফাইল ছবি
>

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে পিএসজির বিদায় ঘন্টা বাজার পর সমর্থকদের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।

চ্যাম্পিয়নস লিগে গত বুধবারের হারটা স্রেফ একটা হারই নয়, একটা স্বপ্নের মৃত্যুও! সেটি যেমন সমর্থকদের জন্য, তেমনি পিএসজি স্ট্রাইকার এমবাপ্পের জন্যও। প্রথম লেগে ২-০ ব্যবধানে জিতেও দ্বিতীয় লেগে ১-৩ গোলে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে দলের ছিটকে পড়াটা তিরের মতো বিঁধছে পিএসজির সমর্থকদের এবং এমবাপ্পের বুকে। এমবাপ্পে বলছেন, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে সেই হারের পর রাতে তিনি ঘুমোতেই পারছেন না। আর সমর্থকদের ক্ষোভের আঁচটা পরশু দলের অনুশীলনে ভালোই টের পেয়েছেন পিএসজির খেলোয়াড়েরা।

দলের একনিষ্ঠ সমর্থকদের মধ্য থেকে বাছাই করা ৫০০ জনকে রোববার দলের অনুশীলনে হাজির হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল পিএসজি। উদ্দেশ্য ছিল একটাই, সমর্থক-খেলোয়াড়দের একটা পুনর্মিলনী। কিন্তু বাস্তবে যা হলো, সেটি খেলোয়াড়দের প্রতি সমর্থকদের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। গত শুক্রবারই অনুশীলন মাঠের চারদিকে বড় বড় হরফে লেখা ছিল ‘শিরদাঁড়াহীন’, ‘বেহায়া, ‘আমাদের শ্রদ্ধা করো’ এমন সব লেখা। আর রবিবার সমর্থকেরা ‘কুলাঙ্গারের দল’ বলে গালিগালাজ করেছে। ক্ষুব্ধ সমর্থকদের শান্ত করতে গিয়েছিলেন পিএসজি অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা ও ডিফেন্ডার মারকিনোস। তাঁদের অনুরোধ তো দর্শকেরা শোনেইনি, উল্টো তাঁদেরও গালিগালাজ শুনতে হয়েছে বলে লা পারিজিয়ানের খবর। শুধু গালিগালাজই নয়, ঘেন্নায় আতশবাজি ফুটিয়েছে, ফুটিয়েছে ধোঁয়া-বোমাও। যার শব্দ মাঠের বাইরে থেকেও শোনা গেছে।

দর্শকদের যখন এ অবস্থা, অনুমান করুন এমবাপ্পের মনের অবস্থা কী হতে পারে! ‘আমি হতভম্ব। আমি ঘুমোতে পারছি না’—ফ্রান্সের টিএফ ১ টিভিকে চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের স্বপ্ন দেখা এমবাপ্পে বলে গেলেন, ‘এটা (মেনে নেওয়া) খুব কঠিন। আমরা এই পর্যায়ে আসার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি। কিন্তু হতাশ হতে হলো আমাদের। ফুটবল থেমে থাকবে না। এখন মৌসুমটা সবচেয়ে ভালোভাবে শেষ করার জন্য চেষ্টা করে যেতে হবে আমাদের, পরের মৌসুমের জন্য প্রস্তুত হতে হবে ভালোভাবে।’

চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে ছিটকে পড়লেও লিগ জয়ের দৌড়ে বেশ এগিয়ে পিএসজি। ২৮ ম্যাচে ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা লিঁলের চেয়ে ২ ম্যাচ কম খেলেও ১৪ পয়েন্টে এগিয়ে টমাস টুখেলের দল। উঠেছে ফ্রেঞ্চ কাপের শেষ চারেও। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে ছিটকে পড়ার পর পিএসজি যা কিছুই জিতুক না কেন, সেটি হবে ‘দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো’। এমবাপ্পের ভাষায়, ‘সত্যি বললে, এটাই (চ্যাম্পিয়নস লিগ) ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য। যেটিকে সামনে রেখে প্রতিদিনই পরিশ্রম করেছি। সমর্থকেরাও আমাদের সঙ্গে ছিল। স্টেডিয়াম ভরিয়ে তুলেছিল তারা। সত্যিই সেদিন আমাদের জন্য স্বপ্নের মতো একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু উৎসবটাকে আমরাই মাটি করে দিয়েছি।’

আর পিএসজির চ্যাম্পিয়নস লিগ ব্যর্থতায় এমবাপ্পেকে নিয়ে একটা সংশয় কাজ করছে পিএসজির সমর্থকদের মধ্যে। ইগলের চোখ নিয়ে এমবাপ্পের দিকে তাকিয়ে আছে রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনার মতো বড় দলগুলো। ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট থেকেই যখন ছিটকে পড়ল পিএসজি, তখন কি আর প্যারিসের দলটিতে তিনি থাকবেন? সমর্থকদের আশ্বস্তই করছেন এমবাপ্পে, ‘হ্যাঁ, পরের মৌসুমও আমি আছি এখানে।’