মেসিদের স্বস্তি আবার অস্বস্তিও, লিভারপুলের সামনে 'দায়'

বার্সার অনুশীলনে সতীর্থদের সঙ্গে লিওনেল মেসি। ছবি: এএফপি
বার্সার অনুশীলনে সতীর্থদের সঙ্গে লিওনেল মেসি। ছবি: এএফপি
>চ্যাম্পিয়নস লিগ শেষ ষোলো ফিরতি লেগে আজ বাংলাদেশ সময় রাত দুটোয় মাঠে নামছে বার্সেলোনা ও লিভারপুল

প্রেরণা ভাবলে প্রেরণা, চাপ ভাবলে চাপ। যেভাবেই ভাবুক, একটা বড় পরীক্ষাই আজ লিভারপুলের। গত মৌসুমের রানার্সআপদের এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে শেষ আটে যাওয়ার তাড়না কম নেই, তার মধ্যে এই পরীক্ষায়ও পড়তে হলো!

কী পরীক্ষা? ইংল্যান্ডের ‘মান’ রাখা। শেষ ষোলোতে ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলোর মধ্যে টটেনহাম হারিয়েছে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তো পিএসজির বিপক্ষে দারুণ রূপকথাই লিখেছে। কাল রাতে শালকের জালেও ৭ গোল করেছে ম্যানচেস্টার সিটি। ইংল্যান্ডের সব দলই যখন ভালো করছে, তা-ও আবার প্রায় সব জার্মান দলের বিপক্ষেই, ‘জার্মান-ইংরেজ’ লড়াইয়ে শতভাগ পূর্ণতা দেওয়ার দায় তো লিভারপুলেরই!

একে প্রতিপক্ষ বায়ার্ন মিউনিখ, মৌসুমের শুরুটা ভালো না হলেও ডিসেম্বর থেকেই যাদের ফর্ম ঊর্ধ্বমুখী। এমনই যে, একসময়ে ৭ পয়েন্ট এগিয়ে যাওয়া ডর্টমুন্ডকেই গত সপ্তাহে পেছনে ফেলে সেপ্টেম্বরের পর উঠেছে লিগ-শীর্ষে। দেশভিত্তিক কোনো লড়াই নেই, তবে স্কোরলাইনে রাতের অন্য ম্যাচটিরও সমীকরণ একই। অলিম্পিক লিওঁর মাঠে যে প্রথম লেগে গোলশূন্য ড্র করে এসেছে লিওনেল মেসির বার্সেলোনাও।

আজ ন্যু ক্যাম্পে নিজেদের দর্শকের সামনে খেলা মেসিদের স্বস্তি, তবে সেটিকে অস্বস্তিতে রূপ দিতে লিওঁর একটা গোলই হয়তো যথেষ্ট। তার ওপর বার্সা কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দের কপালে ভাঁজ ফেলবে এই তথ্যটি, লিওঁ আজ পাচ্ছে নাবিল ফেকিরকে। নিষেধাজ্ঞায় প্রথম লেগে খেলতে পারেননি বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি প্লে-মেকার।

লিভারপুলের অনুশীলনে ডাচ ডিফেন্ডার ভার্জিন ফন ডাইক। ছবি: এএফপি
লিভারপুলের অনুশীলনে ডাচ ডিফেন্ডার ভার্জিন ফন ডাইক। ছবি: এএফপি

এত কিছুর পরও ন্যু ক্যাম্পে লড়াইটাকে আর যা-ই হোক, সমানে সমান বলা যায় না। যেটি প্রযোজ্য আলিয়াঞ্জ অ্যারেনার ম্যাচের ক্ষেত্রে। গত সপ্তাহে লিগ-শীর্ষে ফেরায় বায়ার্নের আত্মবিশ্বাস টগবগে। এখন ট্রেবল জেতারই স্বপ্ন দেখে। বায়ার্নের ক্রীড়া পরিচালক হাসান সালিহামিজিচও বলছিলেন, ‘ছেলেদের আত্মবিশ্বাস আরেকটু বেড়েছে। এই ম্যাচের ওপরই বলতে গেলে সবকিছু নির্ভর করছে।’

লিভারপুল যে আজ উষ্ণ অভ্যর্থনা পাবে না মিউনিখে, তা তো বোঝাই যায়। সেটি অবশ্য শুধু স্বাগতিক দর্শকদের কাছ থেকেই নয়, মিউনিখে কদিন ধরে বেশ তুষারপাত হচ্ছে। বায়ার্নের কাছে কত বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে ম্যাচটা, তা বোঝা যাবে যখন শুনবেন এই তুষারপাত থেকে বাঁচাতে ক্লাবের রেকর্ড গোলদাতা (১৯৭) ও এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতা (৮) রবার্ট লেভানডফস্কিকে পরশু আলাদা অনুশীলন করিয়েছেন কোচ কোভাচ।

বায়ার্নের কাছে এতটা, লিভারপুলের কাছেও কি কম গুরুত্বপূর্ণ! রেকর্ড যদিও ইয়ুর্গেন ক্লপের দলকে ভয় দেখায়। চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রতিপক্ষের মাঠে এই মৌসুমে গ্রুপ পর্বে তিনটি ও সব মিলিয়ে সর্বশেষ চার ম্যাচেই হেরেছে লিভারপুল। ক্লপ তাই দলের কাছে বিশেষ কিছুই চাইছেন, ‘আমাদের যদি সাধারণ একটা ম্যাচ যায়, তাহলে আমাদের কোনো সুযোগ নেই। বাদ পড়তে হবে। কিন্তু যদি নিজেদের বিশেষ মুডে নিয়ে যেতে পারি, যথাযথ একটা ফুটবল ম্যাচ খেলতে পারি, তাহলে ভালো সুযোগই আছে।’

ক্লপের নিজের জন্যও সেটাই চাই। একসময়ের ডর্টমুন্ড কোচের যে বায়ার্নের সঙ্গে ব্যক্তিগত হিসাব-নিকাশও আছে!