'বাবল বলে' হাত পাকানোর চেষ্টা জায়েদের

>

বাংলাদেশের পেসার আবু জায়েদ নতুন এক ডেলিভারি রপ্ত করার চেষ্টা করছেন। নিউজিল্যান্ডের পেসার টিম সাউদির কাছ থেকে এই ডেলিভারি শেখার চেষ্টা করছেন জায়েদ

নিল ওয়াগনার, ট্রেন্ট বোল্ট, টিম সাউদি। নিউজিল্যান্ডের এই তিন পেসার মিলে যত টেস্ট (১৬৮ ম্যাচ) খেলেছেন, বাংলাদেশ দলও অত টেস্ট খেলেনি। বাংলাদেশি পেসাররা তো পিছিয়ে আরও। সে কারণেই বাংলাদেশ দলের আনকোরা পেসারদের সঙ্গে বোল্ট-সাউদিদের তুলনাটা অবান্তর। দ্বিতীয় টেস্টে খেলা আবু জায়েদ, ইবাদত হোসেন আর মোস্তাফিজুর রহমানের মধ্যে সবচেয়ে ‘অভিজ্ঞ’ মোস্তাফিজ খেলেছেনই মাত্র ১৩ টেস্ট। আর এই তিন পেসারের সম্মিলিত ম্যাচসংখ্যা এক কুড়ি। থাক, উইকেট শিকারের তুলনায় না যাওয়াই ভালো। বোঝাই যাচ্ছে, অসম লড়াইটা সেখানে আরও প্রকট হয়ে চোখে বিঁধবে।

সিরিজের প্রথম দুই টেস্টেই ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ দুই টেস্ট মিলিয়ে দুটি ইনিংসে ব্যাট করার প্রয়োজন হয়নি নিউজিল্যান্ডের। বাকি দুই ইনিংস মিলিয়ে ২০ উইকেটের মধ্যে একবারও নিউজিল্যান্ডকে অলআউট করতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা। যে ১২ উইকেট পড়েছে, তার মধ্যে দলের নিয়মিত পেসাররা নিয়েছেন মাত্র ৫ উইকেট। পেসারদের নিয়ে বাংলাদেশের হা-হুতাশ নতুন কিছু নয়। নিউজিল্যান্ডের পেসবান্ধব কন্ডিশনে এমন পারফরম্যান্সে হা-হুতাশ আরও বেড়েছে। যদিও আবু জায়েদ বিষয়টিকে ভিন্ন চোখে দেখছেন। বেশি বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলে তো অভিজ্ঞতা হবে, আর টেস্টে অভিজ্ঞতা অমূল্য।

শনিবার ক্রাইস্টচার্চে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। তার আগে পেসারদের বেশি বেশি টেস্ট খেলার দাবিই ঝরল আবু জায়েদের কণ্ঠে, ‘আমরা যে কজন পেসার খেলছি, তাদের মধ্যে মোস্তাফিজ শুধু ১১ (১৩টি) ম্যাচ খেলছে। তাই আমার কাছে মনে হয়, আরও টেস্ট খেলা উচিত। আরও খেলার সুযোগ দেওয়া উচিত। অন্যান্য দেশের বোলারদের দেখেন অনেক টেস্ট খেলছে। টেস্ট হলো অভিজ্ঞতার ক্রিকেট। যত বেশি টেস্ট খেলবেন, তত অভিজ্ঞ হবেন এবং বুঝতে পারবেন টেস্ট ক্রিকেট কেমন।’

আবু জায়েদের নামের পাশে মাত্র ৫ টেস্ট। এবার নিউজিল্যান্ড সিরিজে দুই টেস্ট মিলিয়ে ৩ উইকেট নেওয়া এই পেসারই বাংলাদেশের সেরা বোলার। হ্যামিল্টন ও ওয়েলিংটনে বেশ ভালো সুইং পেয়েছেন এই পেসার। শৈশব থেকে জেমস অ্যান্ডারসনকে আদর্শ মানা আবু জায়েদ জানালেন, নতুন এক ডেলিভারি রপ্ত করার চেষ্টা করছেন—‘বাবল বল’। বাংলাদেশ দলে নতুন ডেলিভারি শেখার চেষ্টা নতুন কিছু না। নতুন ধরনের ইয়র্কার ডেলিভারি রপ্ত করার কথা এর আগে জানিয়েছিলেন পেসার রুবেল হোসেন। তবে ‘বাবল বল’ ডেলিভারির সঙ্গে এর আগে বাংলাদেশের কোনো পেসারের পরিচয় ঘটেনি।

ক্রাইস্টচার্চে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন আবু জায়েদ। ছবি: বিসিবি
ক্রাইস্টচার্চে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন আবু জায়েদ। ছবি: বিসিবি

যদিও নিউজিল্যান্ডের পেসার টিম সাউদির কল্যাণে এই ডেলিভারির সঙ্গে আগেই পরিচিত ক্রিকেটপ্রেমীরা। জায়েদ জানালেন, ডেলিভারিটি তিনি সাউদির কাছ থেকেই শেখার চেষ্টা করছেন। ম্যাচ (তৃতীয় টেস্ট) শেষে সাউদির সঙ্গে এ নিয়ে বসবেন। ‘বাবল বল যেটা সাউদি মারে প্রায়ই, এটা নিয়েও কাজ করছি। এটা অনেকটা ক্রস সিমের মতো, আউট সুইংয়ের মতো গ্রিপ থাকে। বলটা পড়ে ইনসুইং করে। এটা শেখার চেষ্টা করছি। ম্যাচ শেষে সাউদির সঙ্গে বসব।’

অ্যান্ডারসনকে আদর্শ মানায় সুইংয়ের প্রতি ২৫ বছর বয়সী এই পেসারের আলাদা করে দুর্বলতা থাকাই স্বাভাবিক। জায়েদের কথায় তা ফুটে উঠল, ‘এখানে আমাদের কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। বাংলাদেশের চেয়ে এখানে বেশি সুইং পাচ্ছি।’ তবে এসব নিয়ে জায়েদ খুব বেশি সন্তুষ্ট হতে পারছেন না। দল যে ভালো করতে পারছে না! ‘নিজের পারফরম্যান্সের চেয়ে ফলটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। টিম যদি ফল পেত, তাহলে বেশি ভালো লাগত’—জায়েদের শেষ কথায় হতাশাই ঝরল।